একুশের বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্য-রাজনীতিতে দল-বদলের হাওয়া। একের পর এক তৃণমূল নেতামন্ত্রী শিবির বদলাচ্ছেন। এর মাঝেই জানুয়ারির গোড়া থেকে জোর জল্পনা, তৃণমূলের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষও (Rudranil Ghosh) নাকি এবার গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাতে চলেছেন। জন্মদিনে বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পাণ্ডার সঙ্গে তাঁরা সাক্ষাৎ। এবং কৈলাস বিজয় বর্গীয় সঙ্গে তাঁর দেখা করার ইচ্ছেপ্রকাশ যেন সেই জল্পনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বই কমায়নি! এবার তার মাঝেই বৃহস্পতিবার রাতে তৃণমূল থেকে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ যেন সেই জল্পনার যজ্ঞেই ঘৃতাহূতির মতো কাজ করল। তাহলে কি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পথে আরও একধাপ এগোলেন রুদ্রনীল ঘোষ? প্রশ্ন তো উঠছেই।
এপ্রসঙ্গে রুদ্রনীলের সাফ মন্তব্য, গতকাল রাতে এক অভিনেতার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে হরিদেবপুরে এসেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেখানেই তাঁদের দেখা হয় এবং রাজনীতি নিয়ে কথা হয়। রাজনীতির ময়দানে সেভাবে সক্রিয় না থাকলেও দীর্ঘদিন ধরেই যেহেতু তৃণমূলের সঙ্গে জড়িত রুদ্রনীল, তাই বিগত আট-দশ বছর ধরেই একে অপরকে চেনেন তাঁরা। আর সেই প্রেক্ষিতেই এদিন শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কথা হয় বলে জানিয়েছেন অভিনেতা।
রাজনীতির ময়দানে এবার একটু বড় পরিসরে রুদ্রনীলকে নামার পরামর্শ দেন শুভেন্দু। এপ্রসঙ্গে অভিনেতার বক্তব্য, সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতাকে তিনি জানান যে, আর কিছুদিন পরে এই সিদ্ধান্ত নেবেন। এখন তাঁর কিছু পেশাগত কাজ রয়েছে। রুদ্রনীল ঘোষ তাঁর জন্মদিনেই আভাস দিয়েছিলেন যে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সক্রিয় রাজনীতির ময়দানে নামবেন। তাহলে সেই জল্পনাই সত্যি হতে চলেছে? শুভেন্দু অধিকারির সঙ্গে তাঁর এই সাক্ষাৎকে কিন্তু রাজনৈতিক মহলের একাংশ এভাবেই দেখছে।
উল্লেখ্য, এর পাশাপাশি নেতাজির জন্মবার্ষিকীতে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রের তরফে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের নাম বদলানোর ভাবনার কথাও শোনা যাচ্ছে। এপ্রসঙ্গে রাজ্যের সংস্কৃতিমহলের সিংহভাগ কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলেও রুদ্রনীল ঘোষ এই পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, "আমার দেশের এত বড় মাপের মানুষ খুব কমই রয়েছেন। সেটা শুধু ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল নয়, যদি যেকোনও জায়গার ক্ষেত্রে এমন কোনও কিছু ঘটে সেটা খুবই আনন্দের। এর থেকে আর ভালো কিছু হয় না। এই মাটি যাঁর বা যাঁদের জন্য স্বাধীন হয়েছে, তাঁর নামে যদি কিছু হয়, তাতে শুধু বাঙালি কেন, গোটা ভারতবাসীর কাছেই একটা ভালোলাগার জায়গা।" অতঃপর রুদ্রনীল ঘোষ যে গেরুয়া শিবিরের দিকে ক্রমাগত ঝুঁকছেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে একটা চাপা উত্তেজনা অব্যাহতই রইল।