Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

গাঁজাখুরি! ট্র্যাপ? রুচিশীল বাঙালিকে ম্যাজিক আর ট্র্যাজিকের জালে মুড়লেন 'বাংলা'খেকো দীপক...

ধুতি-পাঞ্জাবি ছেড়ে লং কোট আর বন্দুক, আবিরের নতুন গোয়েন্দা রহস্য জমল?

author-image
Anurupa Chakraborty
New Update
Abir Chatterjee's movie Shri swapan Kumarer badami haynar kobole review

আবিরের নতুন গোয়েন্দা-রূপ, মন কাড়বে তো?

গোয়েন্দা কিনা রেকর্ড ব্রেক করলেন চুমুর! সকাল বেলা দাঁত ব্রাশ না করেই ঠোঁটে ঠোঁট, দীপক আর তাসির প্রেম জমে ক্ষীর এক্কেবারে। আর পাঁচটা গল্পের মতো চিরাচরিত গোয়েন্দা গল্প না হলেও দীপক চট্টোপাধ্যায় যে লজিকের মাথা খেয়েও বাঙালিকে ভাবতে বাধ্য করতে পারেন সেটা কিন্তু বলতেই হয়।

Advertisment

দীপক চট্টোপাধ্যায় অর্থাৎ সেই বিখ্যাত গোয়েন্দা, যিনি একাধারে বিজ্ঞান থেকে রবীন্দ্রসঙ্গীত সবেতেই বিশ্বাসী। যার মনে হয়, বাঙালি কেবল সেই সব গল্পই পড়ে যাতে রবিঠাকুর আর ইতিহাস জড়িয়ে আছে। 'শ্রী স্বপন কুমারের বাদামী হায়নার কবলে' যারা একবার দেখবেন তাদের অন্তত এটাই মনে হবে, চাইলে গল্পের চরিত্রও লেখক হয়ে উঠতে পারে। সে যখন নিজের গল্প নিজেই লেখে তখন অভিব্যক্তি থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলার ধরণ অনেকটাই আলাদা হয়।

ছবির শুরু বোম্ব ব্লাস্ট দিয়ে, এবার কেন সেই ব্লাস্ট, তাঁর অতীতে কী? আসলে বাদামী হায়না কে? সেসব তো পরের গল্প। তবে, পরিচালক দেবালয় ভট্টাচার্য ( Debalay Bhattacharya ) যে আব্বাস-মস্তান স্টাইলে মানুষকে ধাঁধায় বেঁধে রাখতে পারেন এটা বলাই বাহুল্য। একেই স্বপণকুমারের লজিক না খোঁজা গল্প। দীপকের দু হাতে বন্দুক তথা এক হাতে টর্চ, ছয় লোডের গুলির বন্দুকে নাকি ৩২টা গুলি! গাঁজাখুরি গল্পের লিমিট আছে তো বস? তাও, রহস্য - রোমাঞ্চ এবং গোয়েন্দা যারা পড়তে ভালবাসেন তাদের ছকভাঙা এই গোলকধাঁধায় বেশ ভাল লাগবে।

শুরু থেকে শেষ, নাক উসখুসে রহস্য হোক কিংবা দীপক চট্টোপাধ্যায় এবং স্বপনকুমার দ্বন্দ্ব - আবির চট্টোপাধ্যায় ( Abir Chatterjee ) ও পরান বন্দোপাধ্যায় ( Paran Banerjee ) নিজেদের নিজেদের চরিত্রে বেশ মার্জিত এবং মজাদার। গোয়েন্দা হিসেবে আবির বরাবরই ফুল মার্কস পেয়ে এসেছেন। বাংলা খাওয়া এক ডিটেকটিভ যাকে বাঙালি ভুলতে বসেছিল, তাঁর আক্ষেপ থেকে শুরু করে নিজেকে মসিহা তৈরি করার নানা কৌশল - আবির ধুতি পাঞ্জাবি ছেড়ে লং কোট আর জ্যাকেটেও বেশ দুর্দান্ত। গোয়েন্দা গল্পে হিউমার খুব একটা পাওয়া না গেলেও এই ছবির ক্ষেত্রে সেটাই ইউএসপি। শুধু এটুকুই, রুচিশীল বাঙালির লজিক না খুঁজলেই চলবে। স্বপনকুমার বাজপাখি, কালনাগিনীর মত বিরোধী বানানোর পর যখন বহুবছর পর বাদামী হায়নার খোঁজ পেলেন তখন আর রক্ষে নেই। ফের একবার দীপককে বৃষ্টিস্নাত কলকাতায় হেঁটে দেখার সুযোগ না করে দিলেই নয়। তাই, তো নিজের মতো কলম ধরলেন তিনি। আর এখানেই সিনেমার আসল কাহিনী। অন্যান্য চরিত্রে গৌতম হালদার, শ্রুতি দাস, লোকনাথ দে এবং প্রতীক দত্ত।

দীপক চট্টোপাধ্যায় যিনি একসময় কলকাতা শহর থেকে গ্রাম বাংলা সকলের নয়নের মণি ছিলেন, তাঁর হারিয়ে যাওয়াটা শ্রেয় না। এখন মানুষ, ভায়োলেন্স দেখেন। গোয়েন্দা গল্পে ধাঁধা, ক্লু না থাকলেই নয়। স্বপনকুমারের সঙ্গে দীপকের যে অন্তর্দ্বন্দ্ব সেটাই তো লড়াই। একটি ফিকশনাল চরিত্রের জীবন্ত হয়ে ওঠার লড়াই। লেখকের ভিত্তিতে নয়, বরং নিজের বুদ্ধিতে দীপক আবারও ফিরলেন। তাঁকে নিজের মত করে বাঁচার সুযোগ করে দিলেন স্বপনকুমার। রহস্যের উন্মোচন করতে গিয়েই বোঝালেন, সবসময় বন্দুক দিয়ে গুলি বেরোয় না বরং গোলাপও বেরোয়!

এ শহরের চিনা গলি হোক, কিংবা হলুদ নদীর ধার অথবা ইতিহাসের পাতায় হেস্টিংসের গুলিবিদ্ধ জ্যাকেট, যে বাঙালি গোল টেবিল বৈঠকে এক হাত চিবুকে আর এক হাত আরামকেদারায় রেখে কেস সলভ করতে ভালবাসেন তাদের কাছে একদম অন্যরকম অনুভূতি হবেই এই ছবি দেখলে। মৃত্যু - প্রেম, বিজ্ঞান এবং উসখুসে রহস্য...বাই দ্যা ওয়ে, কোন গোয়েন্দা রাস্তায় নামলে বৃষ্টি পড়ে বলুন তো? লজিক না! ম্যাজিকের মাঝে ট্র্যাজিক খুঁজলে বোধহয় বলা সম্ভব।

  • ছবি - শ্রী স্বপন কুমারের বাদামী হায়নার কবলে।
  • পরিচালক - দেবালয় ভট্টাচার্য
  • অভিনয়ে - আবির চট্টোপাধ্যায়, পরান বন্দোপাধ্যায়, প্রতীক দত্ত, শ্রুতি দাস, অন্যান্য।
tollywood Abir Chatterjee Entertainment News Paran Bandopadhyay
Advertisment