Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

Mardaani 2 movie review: বলা বাহুল্য শিবানীই শেষ কথা

Mardaani 2 movie review: রানি মুখোপাধ্যায়ই ছবির নায়ক, যার আশেপাশের প্রায় পুরুষ চরিত্রগুলোই খুব চেনা, যেমনটা হয়ে থাকে আর কী!

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Rani Mukerji starrer Yash Raj Films Mardaani 2 movie review

শিবানী শিবাজি রায়ের ভূমিকায় রানি মুখোপাধ্যায়।

Mardaani 2 movie cast: রানি মুখোপাধ্যায়, বিশাল জেঠওয়া

Advertisment

Mardaani 2 movie director: গোপী পুথরান

Mardaani 2 movie rating: ২.৫ তারা

শিবানী শিবাজি রাওয়ের প্রত্যাবর্তন। ২০১৪ সালের ছবির সিকোয়েলটিতে এই নির্ভীক মহিলা পুলিশ অফিসারের কর্মক্ষেত্র মুম্বই থেকে সরে গিয়েছে কোটা-তে। কিন্তু বাকি কোনওকিছুরই খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। সেই পুরাতন ভয়ডরহীন, সাফ কথা বলা, প্রতিবাদী এবং দায়িত্ববান-- শিবানী শিবাজি রায়।

এই নতুন ছবিতে শিবানীর বিপরীতে রয়েছে ২১ বছরের এক আপাত-শিশুসুলভ চেহারার তরুণ। সুপুরুষ, ভাসা ভাসা চোখের এই স্তরটি উঠে গেলেই বেরিয়ে পড়ে এক বীভৎস রূপ। বিশাল জেঠওয়া অভিনীত এই সানি চরিত্রটিকে দৈত্য বললেও কম বলা হয় এবং সে তার এই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে বিন্দুমাত্র লজ্জিত নয়। সে যেখানেই পা রাখে ধ্বংসের চিহ্ন রেখে যায় এবং প্রত্যকটি ক্ষেত্রেই দেখা যায় নিহত মেয়েটির শরীর নারকীয় অত্যাচারে প্রায় ছিন্ন-ভিন্ন।

আরও পড়ুন: সাগরদ্বীপে যকের ধন: রোমাঞ্চ এবং চিত্রনাট্যের মিশেলে ভাল প্রচেষ্টা

বেশ অনেকদিন পরে পুরনো রানি মুখোপাধ্যায়-কে ফিরিয়ে আনল এই ছবি। তবে বলাই বাহুল্য যেহেতু যশ রাজ ফিল্মস-এর ব্যানারে নির্মিত, তাই এই ছবিটি যে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত রানি মুখোপাধ্যায়ের ছবি-ই হবে, তা জানা ছিল। বুদ্ধি খাটিয়ে তাই একেবারেই নতুন মুখের এক খলনায়ককে রাখা হয়েছে। চরিত্রটিও এমনভাবে লেখা হয়েছে যা অত্যন্ত ঘৃণ্য, যে প্রত্যেকটি ধর্ষণ ও খুন উপভোগ করে।

Rani Mukerji in Zee Bangla reality show Dadagiri hosted by Saurav Ganguly কলকাতায় ছবির প্রমোশনে রানি। ছবি: জি বাংলার প্রোমো থেকে

রানি মুখোপাধ্যায়ই নিঃসন্দেহে ছবির হিরো। তার চারপাশে যে পুরুষ চরিত্রগুলি দেখা যায় সেগুলিও খুব চেনা-- মহিলা বলেই দুর্ব্যবহার করে এমন একজন অধঃস্তন, তারই সঙ্গে কয়েকজন গুণমুগ্ধ জুনিয়র, আবার একজন সিনিয়র যে স্নেহও করে আবার প্রয়োজনে বকাবকি করতেও ছাড়ে না। শিবানীর চরিত্রে এই ছবিতে খুব অন্য়রকম কিছু মনে হয় না রানিকে। তার প্রত্যেকটি চলনই খুব চেনা এবং চিত্রনাট্যও এমনভাবেই লেখা যে সব ক্ষেত্রেই প্রাধান্য পাবেন তিনি।

উল্টোদিকে ভাবলেশহীন মুখের ঘৃণ্য ভিলেনের চরিত্রে বেশ সাবলীল বিশাল। অন্তত যতক্ষণ না তার খল কাণ্ডকারখানাকে বড্ড বেশি বাড়াবাড়ি মনে হয়। চরিত্রটির মধ্যে খানিকটা ঝকঝকে ব্যাপারও রাখা হয়েছে। ছবিটি দেখতে দেখতে মনে হতে পারে যে বিশাল অভিনীত এই চরিত্রটি হলিউডি 'ব্যাড গাই' ও 'দেশি ভিলেন'-এর মাঝামাঝি কোথাও আটকে রয়েছে।

আরও পড়ুন: Panipat movie review: তেমন একটা জমল না

এই ছবির আর একটি বড় সমস্যা হল, নারী ও পুরুষ, 'মর্দ' ও 'অউরত'-এর প্রসঙ্গে বেশ কিছু চরিত্রের দৃষ্টিভঙ্গি ও সংলাপ বড্ড বেশি একমাত্রিক। বেশিরভাগ সংলাপেই 'অউরত' জাতের প্রতি বড় বেশি বিদ্বেষ কাজ করে। যে ছবি প্রথম থেকে দাবি করে আসছে যে তা নারীকেন্দ্রিক, নারীর অধিকারের কথা বলে, নারীর প্রতি অন্যায়ের প্রতিবাদ করে, সেই ছবিতে এই ধরনের সংলাপ অতিরিক্ত থাকলে তা বেশ সমস্যার। আর পাঁচটা ছবির মতোই এখানেও সেই শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় যে কখন ভিলেন বিনাশ ঘটবে। অথচ প্রথম ফ্রেম থেকেই দর্শক তাকে ভিলেন বলে শনাক্ত করে ফেলেন।

তবে ২০১৯-এর শেষ প্রান্তে এসে, এটা বলতেই হবে যে শিবানী শিবাজি রায়ই শেষ কথা। এদেশের ছবিতে আরও বেশি এই ধরনের চরিত্র প্রয়োজন। কিন্তু সেই চরিত্রের চারপাশে এত বেশি নারীবিদ্বেষী চরিত্র থাকলে চলবে না। নারীর প্রতি অত্যন্ত অবমাননাকর সংলাপে যদি ঠাসা থাকে এই ধরনের ছবি, তবে শেষ পর্যন্ত সেই সব দর্শককেই তা আমোদ দেবে, যারা বাস্তবে ঠিক এই কথাগুলিই ভেবে থাকেন বা বলে থাকেন।

আরও পড়ুন: সৃজিতের ‘দ্বিতীয় পুরুষ’-এর লুক, বাজিমাত অনির্বাণের

আজকের দিনে দাঁড়িয়েও কেন এই ধরনের একটি গল্পকে সিনেমায় সেই বাঁধা গতে উপস্থাপিত করতে হবে? কেন একটি নারীকেন্দ্রিক ছবিতে মূল চরিত্রের আশেপাশে এমন কিছু পুরুষ চরিত্র থাকবে না যারা প্রথম থেকেই সেই কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রের সহায়ক? কেন এই সময়ে দাঁড়িয়েও প্রত্যেক বার সেই একই চাকা ঘোরানোর গল্প বলতে হবে? সমসাময়িক পরিচালকদের কি দর্শকের উপর খুব একটা আস্থা নেই নাকি তাঁরা মনে করেন যে গোটা ছবিটি দেখার পরে তবেই নারীর প্রতি দর্শকের সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি বদলাবে? বিষয়টা দাঁড়াচ্ছে অনেকটা এই রকম যে একজন নারী চরম দুঃখ-কষ্ট-নির্যাতন সহ্য করে, তবেই ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়!

নারীর সমানাধিকার নিয়ে বেশ কিছু ফুটন্ত সংলাপ রাখা হয়েছে রানি মুখোপাধ্যায়ের মুখে। আর সেগুলি অত্যন্ত দক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতার সঙ্গে দর্শকের দিকে ছুঁড়ে দেন রানি। হয়তো জানা কথাই যে শুধুমাত্র রানির জন্যই ওই সংলাপগুলি লেখা। তার পরেও অন্তর থেকে সাধুবাদ জানাতে ইচ্ছা হবে দর্শকের।

rani mukherjee bollywood movie
Advertisment