Tekka Film Review: 'আর সেই গরীব যদি মুসলিম হয়...', ইকলাখের চরিত্রে দেব, তাঁর এই একটা বাক্যই যেন লক্ষ লক্ষ জনগণের কাছে প্রশ্ন রাখল। শেষ কিছুদিন অভিনেতা নিজে হলে দাঁড়িয়ে টিকিট বিক্রি করেছেন। প্রশ্ন উঠছিল এমনই, সিনেমা ভাল হলে তাঁর প্রোমোশনের জন্য এত কিছু কেন?
Advertisment
রিলিজ করে গিয়েছে 'টেক্কা'। আর দেবের এবছরের প্রথম ছবি কেমন হল, সেই নিয়েই জানাচ্ছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা। প্রথমেই, যেই বিষয় উল্লেখ না করলেই নয়, স্ক্রিন প্রেজেন্স। একজন সাফাইকর্মী হিসেবে দেব হোক, কিংবা পুলিশ অফিসার মায়া হিসেবে রুক্মিণী মৈত্র, কিংবা ইরা হিসেবে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। অথবা আরিয়ান এবং সৃজা, কিংবা দুটি বাচ্চা, গুড্ডু এবং অবন্তিকা - দাবার বোর্ডের নৌকা কিংবা বোড়ের মতোই প্রত্যেকে বেশ গুরুত্বপুর্ন।
Rukmini as Maya: মায়ার ভূমিকায় রুক্মিণী
ছবির শুরুতেই দেখা যায়, সাফাইকর্মী ইকলাখের সঙ্গে বাক বিতন্ডা এবং বচসা হয় কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মচারীদের। ফলে, চাকরি খুইয়ে বেকারত্বের মুখ দেখে সে। বাড়িতে পড়ুয়া সন্তান, তাঁর খরচ জোগাতে নাজেহাল ইকলাখ অপহরণ করে স্বস্তিকার মেয়েকে। এরপরই শুরু হয় গল্প। গোটা সিনেমা জুড়ে দেব নিজের পরিণত অভিনয় যেমন দেখিয়েছেন, তেমন খুব নিখুঁত সুতোয় গল্প বেঁধেছেন পরিচালক সাহেব নিজেও।
Advertisment
শুরুতে ইরা এবং ইকলাখের সম্পর্ক যেন একইরকম মনে হবে। দুই অসহায় বাবা মা, যারা নিজেদের সন্তানের জন্য লড়াই করছেন। দুজনেই নিজেদের বিচারে ঠিক। তবে পরিচালককে পিঠ চাপড়ে দিতেই হয়, কারণ জগৎ-সিস্টেমের অদেখা এবং চাপা পড়ে যাওয়া বহুদিক যেভাবে তুলে ধরলেন। ধর্মের লড়াই হোক কিংবা আমরা-ওরা, এই দুনিয়া শুধু উঁচুদের, নিচের তোলার মানুষদের শোনার কেউ নেই? প্রতিদিনের জীবনের নানা অবক্ষয় তুলে ধরেছেন সৃজিত। বাকি, টুইস্ট? ক্লাইম্যাক্স বলছে, গান পয়েন্টে বাজিমাত আর পর্দা ফেলে খেলা ঘোরানোর স্টাইলে দেব-সৃজিত আবারও অনন্য। 'সময়' - সে বড়ই বাফাদার, একথা আবারও প্রমাণ হল এই ছবিতে।
Swastika as Ira: ইরার ভূমিকায় স্বস্তিকা
আসা যাক অভিনয়ের কথায়, দেব কীভাবে এই ছবিতে একজন সাফাইকর্মী থেকে 'দ্যা হিরো' হয়ে উঠলেন, সেটা না বললেই নয়। অভিনেতা দেবকে এই ছবির নানা কিনারায় পাওয়া যাবে। নিজের চরিত্রের মাধ্যমে সমাজের কাছে মোক্ষম কিছু প্রশ্ন রেখেছেন তিনি। রুক্মিণী মৈত্র, নিজেকে নিয়ে যে এক্সপেরিমেন্ট করছেন সেটাও একদম পরিষ্কার। স্ট্রং চরিত্রে তিনি একদম যথাযথ। ধৈর্য এবং অধ্যাবসায় - এই শব্দগুলো মায়ার সঙ্গে একদম পারফেক্টলি ফিট করে। অন্যদিকে রয়েছেন স্বস্তিকা। ব্যক্তিবিশেষে একজন মা - ই বোধহয় স্ক্রিনে এতটা দায়িত্ব নিতে পারেন। উল্লেখ্য, পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় যে চরিত্রে রয়েছেন, গায়ে জ্বালা দিতে পারে। কিন্তু অভিনয়ের জায়গায় তিনি অন পয়েন্ট।
হেট টু স্পয়ল! সৃজিত তাঁর প্রতি ছবির মত এই ছবিতেও নিজে রয়েছেন। তাঁর পাশাপাশি, শহর কলকাতার প্রেক্ষাপটে তৈরি এই ছবিতে নজর কাড়বে সিনেমাটোগ্রাফি। কিন্তু, কে কাকে কত দানে, আড়াই চালে না কোণাকুণি টেক্কা দিল, প্রথম থেকেই উত্তর খুঁজবেন দর্শক।