Seema Biswas Exclusive: 'আমি ভাষা নিয়ে বড্ড স্ট্রাগল করি..', রক্তবীজ ২ রিলিজের আগেই এক্সক্লুসিভ 'ব্যান্ডিট কুইন' সীমা বিশ্বাস

রক্তবীজ ২-এ যে চরিত্রে তিনি অভিনয় করছেন তাঁর সঙ্গে মিল রয়েছে পদ্মাপাড়ের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর। সেই নিয়েই তাঁকে কথা বলতে শোনা গেল। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার কাছে কী কী প্রশ্নের উত্তর দিলেন তিনি?

রক্তবীজ ২-এ যে চরিত্রে তিনি অভিনয় করছেন তাঁর সঙ্গে মিল রয়েছে পদ্মাপাড়ের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর। সেই নিয়েই তাঁকে কথা বলতে শোনা গেল। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার কাছে কী কী প্রশ্নের উত্তর দিলেন তিনি?

author-image
Anurupa Chakraborty
New Update
noname

একান্ত সাক্ষাৎকারে কী বললেন সীমা বিশ্বাস?

 আসন্ন পুজোয় যে ছবিগুলি রিলিজ করতে চলেছেন তাঁর মধ্যে অন্যতম রক্তবীজ ২। শিবপ্রসাদ - নন্দিতার নির্দেশনায় এই ছবির প্রথমভাগ বছর দুয়েক আগে পুজোয় দারুণ সফল হয়। তার-ই দ্বিতীয় ভাগ নিয়েই তাঁরা আসছেন এবার। গতবারের তুলনায় বেশ কয়েকটি নতুন চরিত্রকে এইবারের রক্তবীজে দেখা যাচ্ছে। তাঁর মধ্যে অন্যতম সীমা বিশ্বাস। ভারতীয় সিনেমার এই অসামান্য অভিনেত্রী বহুদিন পর বাংলা ছবিতে ফিরেছেন। এবং তাঁকে দেখা যাচ্ছে আদ্যোপান্ত এক রাজনীতিবিদের ভূমিকায়।

Advertisment

রক্তবীজ ২-এ যে চরিত্রে তিনি অভিনয় করছেন তাঁর সঙ্গে মিল রয়েছে পদ্মাপাড়ের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর। সেই নিয়েই তাঁকে কথা বলতে শোনা গেল। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার কাছে কী কী প্রশ্নের উত্তর দিলেন তিনি?

আগে বলুন পুজোর আগে, এই শহরটা কেমন লাগছে?

ওরে বাবা। চারিদিকে পুজো পুজো ভাব। সুন্দর একটা পরিবেশ। এদিকে ওদিকে বাঁশ পড়েছে। এই সময়টা দেখতেই ভাল লাগে। খুব ফুরফুরে একটা অনুভূতি।

বাংলা সিনেমায় ফেরাটা কতটা চ্যালেঞ্জিং মনে হল?

Advertisment

এই ছবিতে এত ভরপুর ট্যালেন্ট রয়েছে না, সব কিংবদন্তিরা রয়েছেন। এদের কাছে আমার নিজেকে শুন্য বলে মনে হয়। দ্বিতীয় হচ্ছে ভাষা। এটা একটা বড় বিষয়। যেকোনও ভাষা কিন্তু মাস্টার অফ নান। আমার কী হয় আমি আসামে থাকি, সেখানে পড়াশুনা করি, এখন অহমীয়াটা খুব একটা পরিস্কার না। বাংলা-হিন্দি কোনওটাই ঠিক নেই। হিন্দি বললে বলে বাঙালি নাকি? এদিকে বাঙালিরা বলে পআনি তো আসামের। সব মিলিয়ে একটা খিচুড়ি। হিন্দি ভাষা নিয়ে সত্য আমায় স্ট্রাগল করতে হয়েছে। কিন্তু, মনের কথা তো বলতে পারলেই হলে। মনের সঙ্গে কানেক্ট করার চেষ্টা করি। কিন্তু শিবু-নন্দিতা, ওরা দুজনেই আমায় দিয়ে করিয়ে নিয়েছে। একটা ফিঙ্গার ক্রশ সবসময় ছিল।

শিবু-নন্দিতার কোন কোন ছবিগুলি আপনার ভাল লেগেছে?

