সোমবার গভীর রাতে মুম্বইয়ের মাড আইল্যান্ডে মিঠুন চক্রবর্তীর (Mithun Chakraborty) সঙ্গে দেখা করেছেন RSS প্রধান মোহন ভাগবত। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলের অন্দরে জোর শোরগোল শুরু হয়েছে। সেই জল্পনার রেশ কাটার আগেই মঙ্গলবার সরস্বতী পুজোর শুভক্ষণে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের (Prosenjit Chatterjee) 'দরবার'-এ অমিত শাহর উপর লেখা বই নিয়ে হাজির বিজেপি নেতা অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে 'মহাগুরু' মিঠুন ও টলিউডের 'ফার্স্টম্যান' প্রসেনজিতের সঙ্গে এই সাক্ষাৎকে কিন্তু শুধুমাত্রই 'সৌজন্যমূলক' আখ্যা দিতে নারাজ রাজনৈতিক মহল। কারণ দু'জনের নামের সঙ্গেই বাঙালির আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। আর সেই আবেগকে হাতিহার করেই কি এই দুই সুপারস্টারকে সামনে রেখে বঙ্গ বিজেপি ‘নির্বাচনী কৌশলী’ সাজাচ্ছে? বিরোধী শিবিরের অন্দরে জল্পনা যখন তুঙ্গে, ঠিক তখনই ফেসবুকে একটি ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করলেন সদ্য পদ্ম শিবিরে যোগ দেওয়া অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ (Rudranil Ghosh)।
প্রসঙ্গত, বিজেপিতে যোগ দিয়েই রুদ্রনীল ঘোষ বার্তা দিয়েছিলেন যে, খুব শিগগিরিই ইন্ডাস্ট্রির আরও অনেকেই গেরুয়া মন্ত্রে দীক্ষিত হতে চলেছেন। পাশাপাশি সেসময়েই বলেছিলেন, "বাংলায় এবার বিজেপিকে দরকার।" তিনি অরিন্দম শীলের নামোল্লেখ করলেও পরিচালক সেই জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন। এবার মিঠুন ও প্রসেনজিতের সঙ্গে বিজেপি নেতাদের সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে মুখ খুললেন রুদ্র। ফেসবুকে দুই সুপারস্টারের সঙ্গে সাক্ষাতের মুহূর্তের ছবি শেয়ার করে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া অভিনেতার মন্তব্য, "এই দুই বাঙালির স্ট্রাগল, পরিশ্রম, বিচক্ষণতা, দায়িত্ববোধ ও সিদ্ধান্ত অনেক মানুষকে সাহস দেয়! নতুনভাবে ভাবতে শেখায়!" রুদ্রনীল ঘোষের এমন পোস্টকে কিন্তু যথেষ্ট 'ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা' বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। স্বাভাবিকবশতই প্রশ্ন উঠছে যে, রুদ্র কি তাহলে এই পোস্টের মধ্য দিয়েই আকার-ইঙ্গিতে বোঝাতে চাইলেন যে, আসন্ন নির্বাচনের আগে 'গেরুয়া শিবিরের প্রচার মুখ হতে চলেছেন মিঠুন-বুম্বা?'
তবে, একুশের নির্বাচনী ময়দানে বঙ্গ বিজেপির 'রণ-নীতি' যে উত্তরোত্তর আরও শক্তিশালী হচ্ছে, তার ইঙ্গিত মিলেছে ইতিমধ্যেই। বিজেপির তারকা-খচিত নির্বাচনী প্রচার দেখলেও বাংলার মানুষ যে অবাক হবেন না, তা হলফ করে বলাই যায়।
উল্লেখ্য, নেতাজির জন্ম জয়ন্তীতে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে উপস্থিত ছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। চা-চক্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) সঙ্গেও আলাদা করে তাঁর কথা হয়েছে। সরকারি অনুষ্ঠান হলেও প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের হাজিরায় জল্পনার সূত্রপাত হয়েছিল বটে! উপরন্তু গ্রেটা থুনবার্গ ও রিহানার কৃষক আন্দোলন নিয়ে মুখ খোলাকে মেনে নিতে পারেননি তাঁর স্ত্রী অভিনেত্রী অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়ও। মার্কিনী পপ গায়িকার প্রসাধনী দ্রব্যের ব্র্যান্ড বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন তিনি। এবার শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রিসার্চ ফাউন্ডেশনের অধিকর্তা অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রসেনজিতের সাক্ষাৎ নিয়ে যে 'কৌতূহল'-এর পারদ চড়েছে, তা নিয়ে মুখ খুললেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথায়, পুরোটাই সৌজন্য সাক্ষাত্। যদিও তাঁর এই 'ত্বত্ত্ব' মানতে নারাজ রাজনৈতিক বিচক্ষণীদের একাংশ।