Section 375 movie cast: অক্ষয় খন্না, রিচা চাড্ডা, মীরা চোপড়া, রাহুল ভাট, কিশোর কদম, কৃতিকা দেশাই, শ্রী স্বরা
Section 375 movie director: অজয় বহেল
Section 375 movie rating: ৩/৫
'সেকশন ৩৭৫' একটি প্রাসঙ্গিক ছবি। এমন একটা সময়ে এই ছবি মুক্তি পেল যখন মিটু আন্দোলনের প্রভাব খানিকটা ঝিমিয়ে পড়লেও, সোশাল মিডিয়ায় কিন্তু এই সংক্রান্ত চর্চা এখনও পুরোমাত্রায় বজায় রয়েছে। বরং এই আন্দোলন ক্রমশ আরও গভীরে যাচ্ছে এবং আন্দোলনের ভবিষ্যতের পথ তৈরি করছে।
অন্য যে কোনও আন্দোলনের মতোই এই আন্দোলনেরও চড়াই-উতরাই রয়েছে তবে এই আন্দোলন কখনোই মিলিয়ে যাওয়ার নয়। 'সেকশন ৩৭৫: মর্জি ইয়া জবরদস্তি'-- ছবির এই নামটা আপাতদৃষ্টিতে খুবই একমাত্রিক, সোজাসাপ্টা মনে হয় কিন্তু সংশ্লিষ্ট ইস্যুটির বহু জটিল ও ধূসর অংশ ধরা পড়েছে এই ছবিতে।
ছবির প্রেক্ষাপট মুম্বইয়ের ফিল্ম জগৎ। সিনেমার শ্যুটিং চলাকালীন ঠিক কী মাত্রায় এবং কী কী পদ্ধতিতে যৌন শোষণ চলে তা এর আগেও বলিউডের ছবিতে দর্শক দেখেছেন কিন্তু মিটু-পরবর্তী সময়ে এমন একটি বিষয়ের উপর ছবি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
আরও পড়ুন: Dream Girl Movie Review: বাঁচিয়ে দিলেন আয়ুষ্মান খুরানা
জুনিয়র কস্টিউম ডিজাইনার অঞ্জলি ডাংলে (মীরা চোপড়া) পরিচালক রোহন খুরানা (রাহুল ভাট)-র বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনে। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করেই বোনা হয়েছে ছবির প্লট। বিরোধী পক্ষের দুঁদে উকিল তরুণ সালুজা (অক্ষয় খন্না) গোটা ব্যাপারটিকে এমনভাবে উপস্থাপিত করার চেষ্টা করে যে দুজনের সম্মতিক্রমেই একটি যৌন সংসর্গ হয় এবং তার পরে দুজনের মধ্যে কোনও কারণে বিবাদ বাধে। অভিযোগকারীর উকিল হিরাল মেহতা (রিচা চাড্ডা) আদালতকে অনুরোধ করে কেসের যে সব তথ্যপ্রমাণ সামনে রয়েছে, তা অতিক্রম করে আরও বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিষয়টি দেখতে ও অভিযোগকারীকে সুবিচার দিতে।
এমনটা জানাই আছে যে আইন বেশিরভাগ সময়েই ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের পক্ষেই থাকে এবং এক্ষেত্রেও গরাদের ওপারে থেকেও অভিযুক্ত নিজের সামাজিক অবস্থান ও প্রভাব-প্রতিপত্তি সম্পর্কে সচেতন। অভিযুক্ত খুরানার উকিল সলুজা কিন্তু কোনও প্রভাব খাটিয়ে নয়, তথ্যপ্রমাণের উপর ভিত্তি করেই অভিযুক্তকে মুক্ত করার পথে হাঁটে। তার এই অসীম আশাবাদী মনোভাবে তিতিবিরক্ত হয় তার মক্কেল খুরানা কিন্তু সলুজা নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে, বলে এই তথ্যপ্রমাণের জোরেই মুক্তি পেতে পারে খুরানা।
আরও পড়ুন: যুক্তিবোধ এবং আবেগের অসম মিশেল ‘পরিণীতা’
এর ফলে দর্শক পেয়ে যান একটি জমজমাট কোর্টরুম ড্রামা, যেখানে সামগ্রিকভাবেই অভিনয়ের মান বেশ ভালো এবং কয়েকটি ত্রুটি সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত দর্শকের আগ্রহ ধরে রাখতে সক্ষম এই ছবি। গল্পের প্রয়োজনে ধর্ষণের কিছু মুহূর্ত, শারীরিক আঘাত ইত্যাদি দেখানো এক জিনিস কিন্তু ওই একই অংশ বার বার দর্শককে এবং আদালতের মধ্যে কোথাও যেন দর্শকামিতা কাজ করেছে। এটা মোটেই ভালো ব্যাপার নয়। তাছাড়া দেশের প্রতি মানুষের আবেগের বিরুদ্ধ যেন এদেশে ধর্ষণের পরিসংখ্যানকে মুখোমুখি লড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা যা মোটেই ঠিক কাজ নয়। ধর্ষণ একটি অপরাধ আর সেই অপরাধের শাস্তি প্রয়োজন, সেটা পৃথিবীর যে প্রান্তেই ঘটুক না কেন।
তবে যে সূক্ষ্মতার সঙ্গে ছবির গল্পে আদালত তার সিদ্ধান্তে উপনীত হয়, সেটাই ছবিটিকে দাঁড় করিয়ে দেয় (অন্তত একবারের জন্য হলেও দেখে ভালো লেগেছে যে বলিউডের কোর্টরুম ড্রামার বিচারকেরা পেপার কাটআউটের মতো বসে নেই, তারা সত্যিই সুবিচার দিতে চায়, বিশেষ করে কদম এবং দেশাই খুবই উল্লেখযোদগ্য)। যে কোনও যৌন সংসর্গের ক্ষেত্রেই সম্মতি প্রয়োজন, যদি সেটা এমন দুই ব্যক্তির মধ্যে ঘটে, যারা এর আগেও শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠ হয়েছে, সেই ক্ষেত্রেও। আর কর্মক্ষেত্রে ক্ষমতার অপব্যবহার ও কেরিয়ারে উন্নতির আশ্বাসের বদলে যৌনতা দাবি করা একটি ক্রাইম! এই বিষয়ে কোনও দ্বিমত থাকতে পারে না।