প্রথম সিজনেই নজর কেড়েছিল 'চরিত্রহীন'। বোঝা গিয়েছিল, বাংলার দর্শক 'এসব' নেয়না, এই প্রচলিত ধারণাটা কতটা ভুল। সেই কারণেই তো পরবর্তী সিজন এসেছে এই সিরিজের। শুরুতেই প্রংশসার পুল বাঁধলে অবশ্য অনুচিত হবে। দেবলায় ভট্টাচার্যের চরিত্রহীনের প্রথম সিরিজ যে শরত্ৎচন্দ্রের উপন্যাস থেকে অনুপ্রাণিত তার আভাস পাওয়া গিয়েছিল।
কিন্তু শরত্ৎচন্দ্র যখন উপন্যাসটি লিখেছেন আর দেবালয় সে সময়ে তৈরি করছে তার মধ্যে যোজন ফারাক। কিন্তু কোন এক আশ্চর্য কেতায় সব মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। করুণাময়ী, সতীশরা সময়ের সঙ্গে পরিবর্তনশীল বলতে যতটুকু বোঝায় ঠিক ততটুকুই। যৌনতার দীপ্তিতে সপ্রতিভ। কিরণময়ী স্বামীকে হারায়, সতীশ প্রেমিকার কাছে ফিরে যায়, সাবিত্রী মেয়েকে নিয়ে পাড়ি দেয় দূরে কোথাও। আর এখান থেকেই সিজন টুয়ের শুরু।
আরও পড়ুন, আর একটি খুনের গল্প নয়, ‘৭ নম্বর সনাতন সান্যাল’ একটা আয়না
কিন্তু এখানে তো আর শরত্ৎচন্দ্র নেই, তাহলে! এখানেই নিজের বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন দেবালয়। চরিত্রদের সাজিয়েছেন সিম্বলিজম দিয়েই। কিরণময়ী একটি রিহ্যাবের নার্স। সেখানে মনোরোগী সাবিত্রীর মেয়ে, কোমায় সতীশ আর তারই জামাইবাবু মানসিক চিকিত্ৎসাকেন্দ্রের ডাক্তার। এই সিজনেও প্রথম থেকেই রয়েছে যৌন উদ্দীপনা।
পরকীয়া, সমকামীতা, যৌন উদাসীনতা সবকিছু। রিহ্যাবে গুণ্ডাচক্র, ডাক্তারের নিজের প্রতি সংযমহীনতা গতি দেয় সিজনকে। তবে প্রত্যেকটা সিরিজের নিজস্ব ধরন রয়েছে তাকে অকারণ টানলে বাঁধন আলগা হয় বৈকি। 'চরিত্রহীন টু' সেই আলগা বাঁধন। গাঢ় আলোর বিন্যাস, অপটু অভিনয় একসময়ে ধৈর্যচ্যুতি ঘটাতে পারে আপনার।
আরও পড়ুন, সুপার থার্টি রিভিউ: ছাঁচ ভেঙে বেরোতে পারলেন কই হৃতিক?
তবে ভাল বললে বলতে হয়, সেট, লোকেশন, চিত্রনাট্যে চরিত্র বিন্যাস, তবে খটকা মদ, সিগারেট, গাঁজার থেকে কি যৌনতার লেলিহান শিখা প্রজ্জ্বলিত হয়? হয়তো না! সমান না হলেই সবটা বিষম নয়। অভিনয়ের প্রেক্ষিতে বলতে গেলে সৌরভ চক্রবর্তী ভাল, তবে তাঁর ওই বিদঘুটে নাকের আওয়াজ বাদে। মুমতাজ তার চরিত্রে সাবলীল। অভিনয় চোখে লাগে সৌরভ দাসের। আর নয়না গঙ্গোপাধ্যায় ঠিকঠাক। এই সিরিজের সিজন টু যে দেখতেই হবে এমনটা নয়, তবে হাতে সময় থাকলে দেখতে পারেন। আর ওয়েব সিরিজের নির্মাতারা জানবেন যৌনতা ও নেশা দিয়ে এই প্রজন্মকে কাবু করা সম্ভব নয়!