Dabangg 3 movie cast: সলমন খান, সুদীপ, সোনাক্ষী সিনহা, আরবাজ খান, সই মঞ্জরেকর
Dabangg 3 movie director: প্রভু দেবা
Dabangg 3 movie rating: ১.৫ তারা
চুলবুল পাণ্ডে ওরফে সলমন খান-এর মধ্যে এখনও কিছু 'চুলবুলি' অবশিষ্ট আছে কি না, সেটা দেখার জন্যই একমাত্র 'দাবাং'-এর তৃতীয় কিস্তিটি দেখতে যাওয়া যেতে পারে। এই চুলবুলি-র কারণেই আগের ছবি দুটি নিতান্তই অনুমেয় হওয়া সত্ত্বেও মোটের উপর একটু-আধটু উপভোগ করা গিয়েছিল।
কিন্তু চুলবুল-এর এই চুলবুল হয়ে ওঠার এই লম্বা গল্পটি আগের ছবিগুলির মতোই ঘণ্ট-পাকানো চর্বিতচর্বণ তো বটেই, উপরন্তু 'রেগে আগুন তেলে-বেগুন' করে দিতে পারে। এই ছবি আমাদের নিয়ে যায় সেই কোন কালের ফ্ল্যাশব্যাকে যখন আমাদের নায়ক মিষ্টিমতো সই মঞ্জরেকরের প্রেমে পড়ে। সে মেয়ে যে সময়টা হেসেখেলে বেড়ায় না, তখন ভাবতে থাকে কী করে আরও প্রচুর পড়াশোনা করে বড় হবে। এই ব্যাপারে নায়কের একটাই কথা-- ''ও পড়াশোনা করবে আর আমি ওকে রক্ষা করব।'' রক্ষা করব মানেটা কী? মেয়েরা শুধুই চোখ পিটপিট করবে আর লক্ষ্মী মেয়ের মতো পড়াশোনা করবে! তাই তো পাণ্ডেজি?
আরও পড়ুন: প্রোফেসর শঙ্কু ও এল ডোরাডো: চোখের সামনে যখন সত্যি হল কাঙ্খিত কল্পদৃশ্য
দাবাং থ্রি হল সেই জাতীয় ছবি যেখানে নায়ক যদি নায়িকার রক্ষাকর্তা হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করে, তবে সেটাতে আপত্তির কিছু নেই। অবশ্য তা ছাড়া আর নায়কের কী-ই বা করার আছে। এমনকী ভিলেন বাল্লি সিং (সুদীপ)-এর নিয়তিও বাঁধাধরা-- তাকে একপাল পালোয়ান দেওয়া হবে, একটা অবৈধ খনি দেওয়া হবে, সে সাইড-বিজনেস হিসেবে বেশ্যাদের নেটওয়ার্ক চালাবে আর তাকে দেওয়া হবে কিছু সংলাপ! কিন্তু সে-ও জানে, আমরাও জানি, শেষে কী হতে চলেছে।
বাকি ছবিটা যে কোনও 'ভাই'-ধাঁচের ছবির মতোই। শুধু 'দাবাং'-এর আগের দুটি ছবিতে যে 'মস্তি'টা ছিল সেটা অনুপস্থিত। এই ছবির পরিচালক যে প্রভুদেবা সেটা ঠিক ধরা পড়ে যায়। এমনটা নয় যে শুধু ঝিনচ্যাক নাচের দৃশ্যগুলিতেই প্রভু দেবা-র সিগনেচার রয়েছে। গোটা ছবি জুড়েই রয়েছে। সে মারামারির দৃশ্যে হোক বা অন্য যে কোনও দৃশ্য। আর বাণিজ্যিক ছবির সবচেয়ে নিম্নমানের যা যা বৈশিষ্ট্য থাকে তার সবকটিই প্রচুর পরিমাণে দেখা গিয়েছে-- বাতকর্ম নিয়ে খিল্লি, ক্যামেরার চোখ বার বার মেয়েদের বুকের উপর আটকে থাকা (এখানেই সেক্সিজম ধরা পড়ে যায়), শিশুসুলভ জোকস, বাজে লোক মানেই তেল চকচুকে কালো মতন কিছু মানুষ (বর্ণবৈষম্যের উৎকৃষ্ট উদাহরণ) ইত্যাদি। এক জায়গায় দেখা যাচ্ছে তিন পুং পুলিশ অফিসার মূত্রত্যাগের সময়ে তা নিয়ে খেলাধুলো করছে। কার ফোয়ারা সবচেয়ে বেশি দূর পৌঁছচ্ছে তা সঠিক অনুমান করবার জন্য কোনও পুরস্কার নেই কিন্তু। সবাই জানে কে আসলে 'দাবাং'। সাইজই তো বড় ব্যাপার, তাই না!
আরও পড়ুন: Mardaani 2 movie review: বলা বাহুল্য শিবানীই শেষ কথা
ছবির প্রথম দিকে যখন আমাদের চুলবুল টুক করে তার পায়ের পুরুষ্টু পেশি দেখায়, মনে হয়, রোককে... এই ছবিটা কি সত্যিই আলাদা হতে চলেছে? তার মানে নায়কের চিতিয়ে থাকা খোলা বুক নেই? তা আবার হয় নাকি! এক্ষেত্রে আমরা একটা কিনলে আর একটা ফ্রি পেয়েছি-- সুদীপেরও আছে, সলমনেরও আছে। কিন্তু ভাইসকল, তেমন জমেনি। আরবাজ-এর ছোট ভাই, মাখখি, সে-ও তো সেই একঘেঁয়ে।
ছাপা শাড়ি আর দড়িসর্বস্ব চোলি পরে, বেশ ঢং দেখিয়ে চুলবুলকে একবার বলে ওঠে রাজ্জো (সোনাক্ষী)-- ''আমি ওই সত্তর-আশি সালের মতো কথা মোটেই বলব না।'' এই সংলাপটা শুনে মনে হয় স্ক্রিপ্টটা কেউ ভুলে মেরে দিয়েছে। দেখেশুনে সত্যিই অবিশ্বাস্য লাগে যে এখনও বলিউডে এই রকম সেকেলে ধ্যানধারণা থেকে ছবি বানানো হয়, যে ছবির মোদ্দা বিষয় হল মেয়েরা তাদের রক্ষাকর্তার জন্য হাঁ করে বসে থাকবে।
কোনও প্রেম নেই, থাপ্পড় নেই, এমনকী শার্টবিহীন সলমন শুধুই সাইলেন্সার লাগানো সিটি দিয়ে খালাস! তবে আর হলটা কী?