Advertisment

Movie Review: ঈশ্বর বনাম মানুষের যুদ্ধে জিতল কে? কেমন হল সৃজিতের 'দশম অবতার'

প্রবীর-পোদ্দার ব্রোম্যান্স জাঁকিয়ে বসল কি?

author-image
Anurupa Chakraborty
New Update
Dawsham Abotar

প্রবীর-পোদ্দার ব্রোম্যান্স জাঁকিয়ে বসল

আচ্ছা, শ্রী বিষ্ণুর কোন অবতার কোন কোন যুগে দুষ্টের দমন করতে এই ধরাধামে অবতীর্ণ হয়েছিলেন, সেটি মুখস্থ বলা ঠিক কতজনের পক্ষে সম্ভব? বর্তমান সময় দাঁড়িয়ে হিন্দু পুরাণের ওপর আগ্রহ মানুষের খুবই কম। বিষ্ণু পুরাণ কী বলে, নাকি শিব পুরাণে আসল সত্যি? বাবা মায়ের কাছে এই গল্প কতটা ফ্যাসিনেশন দিতে পারে, সেটা বোধহয় অক্ষরে অক্ষরে বোঝা গিয়েছে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের নতুন ছবি দশম অবতারে।

Advertisment

পরিচালক গল্পের সঙ্গে খেলতে ভালবাসেন, শুরু থেকে মধ্যভাগ চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন বেশ সৃজিত মুখোপাধ্যায় স্টাইলেই। রহস্য এবং রহস্যের উন্মোচনের একটা বিরাট ধাপ। তাঁর সঙ্গে তো প্রেম রয়েছেই। গল্পের সঙ্গে রয়েছে বেশ কিছু টুইস্ট। যীশু সেনগুপ্ত কে, কিই বা তাঁর রূপ, এবং আসল উদ্দেশ্য কোথায়, সেটা তো বোঝা যাবে সিনেমার দ্বিতীয় ধাপে। মানুষের মধ্যেই যে ভগবান বাস করেন সেটির যুক্তিও রয়েছে এই ছবিতে। তবে, একই অঙ্গে যীশুর যে ভিন্ন কান্ড তথা খুনের মারাত্মক প্ল্যান ভাবা যায়, সেটা কিন্তু স্পষ্ট। চারটি মুখ্য চরিত্র, তাঁর সঙ্গে নানা গোলকধাঁধা। একের পর এক কলকাতা শহরে খুন, এবং তাঁর সঙ্গে সোজা সাপটা যোগাযোগ রয়েছে ভগবান শ্রী বিষ্ণুর…

প্রথম থেকেই টানটান উত্তেজনা। একের পর এক এন্ট্রি নিচ্ছেন বাংলা সিনেমার বিগশটরা। প্রবীর রায়চৌধুরীর পর্দায় ফেরা, যেন চারবছরে একটা লিপ ইয়ারের মত। যদিও, এক্ষেত্রে ব্যবধান ১২ বছরের। কিন্তু একথা বলতেই হয়, যে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় নিজেকে আজও একইভাবে স্ক্রিনে যেভাবে ধরে রেখেছিলেন, এটা তাঁকে দিয়েই সম্ভব। সিগারেট হোক অথবা মদের গ্লাস…সিরিয়াল কিলিং রহস্য উন্মোচনের বাদশা প্রবীর বাবু, একথার সঙ্গে সঙ্গে বাস্তবের নানা ঘটনার মধ্যে যে চুলচেড়া ফাঁক রয়েছে সেটিও কিন্তু বারবার বুঝিয়েছেন পরিচালক।

আরও পড়ুন সাধের চরিত্র আর নয়, একঘেয়েমি থেকে বিদায় নিচ্ছেন অনির্বাণ

আসা যাক, সিনেমার প্রেম সংক্রান্ত বিষয়ে। অনির্বাণ অর্থাৎ ইন্সপেক্টর পোদ্দার ও মৈত্রেয়ী ঘটক অর্থাৎ জয়া এহসানের মধ্যে যে প্রেম সেটি তো আগেই জানা গিয়েছিল। তবে, পোদ্দার এবং প্রবীরের মধ্যে যে একান্ত ভালবাসা সেটি কিন্তু নজর এড়ানো যায় না। ছবির ঠিক প্রথম ভাগেই আসল অবতারকে ধরতে উঠে পড়ে লাগেন দুই ইন্সপেক্টর….কিন্তু, সেটি প্ল্যানমাফিক কতটা সম্ভব হচ্ছে সেটার জানান দেবেন জয়া এহসান অর্থাৎ মৈত্রেয়ী।

ছবির সঙ্গে সঙ্গে এক গভীর বার্তা দিয়েছেন পরিচালক, মানুষের মন এবং পুরাণের এক অদ্ভুত কাল্পনিক যোগপথের ব্যাখ্যা করেছেন। অ্যাকশন সিকোয়েন্সের সঙ্গেই রয়েছে বাঙালির ইমোশনকে আটকে রাখার যোগ। কাঁচা বাংলায় খিস্তি হোক অথবা কিছু ঘনিষ্ঠ দৃশ্য, অপব্যবহার কিন্তু করেননি পরিচালক। যদিও, ছবির দ্বিতীয় অংশের শুরুর দিকে গল্প খানিকটা ফুলকো থেকে নেতানো লুচির আকার নিয়েছিল, তবে যিশু এবং প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় তা সামলে নিয়েছেন।

বিষ্ণু তিনি তো রক্ষা করেন, তাঁর হাতেই জগতের সৃষ্টি এবং দুষ্টের দমন। পরপর সব সিরিয়াল কিলিং তাঁর সঙ্গেই পুরাণের এক বিরাট যোগ, স্ক্রিনে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় যতক্ষণ থাকবেন, ডায়লগ থেকে অভিব্যক্তি - এক্ষেত্রে শোস্টপার তিনিই। রইল বাকি তিন মূর্তি, তাঁদের সকলের মধ্যে যিশুর 'নানা অবতারে' স্ক্রিন অ্যাপিয়ারেন্স মুগ্ধ করবেই।

ছবি : দশম অবতার

পরিচালক : সৃজিত মুখোপাধ্যায়

অভিনয়ে: প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, যিশু সেনগুপ্ত, জয়া এহসান ও অন্যান্য

Movie Review prosenjit chatterjee tollywood Srijit Mukherji Jaya Ahsan anirban bhattacharya Entertainment News
Advertisment