রক্তবীজ আমার খুব ভাল লেগেছিল। নাম নেব না, তবে একটা কথা বলতেই হয়, বলিউডের অনেককেই দেখেছি একটা দুটো ছবি করার পর, অনেক ছবি হয়তো কোয়ালিটি ওয়াইস ভাল হয় না। কিন্তু, শিবু নন্দিতার ক্ষেত্রে সেটা না। তাঁর একটাই কারণ, ওদের গল্প থেকে লেখা সবকিছুই খুব উইনিক। এটা একটা ভাল ব্যাপার ওদের ক্ষেত্রে। এই প্রশংসা করতে হবেই।

আদ্যোপান্ত একটা পলিটিক্যাল চরিত্রে অভিনয়, আপনার ভাবনা চিন্তা এবং রিয়ালাইজেশন?

আমার কাছে কাজ করে ফেলা অর্থ, সেটা আমি আমি ছেড়ে দি দর্শকের ওপর। একজন পলিটিক্যাল ফিগার, ইউনিভার্সাল হতেই পারে। তার বিভিন্ন পরিসরে বিভিন্ন রকমের আদব কায়দা হতে পারে। আমার ক্ষেত্রে যেটা ম্যাটার করেছিল, সেটা হল মন থেকে অথেন্টিক ভাবে কাজটা করা। এক্ষেত্রে একজন রাজনীতিবিদের ভূমিকায় আমি অভিনয় করেছি ঠিকই, কিন্তু এমন তো নয় যে আমাকে লম্বা লম্বা ভাষণ দিতে হয়েছে। খুব একটা অবজার্ভ করতে আমাকে এক্ষেত্রে হয়নি। যে একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব কী করে কথা বলছেন বা হাঁটছেন, সবকিছু পুঙ্খানুপুঙ্খ নজরে রাখতে হবে। এখানে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্কগুলো বেশি দেখানো হয়েছে। পাবলিক প্রেজেন্সের দিকটা কম দেখানো হয়েছে। রাজনৈতিক নেতাদের ও ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকেই। এছাড়াও যেটা মাথায় রাখতে হয়, সেটা হল, এমন কিছু একটা বডি ল্যাঙ্গুয়েজে রাখা যাতে বোঝা যায় যে সে পলিটিশিয়ান। আমি তো একজন অভিনেতা। সব সময় কোন মানুষকে দেখে, কল্পনা করতে পারি না। কেউ কেউ আছে নকল করার বিষয়টা দারুণ ক্যারি করতে পারে। আমি চেষ্টা করেছি এমন ভাবে রোলটাকে অ্যাডাপ্ট করার, যেন কোনভাবেই অদ্ভুত না লাগে। শিবু এবং নন্দিতা সেভাবেই আমায় বলেছিল, যে একটা ক্যারেকটার থেকে ইন্সপায়ার হয়ে নিজের মতো করতে।

অভিনেত্রী হিসেবে দর্শকের গ্রহণযোগ্যতা বিষয়টিকে মানেন? কোনোদিন মনে হয়েছে এই চরিত্রটা আমায় সমস্যায় ফেলতে পারে?

ভয় যে ঠিক পেয়েছি এরকমটা নয়। কিন্তু একটা ইনসিকিউরিটি তো কাজ করে। এইজন্য আমি নিজের কাজ নিজেই দেখি না। পুরোটাই অডিয়েন্সের উপর ছেড়ে দি। আমি ভাবি, হয়তো আমি খুব খারাপ করেছি। হয়তো আমি আমার ১০০% দিতে পারলাম না। কিন্তু কেউ যখন এসে আমাকে বলে যে আপনার এই চরিত্রটা দেখে আমি কেঁদে ফেলেছি, তখন আমার মনে হয় যাক! একবার শুধু আমার কাজ হয়ে গেলে বাকিটা আমি নিজের কাছে রাখি না। যদি আমি আমার কাজ বসে দেখি না,  আবার শুধু মনে হয় আমি কী বাজে অভিনয় করেছি। আর্টিস্টের ক্ষেত্রে, চরিত্রের ভ্যারাইটি হয়। আমি মনে করি, সারা বিশ্বজুড়ে সেই চরিত্রটা নানান ধরনের স্তর থাকতে পারে। সে কারণেই আমার চেষ্টা থাকে শুধু শুটিংয়ের সময় কাজটা করার। এমনকি খেয়াল করলে দেখা যাবে, ডাবিং এর সময় আমি নিজের দিকে তাকাতে চাই না।

আওয়ার্ডস - আপনার দায়িত্ব বাড়িয়ে দেয়?

যেকোনো পুরস্কার, আমার কাছে একটা প্রেজেন্ট সারপ্রাইজ। আমি যখন কোন ছবিতে কাজ করি, আমি দর্শকের কথা ভাবি কিন্তু পুরস্কারের কথা একেবারেই ভাবি না। পুরস্কার পাই না পাই, দায়িত্ববোধ আমার অবশ্যই আছে। কারণ, ভাল কিছু ডেলিভার করতে হবে। কোনোদিন যদি ঈশ্বর করে অস্কার পেয়ে যাই, তখনো আমার একই ভাবনা থাকবে, ছোট কোন চরিত্রে অভিনয় করলেও আমি দায়িত্ব নিয়েই অভিনয়টা করব। আমার কাছে ঈশ্বর হচ্ছে দর্শক। আমার মধ্যে ক্ল্যারিটি থাকা খুব দরকার।

ব্যান্ডিট কুইন আপনাকে জনপ্রিয়তা দিয়েছে, এই মন্তব্যে সহমত?

আমার তো অভিনয় আসার কথাই ছিল না। তবে, চেষ্টা করব আগামী জন্মেও যেন আমি অভিনয় করতে পারি। অনেক রকমের আর্টিস্ট হন। আমার অভিনেতা হিসেবে খুব ভয় ছিল। হঠাৎ একদিন স্টেজ থিয়েটারে, শেখর কাপুর আমাকে দেখলেন। উনি আমাকে স্ক্রিপ্ট দিলেন। আমি অনেকদিন ধরে সময় নিয়ে পড়লাম। আমার শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করলাম। তারপর হ্যাঁ হল। বেশ কিছু শর্ত রেখেই কাজ করেছিলাম। আমি তখনো ভাবতাম যে আমি স্টেজ অভিনেতা। সঞ্জয় লীলা বানসালি, ব্যান্ডিট কুইনের রাফ কাট দেখেই আমাকে আপ্রোচ করেছিলেন খামোশির জন্য। তখন আমাকে অনেকে এরকম বলেছিল, যে মনীষা কৈরালার মায়ের চরিত্রে অভিনয় করলে আমার ক্যারিয়ার নাকি অনেকটা পিছিয়ে যাবে। তারপর শ্যাম বেনেগাল ডাকলেন। এই যে মানুষ, আজও বলেন এই ছবি নিয়ে, সেটাই আমার কাছে বিরাট বিষয়। এটা লাইফটাইম রোল ছিল। আমি ওই বিষয়টাকে ক্যারি করি না। কিন্তু, কেউ কথা বললে বিরক্ত হই না। তারপরে তো ব্যান্ডিট কুইন নিয়ে বীভৎস কন্ট্রোভারসি হলো। আমি কিন্তু সমস্ত শর্ত রেখেই সম্পূর্ণ নগ্ন যে হব না, সেটা জানিয়ে দিয়েছিলাম। বডি ডাবল কেউ একজন করেছিল। তখন যখন এত বিতর্ক হচ্ছে আমি তখনও কিন্তু এই বিষয়ে কোন মুখ খুলিনি।

নতুন প্রজন্ম এবং নতুন ধাঁচের বাংলা সিনেমা থেকে আপনি কী কী শিখলেন?

প্রথম কথা হচ্ছে এনার্জি এবং উত্তেজনা। সেই এনার্জিটা কিন্তু পুরো ফ্লোর জুড়ে থাকে। কোন ব্যক্তি বিশেষে নির্দিষ্ট মানুষের সঙ্গেই হবে এমনটা কিন্তু নয়। শিবু নন্দিতা দি, জিনিয়া প্রত্যেকের মধ্যে একটা বীভৎস উত্তেজনা কাজ করত। প্রত্যেকটা মানুষের মধ্যে খুব ক্লিয়ারীটি কাজ করে এই প্রজন্মের মধ্যে। যদি এমন মনে হতো যে শিবুকে বা নন্দিতা দিকেও বিরক্ত করব না, বাকিদেরকেও যখন আমি জিজ্ঞাসা করতাম প্রত্যেকের কিন্তু খুব ক্লিয়ারভাবে জিনিসপত্র বুঝিয়ে দিত। ওরা জানে, কত অবধি কী করা যায়।

Tollywood Actress tollywood news Entertainment News Today