দাদাসাহেব ফালকের (Dadasaheb Phalke) মতোই এবার ‘সত্যজিৎ রায় পুরস্কার’ চালু করছে বিজেপি সরকার। সোমবারই কলকাতা শহরের এক পাঁচতারা হোটেলে টলিউডের তারকাবেষ্টিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর (Prakash Javadekar)। সেখানেই মোদী সরকারের তরফে এমন অভিনব উদ্যোগের কথা ঘোষণা করেন তিনি। ভোটের মুখে বিজেপি সরকারের এমন ঘোষণাকে কিন্তু 'নির্বাচনী রণ-কৌশলী' হিসেবেই দেখছে বাংলার রাজনৈতিক মহল। তবে সত্যজিৎ-পুত্র সন্দীপ রায় (Sandip Ray) কিন্তু এই বিষয়ে রাজনৈতিক গন্ধ খুঁজতে নারাজ!
'সত্যজিৎ রায় পুরস্কার' আদতেই একুশের নির্বাচনের আগে বাঙালির আবেগ উসকে দিতে ঘোষণা করা হয়েছে কিনা, সেই প্রসঙ্গে কোনওরকম মন্তব্য সন্দীপ রায় অবশ্য করেননি। তাঁর কথায়, সত্যজিৎ রায়ের ১০০তম জন্ম জয়ন্তীর বছরেই এই পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে, এটাই একেবারে উপযুক্ত সময়। কেন্দ্রের এমন উদ্যোগে তিনি যে বেজায় খুশি, সেকথাও জানিয়েছেন।
এদিন মোদীর মন্ত্রীসভার সদস্য জাভড়েকর জানিয়ে দিয়েছেন যে, এবার থেকে দাদাসাহেব ফালকের মতোই সত্যজিৎ রায় পুরস্কার চালু হচ্ছে। উল্লেখ্য, সত্যজিৎ রায় মানেই বাংলা ও বাঙালির আবেগ। বিধানসভা ভোটের আগে ‘সত্যজিৎ রায় পুরস্কার’ (Satyajit Roy Award) ঘোষণা করে এবার সেই আবেগকেও হাতিয়ার করল কেন্দ্র। এই প্রেক্ষিতে বলা ভাল, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলার জমিতে পদ্ম ফোটানোর জন্য কোনওরকম চেষ্টার খামতি রাখছে না বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার।
প্রসঙ্গত, ভোটের আগে রাজ্য-রাজনীতি সরগরম। একদিকে ঘাসফুল শিবির যখন বিজেপিকে ‘বহিরাগত’ বলে আক্রমণ করে কোমর বেঁধে ময়দানে নেমে পড়েছে। অন্যদিকে তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে ‘বহিরাগত’ তকমা মোছার চেষ্টায় ঠিক ততটাই মরিয়া হয়ে উঠেছে গেরুয়া শিবির। যে কারণে, বাংলায় এসে বারবার গেরুয়া নেতা-মন্ত্রীদের কথোপকথনে উঠে এসেছে বাংলার মণীষীদের কথা। সেই প্রেক্ষিতে ‘সত্যজিৎ রায় পুরস্কার’ও যে সেই স্ট্র্যাটেজির বাইরে নয়, এমনটাই মত বঙ্গ রাজনৈতিক মহলের একাংশের।
প্রসঙ্গত, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে NFDC আয়োজিত অনুষ্ঠানে টলিপাড়ার তারকাদের সঙ্গে জাভড়েকরের সাক্ষাৎ যে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, অনেকেই মনে করছেন সেটা। কারণ, আসন্ন ভোটে ‘স্টার-স্ট্র্যাটেজি’ যে বিজেপির তরফে ‘তুরুপের তাস’ হতে চলেছে, ইতিমধ্যেই পদ্ম শিবির ঘনিষ্ঠরা তা দাবি করেছেন। সেই প্রেক্ষিতে সোমবারের বৈঠক যে নিছকই বাংলা সিনে ইন্ডাস্ট্রির উন্নতি সাধনের জন্য নয়, এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।