Ritabhari Chakraborty: ছ'সেকেণ্ডের রুদ্ধশ্বাস একটা মুহূর্ত। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটে আহমেদাবাদের বিমানবন্দরের ২৩ নম্বর রানওয়ে থেকে উড়েছিল বিমানটি। গন্তব্যস্থল ছিল লন্ডনের অদূরে গ্যাটউইক বিমানবন্দর। ২০০ জনের বেশি যাত্রী নিয়ে উড়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ান এই বিমানটি। উড়ানের ঠিক পাঁচ মিনিটের মধ্যেই আহমেদাবাদের মেঘানিনগরের বিজে মেডিকেল কলেজের ইউজি হোস্টেলের মেসের উপর ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান। ভয়াবহ এই বিমান দুর্ঘটনায় স্তম্ভিত কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী। এই ঘটনার সময় একইসঙ্গে উড়েছে অনেক বিমান। সেই রকমই একটি বিমানে ছিলেন বাঙালি অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী। সেটিও আবার এয়ার ইন্ডিয়ারই বিমান। কলকাতা থেকে মুম্বই যাচ্ছিলেন। গন্তব্যে গিয়ে একটি ভিডিওবার্তায় মনের বেশ কিছু কথা শেয়ার করলেন পর্দার 'ওগো বধূ সুন্দরী'।
এই বিমান দুর্ঘটনা ঋতাভরীর মনে গভীর প্রভাব ফেলেছে। জীবন কতটা অনিশ্চিত সেটা যেন আরও একবার উপলব্ধি করলেন অভিনেত্রী। কয়েক মিনিটের ভিডিওবার্তায় ঋতাভরী মনের কথা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিয়ে বললেন, 'জীবনটা এত ছোট এতটাই অনিশ্চিত, আহমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনাটা যেন আরও একবার সেটা বুঝিয়ে দিল। দুর্ঘটনার খবরটা যখন ছড়িয়ে পড়ে সেই সময় আমার বিমান জাস্ট টেক অফ করেছিল। আমারও এয়ার ইন্ডিয়ারই বিমান ছিল, মুম্বই আসছিল। টেক অফ করার পর আমি ভাবছিলাম যদি আমার কিছু হয়ে যায়! সেই মুহূর্তটা কেমন হবে যখন চোখের সামনে সমস্ত কিছু ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। দেখতে পাচ্ছ যে তুমি শেষ হয়ে যাচ্ছ। জানো যে আর কয়েক সেকেণ্ড। যে ওই মুহূর্তে নেই সে বাদে হয়ত এটা কেউ বলতে পারবে না। শুধু অনুমান করতে পারে।'
এই ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার দিন মায়ের কথা বড্ড মনে পড়ছিল তাঁর। ঋতাভরীর কথায়, 'কঠিন থেকে কঠিনতম পরিস্থিতিতে একটাই জিনিস মনে হয় যদি মাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরি আর সেখানে মরেও যাই শেষ হয়ে যাই সেটাও আমার কপালে লেখা ছিল। অন্তত, অন্তিম শ্বাসটা শান্তিতে ত্যাগ করে চলে যাব যদি মায়ের কাছে থাকতে পারি। কিন্তু, যখন মাকে টাটা বলে বিমানবন্দরে বা অন্য কোথাও যাচ্ছি তখন তো আর জানি না যে আর মায়ের কাছে ফিরব না, দেখা হবে না। যাঁরা তাঁদের আপনজন ভালবাসার মানুষদের হারিয়েছে তাঁরা তো জানত না চিরকালের মতো চলে যাচ্ছে।'
মনের উপর বিশেষ প্রভাব ফেলেছে সেই কথা স্বীকার করে অভিনেত্রীর পরামর্শ,' এই ঘটনাটা আমার মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবন এতটাই অনিশ্চিত যে আমরা যতই নিজেদের খেয়াল রাখি, স্বাস্থ্যের অসুবিধা হলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া, ইন্সিওরেন্স করে রাখা সবই করি। কিন্তু, ভাগ্যে কী আছে কেউ বলতে পারে না। মা, বাবা, বোন, বউ, প্রিয়জনদের সঙ্গে যা প্ল্যান করেছ, যা ইচ্ছে সেটা করে নাও। কেউ জানি না আমাদের কার কাছে কতটা সময় আছে।'
আরও পড়ুন একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে লাগাতার যাতায়াত, ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় কতটা শঙ্কিত দেবচন্দ্রিমা-কঙ্কনারা?