Rudranil Ghosh-Bollywood: 'এটা চূড়ান্ত অন্যায়, বড় মাপের ভুল...', বাংলার সেইসব স্বাধীনতা সংগ্রামী যাদের জন্য আবেগে ভাসে গোটা বাঙালি সমাজ, তাঁদের নাম নিয়ে এরকম বিকৃতি? যে ক্ষুদিরাম ফাঁসির মঞ্চে হাসতে হাসতে জীবন দিলেন, তিনি হয়ে গেলেন ক্ষুদিরাম সিং? বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নিয়ে এহেন ছেলেখেলা যেন মেনে নেওয়া যায় না। হিন্দি ছবি কেশরী ২ নিয়ে চারিদিকে শোরগোল। বিশেষ করে বাঙালির ভাবাবেগে আঘাত পড়েছে। সেই নিয়েই কলকাতা এবং বাঙালি সরগরম। এই নিয়ে আওয়াজ তুলেছেন শাসকদলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
আর এই প্রসঙ্গেই বিজেপির জনপ্রিয় মুখ এবং অভিনেতা রুদ্রনীলকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার তরফে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, আদৌ এই ঘটনা তাঁর কাছে কীরকম? বাংলার মানুষের মনে যেমন আঘাত লেগেছে তাঁর মনেও কি ঠিক একইরকম ভাবাবেগ? উত্তরে ভীষণ স্পষ্টবাদী রুদ্রনীল বলছেন... "এটা বাংলার ক্ষেত্রে খুব স্বাভাবিক। আমার মাটির মানুষ যারা এত বড় মাপের আত্মত্যাগ করেছেন, তাঁদের প্রতি আমাদের আবেগ এবং শ্রদ্ধা থাকবে সেটা খুব স্বাভাবিক। অন্যদের কাছে সেটা কিন্তু এতটা আবেগের জায়গায় থাকবে না। এটা অশ্রদ্ধা না। এটা, জায়গা অনুযায়ী বিষয়টা পাল্টে যায়। কিন্তু, যখন ঐতিহাসিক কাহিনী নিয়ে যখন সিনেমা বানানো হয়, তখন দেখা যায় ড্রামা তৈরি করার জন্য কিংবা মানুষের কাছে সেটিকে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য কিছু ছোটখাটো অদলবদল লেগেই থাকে। বিরাট বড় নয়। কিন্তু সারাক্ষণ রিসার্চ টিমের খেয়াল রাখা উচিত, যে আমরা কী করছি। এটা চিত্রনাট্যকার কিংবা পরিচালকের কাজ না। যারা উদ্বেগ প্রকাশ করছেন, তাঁরা কিন্তু বাঙালি সেন্টিমেন্ট থেকে করছেন। সারা ভারতবর্ষের মানুষ এই ঘটনায় একেবারেই উদ্বেগ প্রকাশ করবেন না।"
অভিনেতা দাবি করেন, এই বিষয়টার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক অনেক কিছু চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। বলছেন, "রিসার্চ টিমের খেয়াল রাখা উচিত ছিল যে তাঁরা যখন কোনও ছবি তৈরি করছেন বা ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে গল্প বানাচ্ছেন, তখন এ ধরনের তারতম্য রাখা উচিত না। তবে, আরেকটা বিষয় হল, এখন তো সিনেমা রিলিজ করেনি। সে তো, সিনেমাহলেও আর নেই। অবশ্যই সেটা নিয়ে কথা বলবেন, কিন্তু একমাস পর, এখন কীসের এত কথাবলার ইচ্ছে? আমি দু ধরনের মানুষ দেখতে পাচ্ছি, এক, যারা ভারতবর্ষের স্বাধীনতা দিবস কিংবা কোনও স্বাধীনতা সংগ্রামীর আত্মত্যাগ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেননি কিংবা কোনোদিন পতাকা তুলতেও দেখলাম না তাঁদের। সিনেমা রিলিজের একমাস পর, তাঁরা কেন এই নিয়ে কথা বলছেন? বাংলার বিপ্লবীদের নিয়ে তাঁদের কোনও প্রীতি তো আগে দেখিনি।"
অভিনেতা এখানেই থামলেন না। তাঁর কথায়, "শাসকদলের যারা বিপ্লবীদের নিয়ে কথা বলছেন, তাঁদের একটা কথা বলছি, শ্রদ্ধেয়া মুখ্যমন্ত্রীর বাবা নাকি স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন। উনি কি আত্মত্যাগ করলেন, সেটা নিয়ে আলোকপাত করুন। আসলে, তাঁদের কাছে পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে কথা বলার লজিক নেই। যা করেছেন তাঁরা এই নিয়ে। নাহলে একমাস আগে হওয়া একটা ভুল সেটা নিয়ে আজ আলোচনা?" পাশাপাশি অভিনেতা জানিয়ে দিলেন, এই ছবি কোনও দলের রাজনৈতিক ছবি নয়। এই ত্রুটি রিসার্চ টিমের। এই আবেগটা নাটক। বললেন, "তবে, ক্ষুদিরাম বসু, ক্ষুদিরাম সিং হয়ে যাবেন, সেটা দুর্ভাগ্যজনক। এটা একদম উচিত নয়। আমাদের বাংলার ক্ষেত্রেও সেটা হয়। এবং আমাদের বাংলার ক্ষেত্রেও ঐতিহাসিক ছবিতে নানা চরিত্র থাকে, আমাদের সেক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।"