Bengali Television Payment Issue, Rana Sarkar, DAG Creative Media: দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া-র গোড়াপত্তন হয় ২০১০ সালে একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে। কলকাতার রেজিস্ট্রার অফ কোম্পানিজ-এ এই কোম্পানিটি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে নথিভুক্ত। কোম্পানির শেষ এজিএম হয় ২০১৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর এবং করপোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের রেকর্ড অনুযায়ী, এই কোম্পানি ব্য়ালেন্স শিট সর্বশেষ ফাইল করা হয় ৩১ মার্চ ২০১৭। দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া-র পথচলা শুরু বাংলা ছবি দিয়ে, পরবর্তীকালে মূলত বাংলা ধারাবাহিক নির্মাণেই মন দিয়েছে এই সংস্থা।
২০১১ সালে মুক্তি পায় দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া ও রানা সরকার প্রযোজিত ছবি 'রঞ্জনা আমি আর আসব না'। অঞ্জন দত্ত, পার্নো মিত্র, উষসী চক্রবর্তী অভিনীত ওই ছবি অত্যন্ত সাড়া ফেলেছিল দর্শকমহলে। তার পরের বছরই মুক্তি পায় দু'টি ছবি, 'আবার ব্যোমকেশ' ও 'বেডরুম'। মোটামুটি ২০১২ সাল থেকেই কনটেন্ট-বেসড বাংলা ছবির প্রযোজক হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন রানা সরকার।
আরও পড়ুন: Bengali Television Industry Payment Issues: মাত্র একটি নথির জন্য আটকে শিল্পীদের কোটি টাকারও বেশি
২০১৪ সালে তিনটি ছবি মুক্তি পায় ওই কোম্পানির প্রযোজনায়-- 'চতুষ্কোণ', 'জাতিস্মর' ও 'ব্ল্যাক'। ওই বছর থেকেই টেলিজগতে কাজ শুরু করে দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া। টেলিভিশনে সংস্থার প্রথম ধারাবাহিক, কালারস বাংলা-র 'ব্যোমকেশ'। গৌরব চক্রবর্তী-ঋদ্ধিমা ঘোষ অভিনীত এই সিরিজটি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয় দর্শকের মধ্যে।
দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়ার সবচেয়ে রমরমা পর্যায় ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল। এর মধ্য়েই শুটিং হয় রানা সরকার প্রযোজিত, পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্য়ায়ের 'ধূমকেতু' ছবির যা আজও মুক্তি পায়নি। আবার ২০১৫ সালে কালারস বাংলা-তেই শুরু হয় 'রবি ঠাকুরের গল্প'। টেলিজগতে রানা সরকার ও দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়ার উত্থান মূলত কালারস বাংলা-র হাত ধরেই।
ওই চ্যানেলেই 'মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য়' ধারাবাহিকটি শুরু হয় ২০১৭ সালে। আবার ওই বছরই মুক্তি পায় রানা সরকার প্রযোজিত বাংলা ছবি 'চলচ্চিত্র সার্কাস'। এই পর্যন্ত দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া মোটামুটি গতিতে এগিয়েছে। ২০১৮ সাল সংস্থার টেলিপ্রযোজনার ক্ষেত্রে একটা বুম হয় বলা যায়। ওই বছর থেকেই দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া প্রজেক্ট পায় জি বাংলা ও স্টার জলসা চ্য়ানেলে।
আরও পড়ুন: Bengali Television Industry Payment Issues: মাত্র একটি নথির জন্য আটকে শিল্পীদের কোটি টাকারও বেশি
২০১৮ থেকে ২০১৯-এর মধ্যে ওই সংস্থার প্রযোজনায় মোট চারটি নতুন ধারাবাহিক এসেছে। ২০১৮ সালের মধ্যেই শুরু হয়, জি বাংলা-র 'জয় বাবা লোকনাথ', কালারস বাংলার 'প্রথম প্রতিশ্রুতি' ও স্টার জলসা-র 'আমি সিরাজের বেগম'। ২০১৯-এর গোড়া থেকে শুরু হয় কালারস বাংলা-র 'খনার বচন'। এখানে একটা বিষয় লক্ষ্যণীয় যে বিগত দুবছরে দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া কোনও বাংলা ছবি প্রযোজনা করেনি। পুরো মনোযোগটাই ছিল টেলিভিশনে।
তবে সম্ভবত ছবি প্রযোজনার ক্ষেত্রে কিছু বাধাও ছিল। গত ১ মে ইমপা-তে আর্টিস্টস ফোরামের আপৎকালীন বৈঠকে অংশগ্রহণের পরে ফোরামের সদস্য এবং ইমপা-র সভাপতি, পিয়া সেনগুপ্ত সংবাদমাধ্য়মকে জানান যে প্রযোজক রানা সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে ইমপা-র কাছে এবং সেগুলি মূলত বকেয়া পেমেন্ট সংক্রান্ত।
সেই একই অভিযোগ আবার উঠল টেলিভিশন প্রযোজনার ক্ষেত্রে। অথচ দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া কিন্তু টেলি-প্রযোজনার ক্ষেত্রে সফল। 'জয় বাবা লোকনাথ' বিগত কয়েক মাস ধরে টিআরপি সেরা তিনে রয়েছে। বাকি ধারাবাহিকগুলিও অত্যন্ত জনপ্রিয়। সব সময়েই ভাল অভিনেতা-অভিনেত্রী, অভিজ্ঞ চিত্রনাট্যকার ও পরিচালককে নিয়েই ধারাবাহিকের কাজ হয়েছে। বাংলা ছবির ক্ষেত্রেও তাই। তার পরে এই বর্তমান সঙ্কট নিঃসন্দেহে দুঃখজনক।
তথ্য়সূত্র: আইএমডিবি