Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

Buro Sadhu Review: গল্প যতটা ভালো, ছবির ভাষা ততটা পোক্ত নয়

Buro Sadhu Review: কিছু কিছু ছবি শুরুতেই অনেকটা প্রত্যাশা তৈরি করে। কিন্তু পরে ঠিক পথভ্রষ্ট না হলেও, বোধহয় একটু অন্যমনস্ক হয়ে পড়ে। তাই মাঝেমধ্যেই ফসকে যায়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Ritwick Chakraborty Chiranjeet Chakraborty starrer Buro Sadhu Bengali movie review

'বুড়ো সাধু' ছবির একটি দৃশ্যে ঋত্বিক।

Buro Sadhu Cast: ঋত্বিক চক্রবর্তী, ঈশা সাহা, চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী, দোলন রায়, দেবেশ রায়চৌধুরী, মিশমী দাস

Advertisment

Buro Sadhu Director: শৌভিক

Buro Sadhu Rating: ৩/৫

অনেক কিছুই ভাবনায় যতটা সুন্দর, উপস্থাপনে তার সৌন্দর্য কিঞ্চিৎ ম্লান হয়ে পড়ে। ঋত্বিক চক্রবর্তী, চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী, ঈশা সাহা, মিশমী দাস অভিনীত 'বুড়ো সাধু' ছবিতে খানিকটা তেমনই হয়। যে বাঙালি এখন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন ও রিভিউ পড়ে পড়ে কনটেন্ট-বেসড কাকে বলে জেনে গিয়েছেন-- তাঁরাই এই ছবির সজ্ঞানে বা অজ্ঞানে টার্গেট অডিয়েন্স। ভালো চিত্রগ্রাহক, সম্পাদক ও ভালো অভিনেতা থাকলে ছবির একটা জেল্লা আসে। এই ছবির শুরুতেই দর্শক সেই জেল্লাটা পাবেন ভরপুর।

আরও পড়ুন: হাউসফুল ৪: মস্তিষ্ক বলতে পারে, ”থামো। অনেক হয়েছে। পারছি না”

ঋত্বিকের স্বতঃস্ফূর্ততা, এই ছবির চরিত্রের জন্য তার বিশেষ লুক-- সবকিছুই যখন ভালো লাগতে শুরু করে, মনে মনে বেশ আশা তৈরি হয়, তখনই অল্প অল্প ঘোর কাটতে থাকে। ছবির যে ভাষা তৈরি হয় শুরুতে, যে কোনও কারণেই হোক, মাঝেমধ্যেই সিনেম্যাটিক ল্যাঙ্গোয়েজের সেই মান যেন টুপ টাপ পড়ে যায়। অনেকটা সাইনুসাইডাল কার্ভের মতোই ওঠানামা করতে থাকে সিনেম্যাটিক্সের মান। তাই ছবির মাঝবরাবর পৌঁছতে না পৌঁছতেই মনে হয় যেন নেশাগ্রস্থ কেন্দ্রীয় চরিত্রের মতোই এই ছবিরও মাঝেমধ্যেই পা টলছে। ক্লিশে ও স্বতন্ত্র-- এই দুয়ের মধ্যে পড়ে খানিকটা বাইপোলার ডিসঅর্ডারে যেন ভুগছে ছবির আঙ্গিক। ওইটিই আবার কেন্দ্রীয় চরিত্রেরও ক্রাইসিস।

Ritwick Chakraborty Chiranjeet Chakraborty starrer Buro Sadhu Bengali movie review ছবির মাঝবরাবর পৌঁছতে না পৌঁছতেই মনে হয় যেন কেন্দ্রীয় চরিত্রের মতোই এই ছবিরও মাঝেমধ্যেই ফসকে যাচ্ছে, পা টলছে।

