/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/05/shabor-2.jpg)
‘তীরন্দাজ শবর’ ফিল্ম রিভিউ
বছর চারেক বাদে আবারও শহরে গোয়েন্দা শবর দাশগুপ্ত। বহু প্রতীক্ষার পর শেষমেশ মুক্তি পেল অরিন্দম শীল পরিচালিত ‘তীরন্দাজ শবর’। কেমন হল? লিখছেন সন্দীপ্তা ভঞ্জ।
অভিনয়ে- শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, শুভ্রজিৎ দত্ত, নাইজেল আক্কারা, দেবযানী চট্টোপাধ্যায়, দেবলীনা কুমার, চন্দন সেন।
প্রযোজনা- ক্যামিলিয়া প্রোডাকশনস
ফেলুদা, ব্যোমকেশ, কাকাবাবুদের ভিড়ে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় সৃষ্ট লালবাজারের গোয়েন্দা চরিত্র শবর দাশগুপ্ত ২০১৫ সালেই অরিন্দম শীলের হাত ধরে পর্দায় আত্মপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। 'আসছে শবর', 'ঈগলের চোখ', 'আসছে আবার শবর'- তিন বছরে পরপর তিনটে হিট ছবি উপহার দেওয়ায় এবার চোখ ছিল ‘তীরন্দাজ শবর’-এর দিকে। লালবাজারের গোয়েন্দা আধিকারিক শবর ওরফে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষুরধার বুদ্ধি ও কেতাদুরস্থ সংলাপ এবারও দর্শকদের নিরাশ করেনি। তবে উল্লেখ্য, এবার গল্পের ভিলেনকে ঠান্ডা করতে শবরকে অ্যাকশনেও নামতে হয়েছে। 'সব্যসাচী'র মতোই একহাতে রিভলবার ধরে আরেক হাতে মারপিট চালাতে হয়েছে। বলাই বাহুল্য, পরিচালক এবার গোয়েন্দা শবর দাশগুপ্তকে অ্যাকশন হিরো হিসেবেও উপস্থাপিত করেছেন। শাশ্বতকে এমন ভূমিকায় পাওয়া দর্শকদের ক্ষেত্রে উপরিপাওনাই বটে!
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/05/saswata-2.jpg)
ঝমঝমে বৃষ্টির রাত। সিঁথির মোড় থেকে তিন অনাহূত যাত্রী ও এক ট্যাক্সি ড্রাইভারের যাত্রা দিয়ে গল্পের শুরু। মনোক্রোম্যাটিক দৃশ্য। সাদাকালো এবং রঙিন দৃশ্যে পরিচালক বেজায় নিপুণতার সঙ্গে খেলেছেন এক্ষেত্রে। সেই রাতেই ঘটে যায় এক খুন। আর সেই খুনের রহস্যের কিনারা করতে গিয়েই ঝুলি থেকে বেরিয়ে পড়ে বিড়াল। কীভাবে? সেই টুইস্ট এখানে খোলসা না করাই ভাল। তবে উল্লেখ্য, মধ্যবয়সি ব্যবসায়ীর কারবার। তাঁর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক। স্ত্রীর পরকীয়া। 'তীরন্দাজ শবর’-এর পরতে পরতে রহস্য রেখেছেন অরিন্দম শীল। গল্পের বুনোটও খাসা। রহস্য-রোমাঞ্চ জিইয়ে রেখে যেভাবে চিত্রনাট্য সাজানো হয়েছে, তার জন্য বাহবা দিতে হয় পদ্মনাভ দাশগুপ্ত ও পরিচালক অরিন্দমকে। তবে বেশ কিছু দৃশ্যায়ণে আরেকটু গভীরতার প্রয়োজন ছিল। বিশেষত, Chasing scene গুলোতে।
<আরও পড়ুন: অবাক লাগে মানুষ সুইসাইডের খবরেও হা-হা রিয়েক্ট করে: শ্রীলেখা>
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/05/nigel.jpg)
গোয়েন্দা আধিকারিক 'শবর' শাশ্বত ও তাঁর সহকারী 'নন্দ' শুভ্রজিৎ দত্তর সমীকরণ গত তিনটে ছবিতেই দর্শকদের মন কেড়েছে। এবারও জুটির কমিক সেন্সে দর্শকরা হেসে গড়িয়েছেন। তবে, 'তীরন্দাজ শবর’-এর সেরা প্রাপ্তি 'সুমিত' নাইজেল আক্কারা। নিঃসন্দেহে। তাঁকে নতুন করে আবিষ্কার করলেন অরিন্দম শীল। শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের সমান্তরালে যেভাবে অভিনয় করেছেন, তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। কখনও বস্তির রবিনহুড, কখনও বা পুরনো প্রেমিকের মরণ-বাঁচন সমস্যায় আত্মবলিদান দেওয়া, আবার কখনও বা গোয়েন্দাদের ওপরও গোয়েন্দাগিরি করা… 'তীরন্দাজ শবর’-এ অভিনয়ে বাজিমাত নাইজেলের।
দেবলীনা কুমার, দেবযানী চট্টোপাধ্যায়রা অল্প পরিসরে হলেও যথাযথ অভিনয় করেছেন। তবে উল্লেখ্য পরিচালক অরিন্দম নিজেও এই সিনেমার আরেক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। গল্পের 'সারপ্রাইজ এলিমেন্ট' বললেও অত্যুক্তি হয় না। কোনও দৃশ্যেই তাঁর অভিনয় এতটুকু বাড়াবাড়ি বলে মনে হয়নি। আর চন্দন সেনও অনবদ্য।
বিক্রম ঘোষের মিউজিকও উল্লেখ্য। রহস্য-রোমাঞ্চ গল্পের পরতে পরতে যথাযথ মিউজিকে টেনশন ক্রিয়েট করতে ওস্তাদ তিনি। তাছাড়া, অরিন্দম শীলের সিনেমা মানেই বিক্রম ঘোষের মিউজিক। তীরন্দাজ শবর-এও তার অন্যথা হয়নি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন