/indian-express-bangla/media/media_files/2025/03/24/XcadHuUQXZHBt1SmFil7.jpg)
যা বললেন রিয়া...
অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তী আবারও জানালেন, ২০২০ সালের সুশান্ত সিং রাজপুত মামলার পর তাঁর জীবন একেবারেই পাল্টে যায়। পরিবার ও মানসিক যাত্রা ভয়ঙ্কর জায়গায় গিয়ে দাঁড়ায়। সম্প্রতি এনডিটিভির এক অনুষ্ঠানে তিনি খোলাখুলি বললেন, সিবিআইয়ের ক্লিনচিট পাওয়ার পরও তাঁর জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি চিরতরে বদলে গেছে।
রিয়া বলেন, "জেলে যাওয়ার পর তুমি সকলের জীবনে একজন ভিন্ন মানুষ। জীবনের প্রতি তোমার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যায়। মানুষ কী ভাববে, এসব ভাবনা সরে যায় মাথা থেকে, কারণ এতে শুধু বিষণ্ণতা তৈরি হয়। জনসাধারণের ধারণা থেকে নিজেকে আলাদা করতে হয়। দ্বিতীয়ত, তুমি খাবারকে অনেক বেশি মূল্য দিতে শুরু করো। বাড়ির ভাতডাল, পিৎজার সমান মনে হয়।"
২৮ দিনের জেল-অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি জানান, "জেলে গিয়ে বুঝেছি তোমার যা কিছু ছিল, সেটা কতটা মূল্যবান। বাবা-মাকে হালকাভাবে নেওয়া যায় না। বাইরে তারা প্রতিদিন খোঁজ নিত, খাবার খেয়েছ কিনা। ভেতরে আমার কথা শোনার কেউ ছিল না। আমি আমার পরিবারকেই সবচেয়ে বেশি মিস করেছি।"
জামিনের দিনও তিনি এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। তখন তিনি সকলের চক্ষুশূল। তাঁর কথায়, "মানুষ আমাকে বলেছিল নাচতে। আমি নাগিন নাচ করেছিলাম। ভেবেছিলাম হয়তো আর কখনও তাদের সঙ্গে দেখা হবে না। যদি তাদের এক মুহূর্তের সুখ দিতে পারি, তবে কেন নয়? বিচারাধীন কারাগারে থাকা অনেক মহিলাই নির্দোষ, কিন্তু ভীষণ আশাহীন। তাদের সঙ্গে একাত্ম হতে পেরেছিলাম।"
জেলের দিনলিপি সম্পর্কেও রিয়া জানান,"আমার ডায়েরির প্রথম লাইন ছিল-‘জেলের ভেতরে থাকা মানুষ বাইরের মানুষের চেয়ে ভালো।’ ভেতরে কোনও সমাজ বা নিয়ম নেই। সবাই পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। এমনকি একটা সিঙ্গারাও তাদের কাছে বিলিয়ন ডলারের চেকের মতো মূল্যবান।"
সিবিআইয়ের ক্লিনচিট প্রসঙ্গে আবেগপ্রবণ হয়ে তিনি বলেন,"সেদিন আমার বাড়ির সবাই কেঁদেছিল। আমি এমনিও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ছিলাম। তাই, ভাইকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। বাবা-মায়ের দিকে তাকিয়ে বুঝলাম, আমরা চিরতরে বদলে গেছি। আমরা আর আগের মতো নির্ভার পরিবার নই। সেই মুহূর্ত আমাদের স্থায়ীভাবে বদলে দিয়েছে।"
তবে স্বস্তির সুর তাঁর জীবনে ছিল না। অভিনেত্রী বলেন, "এতকিছুর পরে খুশি ছিল না। কারণ জানতাম আমার খুব কাছের মানুষ চিরতরে চলে গেছে। এটা আর বদলানো যাবে না। তবে আমার বাবা-মায়ের জন্য স্বস্তি পেয়েছিলাম। তারা সমাজে বাস করেন, প্রতিদিন মানুষের মুখোমুখি হন। এখন অন্তত কিছুটা স্বাধীনভাবে শ্বাস নিতে পারবেন।"