প্রতিপক্ষ শিবিরের দুই প্রার্থী। অতঃপর বন্ধুত্বও তলানিতে! ইট মারলে পাটকেলটি খেতে হয় তৃণমূলকে মনে করিয়ে দিলেন বিজেপিপ্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষ (Rudranil Ghosh)। প্রসঙ্গ, পরমবন্ধু রাজ চক্রবর্তীকে (Raj Chakraborty) ঘিরে ব্যারাকপুরে বিজেপির বিক্ষোভ।
প্রসঙ্গত, ব্যারাকপুরের (Barrackpore) বুথ পরিদর্শনে গিয়ে রাজ চক্রবর্তীকে ঘিরে 'গো ব্যাক' স্লোগান উঠেছিল ভোটের সকালেই। পাশাপাশি 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনি তুলে বিক্ষোভও দেখানো হয় তৃণমূলের তারকা প্রার্থীর উদ্দেশে। সেই প্রেক্ষিতেই রাজের 'পরমবন্ধু' বিজেপিপ্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষ 'রাজভোগ-মিহিদানা'র হিসাব কষলেন ভবানীপুরে (Bhawanipur) বসে!
রাজ্যের ষষ্ঠ দফা নির্বাচনে (West Bengal Assembly Election 2021) আজ লক্ষ্মীবারে অর্জুন-গড়ের ভোটবাক্সে ভাগ্যগণনার লড়াই রাজ চক্রবর্তীর। প্রথমবারের নির্বাচনী পরীক্ষার্থী সকাল সকালই দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন এলাকার বিভিন্ন বুথ পরিদর্শনে। কখনও তাঁকে ঘিরে গো-ব্যাক, জয় শ্রীরাম ধ্বনি উঠেছে, আবার কখনও বা তিনি বচসায় জড়িয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে। আবার এলাকায় বোমাবাজির ঘটনাও ঘটেছে। ব্যারাকপুর রণক্ষেত্র হলেও মাথা ঠান্ডা রেখে পরিস্থিতির সামাল দিয়েছেন রাজ চক্রবর্তী। পরপর এতগুলো ঘটনায় বিন্দুমাত্র বিচলিত দেখায়নি তাঁকে। ওদিকে ইন্ডাস্ট্রির সহকর্মী তথা বন্ধু রুদ্রনীল আবার ব্যারাকপুরের ভোটের দিনে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে রাজভোগ-মিহিদানার হিসেব কষেছেন।
প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই ভবানীপুরের বিজেপিপ্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষকে পাথর ছুঁড়ে আক্রমণ করার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের (TMC) বিরুদ্ধে। ঘটনার জেরে যদিও দুই বিরোধী শিবিরের দুজন করে কর্মীই গ্রেপ্তার হয়েছেন, তবুও পদ্মবাহিনী পুরো দায় ঠেলেছে শাসকদলের ঘাড়েই। সেই প্রেক্ষিতেই রুদ্রনীল বন্ধু রাজের ভাগ্যগণনার দিনে বিন্দুমাত্র সহানুভূতি দেখাতে নারাজ। উল্টে প্রশ্ন তুলেছেন, "কই সেদিন যে তৃণমূলের লোকেরা ভবানীপুরে রুদ্রনীল ঘোষকে পাথর ছুঁড়ে মারল, তখন তো শাসকদলের কেউ খোঁজ নিতে আসেননি? এমনকী ব্যক্তিগতভাবে ফোন করে খোঁজ নেননি রাজ চক্রবর্তীও! হয়তো প্রতিপক্ষ শিবির বলেই দলের কারণে খবরাখবর নিতে পারেননি রাজ।" তবে এই প্রেক্ষিতে তৃণমূলকে ছেড়ে দিতে নারাজ মমতা-গড়ের পদ্মপ্রার্থী। রুদ্রনীলের সাফ কথা, ভবানীপুরে তাঁকে পাথর ছুঁড়ে শাসকদল সেদিন বিজেপিকে (BJP) রাজভোগ খাইয়েছিল। আজ বৃহস্পতিবারে গেরুয়া শিবির ছোট করে মিহিদানা খাইয়ে দিল তৃণমূলকে।
রাজ-রুদ্র, যাঁরা কিনা বাংলা সিনে ইন্ডাস্ট্রিতে একসঙ্গে পায়ের তলার জমি শক্ত করার লড়াই চালিয়েছিল দাঁতে দাঁত চিপে, ভাগ করে নিয়েছিল একে-অপরের সমস্ত দুঃখ-কষ্ট, সেই বন্ধুত্বেও এখন বিপরীত রাজনৈতিক মতাদর্শের জন্য চিড়! সেদিনকার ঘটনার প্রেক্ষিতে আজ রাজ চক্রবর্তীর উদ্দেশে ইটের বদলে পাটকেল মারতে বিজেপিকে সমর্থন করছেন রুদ্রনীল ঘোষ? তাঁর সুরে অবশ্য বিদ্রুপ। বলছেন, "নাহ! সৌজন্যের খাতিরে সৌজন্য।"