বেশ কয়েকদিন ধরেই চাপানউতোর চলছে দাগ মাল্টিমিডিয়া ও আর্টিস্ট ফোরামের মধ্যে। অবশেষে এনওসি দিতে রাজি হলেন প্রযোজক রাণা সরকার। আগামী তিনদিনের মধ্যে এনওসি দিয়ে দেবেন বলে তিনি গতকাল আর্টিস্ট ফোরামকে ইমেল মারফৎ জানিয়েছেন। তবে রাণার বক্তব্য, তাঁর এনওসিতে যদি সমস্ত সমস্যার সমাধান হয়, তাহলে তাঁর কখনওই এনওসি দিতে বাধা নেই কিন্তু তার পরে এই পেমেন্টের দায়িত্ব কিন্তু চ্য়ানেলকেই নিতে হবে। শুধু তাই নয়, ওই ইমেলের বয়ানে স্পষ্ট যে বকেয়া পেমেন্টের দেরি নিয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট চ্য়ানেলগুলির দিকেও আঙুল তুলেছেন। রানা সরকারের এই মেলের জবাবে আর্টিস্ট ফোরাম তাদের বক্তব্যও জানিয়েছে ইমেল মারফত।
আরও পড়ুন, মধ্যরাতেই প্রসেনজিৎকে চিঠি? সোশ্য়াল মিডিয়ায় ছড়াল রানা সরকারের ইমেল
২৫ মে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেছিল আর্টিস্টস ফোরাম। সেখান ফোরামের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া-র বিভিন্ন ধারাবাহিকের ইউনিটের শিল্পী-টেকনিসিয়ানদের যে পেমেন্ট বকেয়া রয়েছে, তা অনির্দিষ্টকাল ধরে বকেয়া রয়েছে। ওই বকেয়া পেমেন্টের জন্য সংশ্লিষ্ট চ্য়ানেলগুলিতে একটি নো অবজেকশন সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার কথা দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া-র। আর্টিস্টস ফোরাম সূত্রের খবর, দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়ার পক্ষ থেকে এই এনওসি সংশ্লিষ্ট চ্য়ানেলগুলিতে পাঠালেই সরাসরি শিল্পী-টেকনিসিয়ানদের পেমেন্ট করে দেবে চ্য়ানেল, এমনটাই আশ্বাস পাওয়া গিয়েছিল।
আরও পড়ুন, মাত্র একটি নথির জন্য আটকে শিল্পীদের কোটি টাকারও বেশি
কিন্তু দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া-র পক্ষ থেকে কে এনওসি দেবেন, সেই নিয়ে ঘোর জটিলতার সৃষ্টি হয়েছিল। কারণ ফোরামের দাবি, করপোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া-র সাইনিং অথরিটি তথা ডিরেক্টর অরিন্দম পাল ও অদিতি রায়। সেখানে রানা সরকারের কোনও নাম নেই। তাই এঁরা এনওসি দিয়ে দিলেই সব সমস্যা মিটে যায়। এদিকে অদিতি রায় ও অরিন্দম পাল দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। রানা সরকার গতকাল তাঁর মেলে স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনিই তাঁর কোম্পানির অথরাইজড সিগনেটরি। চ্য়ানেলের সঙ্গে যাবতীয় এগ্রিমেন্টে তিনি সই করেছেন, দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া-র সমস্ত ইনভয়েসেও তাঁর সই রয়েছে। তাই তাঁর এনওসি যে গ্রাহ্য় হবে চ্য়ানেলের কাছে, সেই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই তাঁর নিজের কাছে।
তবে এনওসি দেওয়ার আগে তিনি বকেয়া পেমেন্টের তালিকাটি আরও একবার খতিয়ে দেখতে চান। ফোরাম সূত্রের খবর, রানা সরকার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে ফোরামের কাছে শিল্পীদের বকেয়া টাকার যে তালিকাটি গিয়েছে, সেখানে বেশ কিছু শিল্পী তাঁদের প্রাপ্য টাকার পরিমাণ বাড়িয়ে লিখেছেন। এই বিষয়ে ফোরামের বক্তব্য, তেমন কিছু হলে দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়ার প্রতিনিধি এসে, ফোরামের তত্ত্বাবধানে সেই সব শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে অবিলম্বে বিষয়টির নিষ্পত্তি করুক।
আপাতত রানা সরকার তিন দিনের একটি সময়সীমা চেয়েছেন বা বলা উচিত তিনটি ওয়র্কিং ডে চেয়েছেন। এই তিনদিনের মধ্যে চূড়ান্ত তালিকা জমা দিয়ে এনওসি যদি জমা পড়ে যায় তবে ফোরামের আশা, দীর্ঘদিনের এই বকেয়া টাকার জট কেটে যাবে। রানা সরকার এনওসি জমা দিলে, এবার সংশ্লিষ্ট তিনটি চ্যানেল অর্থাৎ স্টার জলসা, জি বাংলা ও কালারস বাংলা পেমেন্টের প্রক্রিয়া শুরু করে দেবে, এমনটাই আশা করছে ফোরাম।