সদ্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন রুদ্রনীল ঘোষ (Rudranil Ghosh)। তখনই শোনা গিয়েছিল যে, গেরুয়া শিবিরে বড় পরিসরে রাজনৈতিক ময়দানে নামতে চলেছেন তিনি। সংশ্লিষ্ট দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও দেওয়া হতে পারে ঘাসফুল ছেড়ে পদ্ম শিবিরে যোগ দেওয়া নেতা রাজীব, শুভেন্দু-সহ রুদ্রনীলকে। এবার কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, একুশের বিধানসভা নির্বাচনীর জন্য শিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রে 'ভূমিপুত্র' রুদ্রনীল ঘোষের উপরই নাকি আস্থা রাখছে গেরুয়া শিবির। অর্থাৎ, সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র থেকেই নাকি তারকা বিজেপিপ্রার্থী হয়ে তৃণমূলের হয়ে লড়বেন তিনি। জোর জল্পনা রাজনৈতিক মহলের অন্দরে।
প্রসঙ্গত, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর এই প্রথম হাওড়ার সদর দলীয় কার্যালয়ে আসেন। উল্লেখ্য, হাওড়া শিবপুরের জগাছায় রুদ্রনীলের জন্ম। সেখানেই বেড়ে ওঠা এবং পড়াশোনা। কাজেই কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে শিবপুর কেন্দ্র থেকে ভূমিপুত্র রুদ্রনীল ঘোষকেই বিজেপি প্রার্থী করা হবে। রাজনৈতিক মহলের অন্দরে তো এমনটাই জল্পনা।
এপ্রসঙ্গে অভিনেতার কী মত? তাঁর কথায়, "কে কোথা থেকে ভোটে লড়বে, এটা দলীয় সিদ্ধান্ত। তবে হাওড়ায় কাজ করতে চাই।" বিজেপি ক্ষমতায় এলে আগামী দিনে এরাজ্যের বিভিন্ন জায়গার মতো হাওড়ার মানুষের জীবনেও সুদিন আসবে, বলে বিশ্বাস রুদ্রনীলের।
উল্লেখ্য, এর পাশাপাশি তিনি টলিউড ইন্ডাস্ট্রির প্রসঙ্গও উত্থাপন করলেন। দিন কয়েক আগেই ডুমুরজলার ‘মেগা অনুষ্ঠানে’ মমতা-অধ্যায়ের ‘তিক্ত’ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে গেরুয়া মঞ্চেই সুর চড়িয়েছিলেন যে, “বাংলায় বিজেপিকে দরকার।” বৃহস্পতিবার টলিউডের অন্দরে রাজনৈতিক দণ্ডমুণ্ডদের আস্ফালনের সুর শোনা গেল তাঁর কণ্ঠে। চড়াও হলেন রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে। রুদ্রনীলের কথায়, "টলিউডে (Tollywood Industry) মাফিয়ারাজ চলছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) যাঁদের কাঁধে দায়িত্ব দিয়েছিলেন, তাঁরাই একচেটিয়া মাফিয়ারাজ তৈরি করে ফেলেছেন ইন্ডাস্ট্রিতে।"
এদিন হাওড়ায় দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে এমন অভিযোগ তোলেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া অভিনেতা। রুদ্রনীলের মন্তব্য, "ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে রাজ্যের শাসক দলের মাফিয়াদের এমন আস্ফালনের জন্যই একের পর এক প্রযোজক পশ্চিমবঙ্গ থেকে চলে যাচ্ছেন। কেননা, তাঁদের মাথায় বন্ধুক ঠেকিয়ে যত কলাকুশলী দরকার তার চাইতে দ্বিগুন লোক নিতে বলা হচ্ছে। আর অতিরিক্ত লোকজন বসে বসে টাকা গুনছে। তাই অনেকের মনে অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে।" সেই প্রেক্ষিতেই অভিনেতার বিশ্বাস, বিজেপি ক্ষমতায় এলে টলিউডের এহেন চালচিত্র ক্রমশই বদলাতে শুরু করবে। যাঁরা আজ চুপ করে বসে আছেন, তাঁরাই ইন্ডাস্ট্রির এই সিস্টেমের বিরুদ্ধে সরব হবেন।
রুদ্রনীল অবশ্য এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের প্রতিনিধিদের সমালোচনায় সরব হলেও দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কিন্তু প্রশংসাই করেছেন। অভিনেতার বক্তব্য, "ক্ষমতায় আসার পরে মুখ্যমন্ত্রী টলিউড সামলাতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। কিন্তু যাঁদের দায়িত্ব দিয়ে এখানে বসালেন, তাঁরাই নিজেদের আধিপত্য বজায় রেখে জোরজুলুম ও স্বজনপোষণ শুরু করলেন। অনেকেই হয়তো এদের দলে থাকতে চাইছেন, কিন্তু নিজেদের বিবেককে একবার প্রশ্ন করা উচিত।"
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ডুমুরজলার সভায় টালিগঞ্জ স্টুডিও পাড়ার আরও কয়েকজন তারকা যে গেরুয়া শিবিরে অতি সত্ত্বর নাম লেখাতে চলেছেন, সেই ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন অভিনেতা। তাহলে কি রুদ্রনীলের হাত ধরেই বঙ্গ পদ্ম শিবির টলিউড তারকাদের সামনে রেখে ‘নির্বাচনী ঘুটি’ সাজাতে চলেছে? প্রশ্ন তো উঠছেই।