অর্থাৎ ছবির ৬৫ শতাংশ জুড়ে সিনেম্যাটিক্স ও ল্যাঙ্গোয়েজ যদি এ প্লাস শ্রেণিভুক্ত হয়ে থাকে, তবে বাকি ৩৫ শতাংশ আদ্যোপান্ত বি শ্রেণিভুক্ত। সেই সব দৃশ্য ও সিকোয়েন্সগুলিকে আরও ভালো মানের ট্রিটমেন্ট দেওয়া যেত। ওই ৩৫ শতাংশই ছবিটিকে অতি উচ্চমানের হয়ে উঠতে বাধা দিয়েছে। 'বুড়ো সাধু' যা এখন, তার চেয়ে আরও অনেক বেশি উচ্চতায় পৌঁছনোর সম্ভাবনা ছিল বিপুল। কিন্তু পৌঁছলো না।

আরও পড়ুন: Rajlokhi O Srikanto Review: শরৎসাহিত্যের মায়াজাল ছিঁড়ে এ ছবি অসহিষ্ণু সময়ের কথা বলে

আর পাঁচটা বাংলা সিনেমার মতো এই ছবিতেও অসম্ভব জেন্ডার বায়াস। এমনটা নয় যে লিঙ্গ-সাম্য মাথায় রেখে পরিচালক বা চিত্রনাট্যকারকে গল্প ভাবতে হবে। কিন্তু এই ছবির কাঠামোতেই পুরুষতান্ত্রিক ছাপটা বড্ড প্রকট। ২০১৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি বাংলা ছবি, যা আধুনিকমনস্ক দর্শকের জন্য তৈরি, সেখানে মহিলাদের ভূমিকা শুধুই সুন্দর সাজুগুজু প্রেমিকা অথবা সংসার সামলাতে সামলাতে নাভিশ্বাস উঠে যাওয়া মা! ব্যস ওইটুকুই এবং প্রকারান্তরে কোনও মহিলা চরিত্রই কেন্দ্রীয় চরিত্রের জীবনে তেমন কোনও অবদান রেখে যেতে পারে না, উল্টে নানাবিধ সমস্যাই বয়ে নিয়ে আসে!

এ তো গেল, উপর উপর পুরুষতান্ত্রিকতা। ছবির আরও গভীরে, চরিত্র ও ক্রাইসিস তৈরির ধরন দেখেই সংবেদনশীল দর্শক বুঝবেন জেন্ডার বায়াসটা কোথায় কোথায় ঘাপটি মেরে বসে আছে। তবে তা নিয়ে পরিচালক ও চিত্রনাট্যকারকে বিশেষ দোষারোপ করে লাভ নেই। এই বহমান সমাজটাই বসে রয়েছে পুরুষতান্ত্রিক একটি কূপমণ্ডুক ব্যাঙের ছাতার তলায়।

যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়, তা হল এই ছবিটা খুব বেশি প্রেডিক্টেবল নয়। কিছু কিছু সূত্র ছেড়ে গেলেও দর্শক অন্যমনস্ক হয়ে সেগুলি ঠিক কুড়িয়ে নিতে ভুলে যাবেন। তাই অন্তিম টুইস্ট, ক্লাইম্যাক্সের বিল্ড আপ বেশ ভালো। ছবির শেষের দিকে একটু যেন তাড়াহুড়ো, শেষ অংশটিতে আরও একটু যত্ন নিলে ভালো হতো। ছবিটি দেখতে ভালো লাগবে অনেকটাই ঋত্বিক চক্রবর্তীর অভিনয়ের জন্য, ছবির একদম শেষে চিরঞ্জিৎ-ঋত্বিকের যুগলবন্দির জন্যেও। মিশমী ও ঈশা দুজনেই ভালো কিন্তু দুজনেরই অভিনয়ের সুযোগ সীমিত। দোলন রায়, দেবেশ রায়চৌধুরীর ক্ষেত্রেও তাই।

Ritwick Chakraborty Bengali Cinema
Advertisment