ঘোষ অ্যান্ড কোম্পানির সেই পর্ব এখনও সতেজ। যেখানে তাঁকে নকল করার জন্য মীরকে বেশ সমঝে দিচ্ছিলেন সঞ্চালক ঋতুপর্ণ ঘোষ।সেখানে ঋতুদার অভিব্যাক্তি ভালো লাগেনি মীরের। ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছিলেন অভিনেতা-সঞ্চালক। মূলত মীরাক্কেলে প্রায়ই ঋতুপর্ণ ঘোষকে নকল করতেন মীর। তাতে মনে মনে ধাক্কা খেয়েছিলেন প্রয়াত পরিচালক।
তিনি বলেছিলেন, মীর আদতে তাঁর মতো বিশেষ আত্মপরিচয়ের মানুষদের ব্যঙ্গ করেছেন। সেই নিয়ে নাকি ২ শিবিরে ভাগ হয়ে গিয়েছিল বাংলা বিনোদন জগৎ! তবে সময়ের সঙ্গে সেই দূরত্বও মুছে গিয়েছিল এক সময়। রবিবার, পরিচালকের চলে যাওয়ার দিনে সেই স্মৃতি ফের সজীব করলেন মীর। নেটমাধ্যমে ২০১৪-য় রেকর্ডিং করা এক ভিডিয়োর মাধ্যমে এই সঞ্চালক ছড়িয়ে দিয়েছেন তাঁর ‘ঋতু-স্মরণ’। যেখানে তিনি জানিয়েছেন, ‘সুযোগ পেলে আবারও আমি নকল করব ঋতুপর্ণ ঘোষকে।’
পরিচালকের সঙ্গে মনোমালিন্যের কথাও উঠে এসেছে এই ঝলকে। মীরের কথায়, ঋতুপর্ণ ঘোষকে পরে তিনি বুঝিয়েছিলেন, নকল করা কোনও অনৈতিক কাজ নয়। তিনি আগেও অনেক তাবড় শিল্পীর নকল করেছেন। তাঁরা কিছু মনে করেননি। সেই সময় পরিচালকের যুক্তি ছিল, তিনি যেহেতু বিশেষ শ্রেণিভুক্ত। তাই মীরের এই ধরনের অনুষ্ঠানে ওই বিশেষ শ্রেণির মানুষেরা আহত হতে পারেন। ঋতুপর্ণ তাই অনুরোধ জানিয়েছিলেন, আগামী দিনে মীর আবারও তাঁর নকল করলে যেন পরিচালকের নাম উল্লেখ করে দেন। তিনি কিচ্ছু মনে করবেন না।
প্রয়াণের আগে যদিও ২ শিল্পীর মনে জমে থাকা অভিমান নিজেই মুছে দিয়েছিলেন ঋতুপর্ণ। মীরের জবানিতে, ‘জি বাংলা কর্তৃপক্ষ ‘মীরাক্কেল’-এ আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ঋতুদাকে। শ্যুটিংয়ের আগে আমি ওঁর সঙ্গে আলাদা ভাবে দেখা করতে গিয়েছিলাম। মেকআপ রুমে ঋতুদা তখন একা। দরজা ঠেলে ঘরে ঢোকার অনুমতি চাইতেই ভীষণ আন্তরিক গলায় বলেছিলেন আয়। ওই একটা ডাক সব পুরনো কথা ভুলিয়ে দিয়েছিল।’
ঋতুদা প্রসঙ্গে ভিডিয়োয় মীর জানিয়েছেন, ‘আনকোরাদের সঙ্গেও অনায়াসে মিশে যেতে পারতেন ঋতুপর্ণ। তাঁর বাড়িতে তারকাদের আনাগোনা কম ছিল না। তার মধ্যেও নতুন শিল্পী-অভিনেতাদের জন্য তাঁর বাড়ির দরজা খোলা থাকত। প্রতি ছবিতেই ঋতুপর্ণ ঘোষ তাঁর স্বাতন্ত্র্য ধরে রাখতেন বলে তাঁকে শুনতে হত, তিনি নাকি সত্যজিৎ রায়কে টোকেন! এই কথারও মজার উত্তর দিয়েছিলেন পরিচালক।‘ কী বলেছিলেন প্রয়াত পরিচালক? মীর বলেন ঋতুদার জবাব ছিল,, ‘ছেলেকে বাবার মতোই দেখতে হয়।’
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন