বুধবার সকাল থেকে ত্রাহি ত্রাহি রব টিনসেল টাউনে। এদিন হঠাৎই আয়কর হানা দেয় অনুরাগ কাশ্যপ আর তাপসী পান্নুর বাড়িতে।কেন্দ্রীয় ওই সংস্থা অভিযান চালায় পরিচালক বিকাশ বেহেল এবং প্রযোজনা সংস্থা ফ্যান্টম ফিল্মসের অফিসে। জানা গিয়েছে, কাশ্যপের প্রযোজনা সংস্থা ফ্যান্টম ফিল্মস সংক্রান্ত আর্থিক মামলায় এই হানাদারি। মুম্বাই ও পুনে মিলিয়ে মোট ২০টি জায়গায় এই তল্লাশি চলেছে। এই তারকাদের বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালানোর পাশাপাশি একটি ট্যালেন্ট ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ আর ফ্যান্টম ফিল্মসের সহ-কর্ণধার মধু মন্টেনার বাড়িতেও তল্লাশি চালায় আয়কর বিভাগ।
এদিকে, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন অভিনেত্রী পান্নু। ধর্ষিতাকে বিয়ে করলে গ্রেফতারি থেকে বাঁচতে পারবেন এক সরকারি কর্মী। সম্প্রতি আগাম জামিন মামলায় অভিযুক্তকে এমন শর্ত দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই শর্তের সমালোচনায় সরব হয়েছেন তাপসী পান্নু এবং সোনা মহাপাত্র। এদিন ‘শাবানা’ ট্যুইটে প্রশ্ন করেন, ‘সেই নিগৃহীতাকে কেউ প্রশ্ন করেছে, সে তাঁর ধর্ষককে বিয়ে করবে কিনা? এটা কোনও প্রশ্ন হল? এটা একটা অপরাধের সমাধান?’ পান্নুর সুরেই সুর মেলাতে দেখা গিয়েছে গায়িকা সোনা মহাপাত্রকে।
তিনি বলেন, ‘যথেষ্ট বিরক্তিকর একটা পর্যবেক্ষণ। বলিউড সিনেমায় দেখা গিয়েছে একজন ধর্ষক নিগৃহীতাকে বিয়ে করছে। দেশের সুপ্রিম কোর্ট কীভাবে এই শর্ত দিতে পারে?’
এদিকে, অভিযুক্তের আগাম জামিনের মামলায় আপনি কি ওকে বিয়ে করতে ইচ্ছুক? ধর্ষণে অভিযুক্তকে এই প্রশ্ন করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ধর্ষণে অভিযুক্ত হিসেবে জেল হলে তাঁর চাকরি যাবে। তাই গ্রেফতারি এড়াতে তাঁকে আগাম জামিন দেওয়া হোক। এই আবেদনে শীর্ষ আদালতে দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিযুক্ত। জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্র বিদ্যুৎ বণ্টন নিগমে কর্মরত ওই অভিযুক্ত। শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদের বেঞ্চ তাঁকে প্রশ্ন করে, ‘আপনি কি মেয়েটিকে বিয়ে করবেন? তাহলে আমরা আপনার জামিন নিয়ে ভাবতে পারি। না করলে জেলেই যেতে হবে আপনাকে। যদিও আমরা আপনাকে জোর করছি না।‘
এই মামলায় ওপর দুই বিচারপতি ছিলেন এএস বোপান্না এবং ভি রামসুব্রহ্মনিয়াম। অভিযুক্ত তরফের আইনজীবী আদালতকে জানান, তাঁর মক্কেল বিবাহিত। যদিও সেই ঘটনার পর তাঁর মক্কেল চেয়েছিল মেয়েটিকে বিয়ে করতে। কিন্তু মেয়েটি রাজি ছিলেন না। তাই তাঁর মক্কেল বিয়ে করে নিয়েছে। তাই এখন সরকারি কর্মী হিসেবে তাঁর মক্কেল জেলে গেলে চাকরি খোয়াবেন। অভিযুক্তের আইনজীবীর তরফে এই সওয়াল-জবাবের পর সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, চাকরি খোয়ানোর বিষয়টা কুকর্ম করার আগে ভাবা উচিত ছিল। আপনার মক্কেল জানতেন তিনি সরকারি কর্মী।
যদিও অভিযুক্ত তরফের আইনজীবী দাবি করেন, ‘তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে এখনও চার্জ গঠন হয়নি।‘ সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ‘ স্থানীয় কোর্টে সাধারণ জামিনের জন্য আবেদন করুন। আমরা গ্রেফতারিতে স্থগিতাদেশ দিচ্ছি।‘ এই বলে অভিযুক্তের এক মাসের জন্য আগাম জামিন মঞ্জুর করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এর আগে ৫ ফেব্রুয়ারি বম্বে হাইকোর্ট তাঁর আগাম জামিন খারিজ করে। জানুয়ারি মাসে স্থানীয় আদলত অভিযুক্তকে এই রক্ষাকবচ দিয়েছিল। হাইকোর্টের সেই রায়ের বিরধিতা করেই সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিযুক্ত।