বিকেল পাঁচটা। রবীন্দ্রসদন থেকে শুরু হল সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের শেষযাত্রা। পা মেলালেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন রাজনৈতিক ময়দানের বহু মন্ত্রী-বিধায়কের পাশাপাশি সঙ্গীতদুনিয়ার বিশিষ্টরাও। রাস্তার দুধারে উপচে পড়েছে ভীড়। ছটা নাগাদ কেওড়াতলা মহাশ্মশানে পৌঁছল বাংলা সঙ্গীতজগতের ‘ধ্রুবতারা’র দেহ। আবেগঘন উপস্থিত অনুরাগীরা। গীতশ্রীর গানের লাইন ধার নিয়েই এই দৃশ্যের বর্ণনা করা যায়- "কিছুক্ষণ আরও না হয় রহিতে কাছে…।"
গান স্যালুটে চিরবিদায় দেওয়া হল সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে। চোখের জল, স্বজন হারানোর বেদনার আর্তি চারপাশে। সেই সঙ্গে বাজছে গীতশ্রীর একের পর এক মন ভোলানো গান। অগণিত ভক্তদের রেখে সুরলোকে চলে গেলেন বাংলা সঙ্গীতদুনিয়ার সরস্বতী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। পূর্ণরাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্পন্ন হল কিংবদন্তী গায়িকার শেষকৃত্য। কেওড়াতলা মহাশ্মশানে পঞ্চভূতে বিলীন হলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।
<আরও পড়ুন: চালসার শালবাড়িতে এলেই জমত গানের আসর, এমনকী বালিশেও তবলা বাজাতেন বাপ্পি>
সঙ্গীতদুনিয়ার আকাশে যেন কালো মেঘ ঘনিয়েছে। সন্ধ্যাদেবীর মৃত্যুর ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই বাপ্পি লাহিড়ী চিরবিদায় নিয়েছেন। পরপর এমন জোড়া ধাক্কা যেন কিছুতেই সামলাতে পারছেন না শিল্পীরা। সবার মুখে একটাই কথা, এত স্নেহ, এত আদর, এমন অভিভাবক আর পাব কোথায়? বাংলার শিল্পীদের মন্তব্য, গানের জগতের মাতৃবিয়োগ ঘটল।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাত ৮টা নাগাদ সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসে। গীতশ্রীর মৃত্যুর খবর শুনে উত্তরবঙ্গ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী জানান বুধবার বিকেল ৫টা নাগাদ শেষকৃত্য হবে। সকালেই কলকাতা ফিরে সোজা চলে আসেন রবীন্দ্রসদনে। সেখানেই সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মেয়ে সৌমীর সঙ্গে কথা বলেন। এমনকী শেষকৃত্য না হওয়া অবধি সেখানেই থাকেন।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতোই মঙ্গলবার রাতে পিস ওয়ার্ল্ডে রাখা হয়েছিল গীতশ্রীর দেহ। আজ, বুধবার বেলা ১২টায় শিল্পীর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় রবীন্দ্র সদনে। শায়িত ছিল ৫টা পর্যন্ত। এরপরই পূর্ণরাষ্ট্রীয় মর্যাদায় চিরবিদায় দেওয়া হয় গীতশ্রীকে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন