করোনার জেরে কার্যত স্তব্ধ জনজীবন। ঘরবন্দি মানুষ। কিন্তু এসবের মধ্যেই খুশির খবর পৌঁছল পরিচালক রঞ্জন ঘোষ ও প্রযোজক-অভিনেতা ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর কাছে। কারণটা আহা রে-র মাথায় নতুন মুকুট। খাবার নিয়ে তৈরি এশিয়ার ২৫টি ছবির মধ্যে নির্বাচিত হল রঞ্জন ঘোষের এই ছবি। এদিন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সঙ্গে একান্ত আড্ডায় উঠে এল কিছু নস্ট্যালজিয়া, কিছু আক্ষেপ।
লকডাউনের মাঝে খুশির খবর পেয়ে নিঃসন্দেহে উচ্ছ্বসিত পরিচালক বললেন, ''আমার কাছে এটাই দুঃখের, এখানে যখন ছবিটা মুক্তি পেল অনেকেই হেলাফেলা করলেন। কিন্তু কলকাতার বাইরে বেরিয়ে আহা রে- দিল্লি, মুম্বই, হায়দরাবাদ, গৌহাটিতে অত্যন্ত প্রশংসা পেল। বিদেশে (আমেরিকা, চিন, ইটালি, মেলবোর্ন) গিয়েও সমাদৃত হল। অবাক হলাম কলকাতায় যাঁরা ফিল্ম নিয়ে চর্চা করেন তাঁরা কেন ছবিটা বুঝতে পারলেন না? কিছুটা অবাকই হলাম বলতে পারেন। তবে নন্দন ওয়ান এবং টু-তে ১১ সপ্তাহ এবং সবমিলিয়ে ১০০ দিন চলেছে।''
আরও পড়ুন, বাদুড়িয়ায় নজর নেই, টিকটকমগ্ন নুসরতের ভিডিও নিয়ে সরগরম নেটপাড়া
''হৃদ মাঝারে-র ক্ষেত্রেও এটা হয়েছিল। অথচ নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি তাদের পিএইচডি সিলেবাসে ছবিটাকে জায়গা দিল। ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডনে শেক্সপিয়ার নিয়ে একটা কনফারেন্সে (২০১৬) সেখানে বাংলা ছবি হিসাবে হৃদ মাঝারে- দেখানো হল। অক্সফোর্ড কেমব্রিজ ও রয়্যাল সোসাইটি অফ আর্টসের বোর্ডের ড্রামার সিলেবাসে ওমকারা, কালিয়াট্টম এবং হৃদ মাঝারে স্থান পেয়েছিল। কিন্তু কলকাতার বাঙালি ছবিটা গ্রহণ করেননি''।
''তবে আহা রে এই প্রাপ্তিটা পাবে আশা করিনি। অ্যাং লি-র 'ইট ড্রিঙ্ক ম্যান ওম্যান', জুজো ইটামির 'তামপোপো'-র মতো ছবির তালিকায় আমার ছবি। এটা স্বপ্ন সত্যি হওয়া বলতে পারব না, এটা স্বপ্নাতীত। এই ছবিটা প্রযোজনা করা ঝুঁকির ছিল। কিন্তু ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত যে পাশে দাঁড়িয়েছেন এর জন্য আমি কৃতজ্ঞ। উনি না দাঁড়ালে ছবিটা হতো না। পুরো আহা রে টিমের জন্য খুব আনন্দের'', বললেন রঞ্জন।
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর কথায়, ''এটা আমাদের জন্য ভীষণ গর্বের। খাবার মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা, সেই বিষয় নিয়ে নিরীক্ষা করাটা একটু ঝুঁকিপূর্ণ। তবুও এশিয়ার দর্শক ছবিটা পছন্দ করেছেন সেটা তো নিঃসন্দেহে আনন্দের।''
''আমি সেটে ভীষণ হিটলারের মতো থাকি তো (হাসি), টিমের সদস্যরা খুশি হবে, তাদের কাজ স্বীকৃতি পাচ্ছে। ঋতুপর্ণা প্রথমে বিশ্বাসই করেননি'', খুশি ঝরে পড়ে পরিচালকের কণ্ঠে। প্রসঙ্গত, 'আহা রে' ছবিতে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত ছিলেন মুখ্য চরিত্রে এবং তাঁর বিপরীতে ছিলেন বাংলাদেশের অভিনেতা আরিফিন শুভ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন