বাপ্পি লাহিড়ী, তনুজা, কিশোর কুমার, আর ডি বর্মন থেকে পরবর্তী প্রজন্মের অভিজিৎ ভট্টাচার্য, কাজল, রানি মুখোপাধ্যায়… তারকাদের একসূত্রে বেঁধেছে শিল্পচর্চা আর বাঙালিয়ানা। মুখোপাধ্যায় পরিবারের সঙ্গে বাপ্পি লাহিড়ীর (Bappi Lahiri) পরিচয় দশক কয়েক আগের। যখন তিনি হিন্দি মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির 'বাপ্পিদা' হয়ে ওঠেনননি, প্রায় তখন থেকেই।
কলকাতাতেই অলোকেশের সঙ্গে আলাপ রানি মুখোপাধ্যায়ের (Rani Mukherjee) মা কৃষ্ণা মুখোপাধ্যায়ের। ওদিকে মুম্বইতে পা রেখেই কাজলের বাবা তৎকালীন খ্যাতনামা প্রযোজক-পরিচালক সোমু মুখোপাধ্যায়ের ছবিতে সংগীত পরিচালনার সুযোগ পান বাপ্পি। সেই প্রেক্ষিতে কৃষ্ণা মুখোপাধ্যায়ের পাশাপাশি তনুজার সঙ্গেও বেজায় ভাব ছিল তাঁর। বুধবার সকালে তাই বাপ্পি লাহিড়ীর প্রয়াণের খবর পেয়েই দ্রুত তাঁর বাড়িতে মেয়ে কাজলকে নিয়ে ছুটে যান তনুজা।
বাপ্পি লাহিড়ীর প্রয়াণ যেন মুখোপাধ্যায় পরিবারের কাছে ব্যক্তিশোকের থেকে কম কিছু নয়। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর কাছে 'বাপ্পি আঙ্কল'-এর স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে তাই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন রানি মুখোপাধ্যায়। অভিনেত্রীর মন্তব্য, "এই খবর পেয়ে আমার মা একেবারে ভেঙে পড়েছেন।"
<আরও পড়ুন: চালসার শালবাড়িতে এলেই জমত গানের আসর, এমনকী বালিশেও তবলা বাজাতেন বাপ্পি>
ছেলেবেলাতেই মায়ের সঙ্গে কলকাতায় পরিচয় বাপ্পি আঙ্কলের। তখন থেকেই দুজনের বন্ধুত্ব। ওঁর চলে যাওয়াটা আমাদের পারিবারিক ক্ষতি। মা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। একেবারে ভেঙে পড়েছেন। আজ সারাদিন বাপ্পি মামার সঙ্গে কাটানো ছোটবেলার সব মুহূর্তগুলো মনে পড়ে যাচ্ছে। খুব…খুব মিস করব। বাপ্পি মামার হাসি মুখটা কিছুতেই ভুলতে পারছি না। চিরকাল মনে রয়ে যাবে ওঁর ওই হাসিমাখা মুখটা। চিত্রা আন্টি, রিমা, বাপ্পার জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি, ওঁরা যেন এই শোক সামলে উঠতে পারে, বললেন রানি মুখোপাধ্যায়।
অভিনেত্রী এরপরই যোগ করলেন, "নিজের চেষ্টায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন উনি। বাবা-মায়ের কাছে যেমন ভাল সন্তান হয়ে উঠেছিলেন, তেমনই ভাল স্বামী আর প্রকৃত বাবা হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে বাপ্পি লাহিড়ি নামটা আইকন হয়ে থেকে যাবে চিরকাল। খুব তাড়াতাড়ি চলে গেলেন। খুব কষ্ট হচ্ছে। এবার শান্তিতে ঘুমোন বাপ্পি আঙ্কল।"
<আরও পড়ুন: ‘মামা’ কিশোর কুমারের সিনেমায় অভিনয়ে হাতেখড়ি, ছবিতে ‘বাপ্পি’কে চিনতে পারছেন?>
কাজলের বাবা সোমু মুখোপাধ্যায় যখন ২০০৮ সালে প্রয়াত হয়েছিলেন, তখনও তড়িঘড়ি তনুজাকে সমবেদনা জানাতে পৌঁছেছিলেন বাপ্পি লাহিড়ী। বুধবার তাই তনুজাও ছুটে গিয়েছেন ভ্রাতৃ-সম বাপ্পির মৃত্যুর খবর শুনে তাঁর পরিবারের পাশে থাকতে। সাতের দশকে বঙ্গসন্তান অলোকেশ যখন পাড়ি দিয়েছিলেন মুম্বইতে তখন, তনুজার স্বামী সোমু মুখোপাধ্যায়ের ছবি ‘নানহা শিকারি’র জন্য মিউজিক কম্পোজ করেন তিনি। সময়ের সঙ্গে মুখোপাধ্যায় পরিবারের সঙ্গে বাপ্পা লাহিড়ীর সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন