এক মাসের জল্পনার অবসান। বিজেপিতে যোগ দিলেন একদা তৃণমূল ঘনিষ্ঠ অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের সময় থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ঘনিষ্ঠ হিসেবে রুদ্রনীল ঘোষকে (Rudranil Ghosh) দেখা গিয়েছিল। তিনি রীতিমতো ঘাসফুলের 'স্টার ক্যান্ডিডেট' ছিলেন। দীর্ঘ ৭ বছরের সেই সম্পর্ক কাটিয়ে এবার 'সাতে পাঁচে নেই' অভিনেতা প্রবেশ করলেন পদ্ম শিবিরে। জানিয়ে দিলেন, "বাংলার মানুষের জন্য শিগগিরই মাঠে নামব। কাজ করতে হবে মানুষের জন্য।"
প্রসঙ্গত, শনিবার সকালেই অমিত শাহের পাঠানো বিশেষ চার্টার্ড বিমানে জায়গা না হলে অন্য বিমানে করে দিল্লির উদ্দেশে রওনা হন অভিনেতা। বিমানবন্দরে বৈশালি ডালমিয়া, প্রবীরদের সঙ্গে সেলফিও দেখা যায়। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জল্পনা সেখানেই সত্যি হয়। এরপর পদ্ম শিবিরের পতাকা হাতে তুলে নেওয়া ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা। শাহের (Amit Shah) উপস্থিতিতেই বৈশালী-রাজীবদের সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দিলেন টলিউড অভিনেতা। উপস্থিত ছিলেন মুকুল রায়, কৈলাস বিজয়বর্গীয়রাও। শোনা যাচ্ছে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা নিজ নিজ এলাকা থেকে টিকিট পেতে পারেন কিংবা দলের বিশেষ দায়িত্বপদেও বসানো হতে পারে তাঁদের।
২০১৪ সালে পশ্চিমবঙ্গ বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ পর্ষদের সভাপতির দায়িত্বপদে বসানো হয়েছিল তাঁকে। এরপর ২০১৫ সালেই রাজ্য সরকারের জনপরিষেবা অধিকার কমিশনার করা হয় রুদ্রনীলকে। সেসময়ে ২১শে জুলাইয়ের মঞ্চে, ফিল্মে ফেস্টিভ্যালে তাঁকে দেখা যেত। তবে সেই তাল কেটেছে গত দেড় বছর ধরে! সম্প্রতি 'ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা'কে দেওয়া সাক্ষাৎকারেই অভিনেতা রাজ্যের শাসক দলের উদ্দেশে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসেন যে, "যাঁরা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন, তাঁরা নন, পদ খোয়ানোর ভয়ে মমতার দলে থাকা একাংশই আসলে ‘মীরজাফর-মুখোশধারী’।" সাফ জানিয়েছিলেন যে, "পরিবর্তনের লক্ষ্যে ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের সময় ৪২টা আসনের মধ্যে ১৮টা সিটে বিজেপিকে নিয়ে এসেছিলেন বাংলার মানুষ।" আরও বৃহত্তর ক্ষেত্রে কাজ করার ইচ্ছেও প্রকাশ করেছিলেন। এবার সেই প্রেক্ষিতেই কি ভারতীয় জনতা পার্টিতে নাম লেখালেন অভিনেতা? সেই প্রশ্নের উত্তর দেবে সময়ই।
তবে, বিজেপিতে যোগ দিলেও রুদ্রনীলের রাজনৈতিক আদর্শগত স্থিরতা কতটা থাকবে? তা নিয়ে সন্দিহান গেরুয়া শিবিরের সক্রিয় কর্মী তথা বাংলা বিনোদন ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে জড়িত তারকারা। যাঁরা কিনা গত লোকসভা নির্বাচনের সময়ে পদ্ম শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, ৩১ জানুয়ারি হাওড়ায় শাহী সফরেই পদ্ম পতাকা হাতে নেওয়ার কথা ছিল রুদ্রনীল ঘোষের। সেই মতোই হয়েছিল সব পরিকল্পনা। কিন্তু, শুক্রবার দিল্লিতে আইইডি বিস্ফোরণের ঘটনাই সব এলোমেলো করে দেয়। বাতিল হয় অমিত শাহের সফর। শাহ না আসায় অনিশ্চিত হয়ে পড়ে অভিনেতার বিজেপিতে যোগদানের বিষয়টি। এরপরই হস্তক্ষেপ করেন খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। শনিবার সকালে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও রুদ্রনীল ঘোষকে দিল্লিতে গিয়ে যোগদানের প্রস্তাব দেন অমিত শাহ।