ওমিক্রনের (Omicron) বাড়বাড়ন্তই একগুচ্ছ সিনেমার রিলিজের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই একাধিক সিনেমাহলের দরজায় তালা ধুলেছে। বাংলায় যদিও ৫০ শতাংশ দর্শক নিয়ে প্রেক্ষাগৃহগুলো চালু ছিল, তবে এমতাবস্থায় মোটা বাজেটের ছবিগুলো রিলিজ করার পক্ষপাতী ছিলেন না নির্মাতারা। সেই তালিকায় ছিলেন প্রযোজক-পরিচালক রাজ চক্রবর্তীও (Raj Chakraborty)। বছর দুয়েক ধরে মুক্তির অপেক্ষায় দিন গুণছে 'ধর্মযুদ্ধ', 'হাবজি গাবজি'। তবে এবার শেষমেশ অতিমারী কোপ কাটিয়ে মুক্তির আলো দেখতে চলেছে এই দুটি ছবি।
বৃহস্পতিবারই রাজ চক্রবর্তীর প্রযোজনা সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে রিলিজের দিনক্ষণ। ২০২২ সালের ৩ জুন মুক্তি পাচ্ছে 'হাবজি গাবজি' (Habji Gabji)। যে ছবিতে অভিনয় করেছেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় ও শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়। অন্যদিকে, ১২ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে প্রেক্ষাগৃহে আসছে 'ধর্মযুদ্ধ'।
ডিজিটাইজেশনের যুগে মানুষ ক্রমশই নেটকেন্দ্রিক হয়ে পড়ছে। নিমেষের মধ্যে হাতের মুঠোয় পুরো দুনিয়া। মোবাইল আর এখন শুধু কথা বলার জন্য নয়, বিনোদনের মূল মাধ্যম হয়ে উঠেছে। অতঃপর সর্বক্ষণ হাতে মোবাইল, কানে গোঁজা হেডফোন, যেন বাইরের দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন। বইয়ের পাতায় নয়, আজকাল বরং মুখ গোঁজা থাকে ট্যাব-মোবাইলের গেমে। বিভিন্ন সময়ে দেখা গিয়েছে, মারণ গেমের ফাঁদে পড়ে শেষ হয়ে গিয়েছে জীবন। নষ্ট হয়েছে বহু শৈশব। এই মোবাইল আসক্তির মারাত্মক পরিণামের এক কাহিনিই সিনেপর্দায় নিয়ে হাজির হচ্ছে 'হাবজি গাবজি'। এই সিনেমায় পরম-শুভশ্রীকে দেখা যাবে বাবা-মার ভূমিকায়। সন্তানের চরিত্রে অভিনয় করেছে সামন্তক দ্যুতি মৈত্র। উল্লেখ্য, ‘প্রলয়’-এর পর ফের রাজ চক্রবর্তীর ছবিতে দেখা যাবে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়কে।
অন্যদিকে, ধর্ম, জাতি আর দ্বিধাবিভক্ত সমাজের জ্বলন্ত বাস্তব সমস্যার প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়েছে 'ধর্মযুদ্ধ' (Dharmayuddha)। প্রসঙ্গত, সেক্যুলারিজমের উর্দি চাপালেও ভিতরে ছাইচাপা আগুনের মতো মানুষের মনে জ্বলছে ধর্ম। আজও সময়, সুযোগ পেলেই ধর্মের ধ্বজা উড়িয়ে দুই সম্প্রদায়ের মানুষ মেতে ওঠে রক্তের খেলায়। আর ঠিক এই বিষয়টিকেই পর্দায় 'ধর্মযুদ্ধ'র মাধ্যমে তুলে ধরতে চলেছেন রাজ।
<আরও পড়ুন: ১০ তলা বিল্ডিং! ‘এত বড় বাড়ির আমাদের কোনও প্রয়োজন নেই’, অন্দরমহল দেখিয়ে বিরক্ত সোনাক্ষী>
কাস্টিংয়েও চমক। ঋত্বিক চক্রবর্তী (Ritwick Chakraborty), সোহম চক্রবর্তী (Soham Chakraborty), শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় (Subhashree Ganguly), পার্ণো মিত্রের (Parno Mitra) মতো অভিনেতারা রয়েছেন। বাস্তবের অনেক ঘটনার প্রতিফলনও রয়েছে গল্পে। আগে মুক্তি পাওয়া টিজার-ট্রেলারেই দেখা গিয়েছে তার ঝলক। যেমন লাভ জিহাদ মতো ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে গল্পে, ঠিক তেমনই উঠে এসেছে দাঙ্গার কথাও। সিনেমায় ঋত্বিক এক কট্টর হিন্দুত্ববাদী। তাঁর মুখে গীতার শ্লোক। আবার উল্টোদিকে, সোহম এক কট্টরপন্থী মুসলিমের ভূমিকায়।
সিনেমায় শুভশ্রীর নাম মুন্নি, ছাপোষা এক গৃহবধূ। সুখের ঘরকন্নার মাঝেই তার স্বামীকে এক হিন্দু সংগঠনের নেতা বলে, মসজিদে গিয়ে হিন্দুদের পতাকা লাগিয়ে দিয়ে আসতে। সেখানেই বাঁধে গন্ডগোল। অন্যদিকে মুসলিম মেয়ে শবনমের চরিত্রে পার্নো। হিন্দু যুবকের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক। ঘটনাচক্রে এই চারটি চরিত্রই দাঙ্গা পরিস্থিতির শিকার হয়ে আশ্রয় নেয় এক বৃদ্ধার কাছে। যে চরিত্রে অভিনয় করেছেন স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত। একটি বিশেষ চরিত্রে রয়েছেন রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তও। তারপর? বাকি গল্প দেখার জন্য ১২ আগস্ট অবধি অপেক্ষা করতে হবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন