একুশের দুর্গাপুজো। করোনা আবহে তখন পুজোর গান-অ্যালবামে ভাঁটা সিনেদুনিয়ায় সিনেমায় রিলিজের মতোই। কিন্তু ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে দিয়ে চমৎকার গান গাইয়ে ফেললেন বাপ্পি লাহিড়ী। অভিনেত্রী গেয়েছেন আগেও, কিন্তু এবার একেবারে বাপ্পিদার সুর করা মাটির গানের কথায় কণ্ঠ দেবেন… ভেবে প্রথমটায় নার্ভাস হলেও পরে বেজায় উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন ঋতুপর্ণা। সেই বাপ্পিদা-ই চলে গেলেন। এ যেন ঋতুপর্ণার কাছে পারিবারিক আত্মীয়-বিয়োগ। কী বলবেন বুঝে উঠে পারছেন না। মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। নিজেক কিছুটা সামলে নিয়েই কথা বললেন।
কথা বলতে গিয়ে গলা বুজে আসছিল নায়িকার। তাও দু-চার কথায় জানালেন, "এটা বিশ্বাস করতে পারছি না যে বাপ্পি দা চলে গেল। আমাদের সঙ্গীতজগতে এই শূন্যস্থান কখনও পূরণ হবে না। উনি আমার পরিবারের সদস্যের মতো। সেই ছোটবেলা থেকে চিনি। আমার পরিবারের সঙ্গেও বাপ্পিদার খুব ভাল সম্পর্ক ছিল। আমি দাদাকে হারালাম। গতবার পুজোর সময়েই আমাকে ফোনে বলল, একটা গান আছে তোকে গাইতেই হবে। তুই চলে আয়। আমি তখন ভাবলাম বাপ্পিদার সুর করা গানে আমি কণ্ঠ দেব! বললাম পারব না আমি। উনি তো নাছোড়বান্দা। বললেন, না তোকেই করতে হবে। আমিও গেলাম। গানের কথাগুলো আমাকে বোঝালেন। ফুলমতী রেকর্ডিং হল তারপর।"
<আরও পড়ুন: ‘ইয়াদ আ রাহা হ্যায়..’ ‘ডিস্কো কিং’ বাপ্পিদার স্মৃতিচারণায় উষা-আরতী, রহমানরা>
উল্লেখ্য, অভিনেত্রী ঋতুপর্ণাকে দিয়ে গান রেকর্ডিং করিয়ে ততোধিক উচ্ছ্বসিত ছিলেন বাপ্পি লাহিড়ীও। সেই সময়ে বলেছিলেন, “এতদিন অনুরাগীরা শুধু অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে দেখেছেন, এবার গায়িকা হিসেবে তাঁর গুণের আরও একটা দিকও দেখতে পাবেন তাঁরা। কী সুন্দর গান গেয়েছে ও।”
কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী বাপ্পি লাহিড়ীর হাত ধরেই পেশাদার গায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। সেই বাপ্পিদার প্রয়াণ যেন ব্যক্তিগত শোকের মতোই ঋতুপর্ণার কাছে। কান্নাধরা গলাতেই স্মৃতিচারণায় করে বললেন, "এত স্নেহ, এত আদর-ভালবাসা বোধহয় আর কেউ দিতে পারবেন না।" 'ফুলমতী' কিন্তু বেজায় হিট-ও হয়েছিল।