ঋতু বিয়োগের ছয় বছর

বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ৩০ মে চিত্রপরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের প্রয়াণ দিবস। ছোট ছোট ঋতুকাহিনিতে এদিন স্মৃতি রোমন্থনে পরিচালক রামকমল মুখোপাধ্যায়

বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ৩০ মে চিত্রপরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের প্রয়াণ দিবস। ছোট ছোট ঋতুকাহিনিতে এদিন স্মৃতি রোমন্থনে পরিচালক রামকমল মুখোপাধ্যায়

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
rituparno

ঋতুপর্ণর স্মৃতিচারণায় রামকমল মুখোপাধ্যায়।

উনি পরিচালক আর আমি সাংবাদিক, এভাবেই 'চোখের বালি'র সময় থেকে ঋতুপর্ণ ঘোষের সঙ্গে আলাপ জমেছিল। আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাইমা (সেন) ও টোটার (রায়চৌধুরী) জন্যই ঋতুদা'র সঙ্গে সেবার আলাপ হয়েছিল। প্রায়শই রাইমা ওঁর গল্প বলত। রাইমার থেকেই শোনা, ঋতুদার দেওয়া চিত্রনাট্যটা কীভাবে সুচিত্রা সেন পড়ে শুনিয়েছিলেন এবং সংলাপ বলার কায়দা শিখিয়েছিলেন রাইমাকে। তবে এই আইডিয়াটা ছিল ঋতুপর্ণর। ওঁর সংস্পর্শে আসা যদি বলতে হয়, তাহলে তার প্রেক্ষাপট ছিল এই ছবি।

Advertisment

'চোখের বালি' থেকে ওঁর সঙ্গে মুখোমুখি পরিচয় হলেও পরিচালকের সঙ্গে পরিচয় সেই '১৯শে এপ্রিল'-এর সময় থেকেই। "দেবশ্রীর কাছের মানুষ হওয়ায় তখনও কথা হয়েছিল ঋতুদার সঙ্গে। ওরা (প্রসেনজিৎ-দেবশ্রী) ম্যান্ডেভিলা গার্ডেন্সে শিফট করার সময় ছবিটা মুক্তি পায়, আর দেবশ্রী জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত হয়।

আরও পড়ুন,সংসদে ফোটোসেশন মিমি-নুসরতের, ইন্টারনেটে ভাইরাল ছবি

Advertisment

বম্বের সঙ্গে যোগাযোগের সূত্রে 'বাড়িওয়ালি'র সময়ও জানতে পেরেছি ঋতুপর্ণর কথা। পরোক্ষ আলাপের সময় শেষ হয়ে প্রত্যক্ষ পরিচয়ে কত ঝগড়া যে পরবর্তীকালে ঋতু'দার সঙ্গে করেছি সে হাতে গুণে শেষ করতে পারব না। মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে যেত। আসলে মানুষটার মুড সুইং হতো প্রবল। ঋতুদা'র সঙ্গে ঝগড়া হচ্ছে মানেই, 'ও' আপনাকে মন থেকে স্বীকার করেছে।

একবার তো মনে আছে এরকম কথা বলা বন্ধ, হঠাৎ দেখি টুইটারে নোটিফিকেশন 'ঋতুপর্ণ ঘোষ ইজ ফলোয়িং ইউ'। ফোন করে জিজ্ঞেস করলাম, "এটা কী সত্যি তুমি?" (আসলে এখনকার মতো সেসময় ব্লু টিক ছিল না)। ঋতু'দা উত্তরে বলেছিলেন, "আমার পুরোটাই সত্যি।"

আরও পড়ুন, প্রধানমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে দিশেহারা আশা ভোঁসলে, পথ দেখালেন স্মৃতি

'খেলা'-র সময় ওঁর সঙ্গে আড্ডা জমত। জানেন, ঋতুদা চান নি 'নৌকাডুবি' হিন্দিতে হোক। সুভাষ ঘাই যেহেতু প্রযোজক ছিলেন, তাই না বলতে পারেন নি। কিন্তু নাম নিয়ে একটা ঝামেলা চলছিল। যদি ছবিটার নাম 'ডুবতি নাও' হতো, তাহলে বোধহয় ঋতুদা আমায় খুন করতেন। 'কশমকশ' নামটা আমারই ঠিক করা। ঋতুদা বলেছিলেন, "নাম হিসাবে তো খুবই ভাল! কিন্তু আমি হিন্দি নিয়ে কিছু জানতে চাই না।"

বেশ কিছু দিন পর ফোনে একটা মেসেজ। ঋতুপর্ণাকে (সেনগুপ্ত) ফোন করলাম। ওপার থেকে ভেসে এল, "কোনওদিন ভাবিনি ঋতুদাকে চন্দন পরাতে হবে। ও তো খুব সাজতে ভালবাসত। শেষ যাত্রায় ওকে সাজিয়ে দিলাম।"

Rituparno Ghosh