প্রয়াত অভিনেত্রী-সঙ্গীতশিল্পী রুমা গুহ ঠাকুরতা। সোমবার ভোর ৬ টা নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বেশ কয়েকদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন এই প্রবীণ শিল্পী। এদিন সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
৩৮ বালিগঞ্জ প্লেসের নিজের বাড়িতেই ঘুমের মধ্যে পরলোক যাত্রা করলেন ক্যালকাটা ইয়ুথ কয়্যারের পুরোধা। প্রায় তিন মাস মুম্বইয়ে কুমারের বাড়িতে থেকে সদ্য কলকাতা ফিরেছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। বিকেলে পুত্র অমিত কুমার ও মেয়ে শ্রমণা চক্রবর্তী রুমা কলকাতায় পৌঁছলে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। তাঁর মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শিল্পীর শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করবে সরকার।
কালজয়ী শিল্পী কিশোর কুমারের প্রথম স্ত্রী ছিলেন রুমা গুহ ঠাকুরতা। পরে বিয়ে করেন অরূপ গুহ ঠাকুরতাকে। অরূপ বাবুর ভাই সুদেব গুহ ঠাকুরতা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, ''সকাল ৬টা নাগাদ বড় বৌদির ছেলে ঘরে গিয়ে দেখে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছেন। নীচেই আমাদের এক ভাইয়ের ছেলে ডাক্তার। তাঁকে ডেকে আনার সময়টুকুর মধ্যেই চলে গেলেন। সেই ভাবে কোনও অসুস্থতা ছিল না। কিন্তু বয়সের কারণে হাঁটাচলা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল''।
কিশোর কুমারের সঙ্গে রুমা গুহ ঠাকুরতা। ছবি-সংগৃহীত
বহু বিখ্যাত ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। 'বালিকা বধূ', 'অভিযান', 'গণশত্রু', 'দাদার কীর্তি', '৩৬ চৌরঙ্গী লেন', 'হংসমিথুন'-এর মতো ছবিতে দেখা গিয়েছে এই শিল্পীকে। তপন সিংহ, তরুণ মজুমদার, সত্যজিৎ রায়ের মতো পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেছেন রুমা। গান গেয়েছেন 'তিন কন্যা', 'পলাতক', 'অমৃত কুম্ভের সন্ধানে'-র মতো ছবিতে।
কলকাতা ইয়ুথ কয়্যারের 'ভারতবর্ষ সূর্যের এক নাম', 'শিকল ভাঙার গান', 'বিস্তীর্ণ দুপারে', 'চেতনার গান' বাঙালিকে আজীবন মনে করাবে রুমা গুহ ঠাকুরতার কথা। তাঁর প্রয়াণে সঙ্গীতজগতে শোকের ছায়া।