২৫ দিন ধরে হাসপাতালের বেডে প্রকৃত যোদ্ধার মতো লড়ে যাচ্ছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (Soumitra Chatterjee)। দিন দুয়েক আগেই শোনা গিয়েছিল স্থিতিশীল পরিস্থিতি থেকে ধীরে ধীরে সুস্থতার দিকে এগোচ্ছেন প্রবীণ অভিনেতা। ডাকলে চোখ খুলছেন। তবে গতকাল অর্থাৎ রবিবার, খুব একটা আশার কথা শোনালেন না চিকিৎসকরা। আভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের জন্য তাঁর শরীরে অস্বাভাবিকহারে হিমোগ্লোবিন ও প্লেটলেটের ঘাটতি হচ্ছে। আর ঠিক এই সমস্যাটিই চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে চিকিৎসকদের কপালে।
প্রসঙ্গত, বর্ষীয়ান অভিনেতার রক্তের চাহিদার কথা মাথায় রেখে সম্প্রতি ফোরামের সদস্যদের কাছ থেকে A+ রক্তদাতার সাহায্য প্রার্থনা করা হয়েছে। সূত্রের খবর, রবিবার ৪ ইউনিট রক্তও দেওয়া হয়েছে তাঁকে। তবে অবস্থার কোনওরকম উন্নতি হয়নি বলেই জানিয়েছেন ডাক্তাররা। তাঁদের কথায়, প্রবীণ অভিনেতার পরিস্থিতি খুব একটা আশাপ্রদ নয়। তাই এমতাবস্থায় কোনও 'মিরাকেল'-এর অপেক্ষাতেই রয়েছেন চিকিৎসকরা।
রবিবার রাতের বুলেটিনে ডাঃ অরিন্দম কর জানিয়েছেন, "তাঁর শরীরের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ বন্ধ করা যায়নি। গত কয়েকদিন ধরেই এই বিষয়টি চিন্তায় রাখছিল তাঁদের। রবিবারও তা নিয়ন্ত্রণে না আসার ফলে অশীতিপর অভিনেতার হিমোগ্লোবিন এক ধাক্কায় অনেকটা নেমে যায়। পাশাপাশি কমে যায় প্লেটলেটসও। পরিস্থিতি সামাল দিতে এদিন ৪ ইউনিট রক্তও দিতে হয় সৌমিত্রকে। সিটি অ্যাঞ্জিওগ্রাফিতে রক্তক্ষরণের উৎসস্থল চিহ্নিত করে তা বন্ধের চেষ্টা করা হয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ক্রমাগত চেষ্টা সত্ত্বেও তাঁর কোভিড রিলেটেড এনসেফালোপ্যাথি এবং স্নায়বিক অবস্থার বিশেষ উন্নতি না হওয়ায় সেভাবে আচ্ছন্নভাব কাটেনি।"
"প্রতিদিনই একটু একটু করে আশা কমছে। সব জটিলতার সঙ্গে লড়াই করেও আমরা অনেকটাই ঠিক করার চেষ্টা করছি", বলে মত চিকিৎসকদের। গত ৬ অক্টোবর করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। সেদিন থেকেই তাঁর আরোগ্য কামনায় সারা বাংলা তথা গোটা দেশ। তাঁদের এই প্রার্থনার জোর যে ফেলুদাকে এই পরিস্থিতি থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসবেই, আশাবাদী সৌমিত্র-অনুরাগীরা।