/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/06/WhatsApp-Image-2023-06-08-at-2.28.24-PM.jpeg)
'নষ্টনীড়ে' সন্দীপ্তা - ছবি/ ইনস্টাগ্রাম
তিনি টেলিভিশনের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী। একাধিক ধারাবাহিকে অভিনয় করে দর্শকদের মন জয় করার পর ওয়েব সিরিজেও বেজায় দক্ষতার সঙ্গে অভিনয় করছেন। তথাকথিত একটু গম্ভীর, ছোট থেকেই প্রতিবাদী...ঠিক তেমনই কি 'নষ্টনীড়' এর অপর্ণাও হয়ে উঠেছে প্রতিবাদী এবং সুখের সংসারের কান্ডারী? সংসার থেকে সিনে ওয়ার্ল্ড ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সঙ্গে আড্ডায় সন্দীপ্তা সেন।
প্রমোশন হলেই কি ব্যস্ততা বাড়ে?
আরেহ! আজকে বেরোনোর কথাই ছিল না জানো। তাও বেরোতে হল। কী যে করার, মাঝেমধ্যে সব তালগোল পাকিয়ে যায়।
একদম ভিন্ন ধাঁচের একটা চরিত্র কিন্তু বর্তমান সময়ের সঙ্গে খুব প্রাসঙ্গিক, এই জন্যই কি এটা বেছে নেওয়া?
অনেকগুলো কারণ আছে, প্রথম যেমন আমি এধরনের চরিত্র আগে করিনি। আমায় খুব পাওয়ারফুল চরিত্রে আগে দেখানো হয়েছে। সেখানে এটা একদম অন্যরকম, এখন গৃহিণীর চরিত্র। তাঁর সঙ্গে লুক, এমন লুক আমার আগে হয়নি।
দ্বিতীয়, বলতে পারো পরিচালক অদিতিদি। ওর সঙ্গে আগে 'বোধন' করেছিলাম। অসামান্য পরিচালক তাই না বলার কোনও কারণ ছিল না। আর তৃতীয়, বলতে পারো গল্পটা খুব স্ট্রং। #Metoo এর মত একটা বিষয়কে বোঝানো হয়েছে তাই হ্যাঁ, আমি আর না বলতে পারিনি।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/06/s0.jpg)
নিজে কখনও #MeToo বা কোনও বিতর্কের সঙ্গে জড়িয়েছ?
এখনও পর্যন্ত না। আমার ভাগ্য ভাল বলতে পারো যে এধরনের কোনও সমস্যায় আমি পড়িনি। তবে, হ্যাঁ যদি কোনওদিন হয় তো আমি হ্যাশট্যাগ মি টু অবশ্যই দেব।
একজন মেয়ে হিসেবে কোথাও কি তোমার মনে হয় যে মেয়েরা #MeToo বা নারীদের স্বপক্ষে আইনগুলো নিয়ে তাঁর অপব্যবহার করে?
কিছু কিছু ক্ষেত্রে তো অবশ্যই। ক্ষমতা থাকলে সেটার অপব্যবহার যুগযুগ ধরে চলে এসেছে। এটা শুধু মি টু না বরং সবক্ষেত্রেই। তুমি সামলাতে পারবে না মানুষকে। কিছু কিছু মানুষ এমনই হয়। কিন্তু সমস্যাটা কোথায় বলো তো, যাঁদের জন্য এই #MeToo বানানো ,অনেকসময় দেখা যায় যাঁরা আসলেই এধরনের সমস্যার স্বীকার তারা জাস্টিস পায় না। তাঁরা কিন্তু বিচার থেকে অধরা থেকে যায়। তাই আমার মনে হয়, একটু ভেবে চিন্তে এটাকে ব্যবহার করা উচিত।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/06/s3.jpg)
সন্দীপ্তার কাছে সংসার মানে কি সবকিছু মুখ বুজে মেনে নেওয়া নাকি অন্যায়ের প্রতিবাদ করা?
ওঃ বাবা! একেবারেই না... আমি ভীষণ প্রতিবাদী ছোট থেকে। বাবা-মা ওভাবেই বড় করেছেন। আমি অন্যায় দেখলে চুপ থাকতে পারি না। আসলে, প্রতিবাদী বিষয়টা মানুষের অন্তরের একটা ভাব। আমি তো ছোটবেলায় যা করেছিলাম... ( হাসি )। তখন আমি খুব ছোট, বাবার সঙ্গে বেড়িয়েছি, বাবা চকলেট কিনে দিয়েছে। একজন মধ্যবয়স্ক লোক আমার থেকে চকলেটটা নিয়ে নিল। আমি তো বাবার হাত ছেড়ে দৌড়ে গিয়ে ওনার হাত থেকে চকলেটটা নিয়ে তারপর শান্ত হলাম। একটা ছোট বাচ্চার থেকে কেউ চকলেট কেড়ে নেয় বলো? ( হাসি )...
আদ্যোপান্ত সংসারী সন্দীপ্তা নাকি বাঁধনছাড়া একজন মানুষ?
খুব একটা সংসারী না। তবে, আমার মনে হয় সংসার শব্দটার অনেক অর্থ আছে। আমার কাছে যে সংসারী তোমার কাছে সে নাও হতে পারে। আমি যেমন রান্না পারি না। কিন্তু ঘরের কাজ, বাবা মায়ের অনেক কাজ আমি করে দি। আমরা মেয়েরা তো দশভূজা, তাই সংসার শব্দটা আমার কাছে এটাই যে সবদিক সামলে চলে।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/06/s4.jpg)
মেয়েদের কি একটু বেশি সংসারী হতে হয় ছেলেদের থেকে?
আমি তো বলব দুজনের সমান ভাগ থাকা উচিত। একজনের দ্বারা সংসার সামলানো একেবারেই সম্ভব না। তাঁর একটাই কারণ, সবকিছু একজন যদি সামলায় তাহলে কিন্তু ঘেঁটে যাবে।
লোকে কী বলবে? এটার পরোয়া করে সন্দীপ্তা?
কোনওদিন না। এটা যদি আমি ভাবিই না, তাহলে এই ইন্ডাস্ট্রিতে একদম টিকতে পারব না। লোকের কথা শুনে লাভ নেই। হ্যাঁ, তারা যদি আমার অভিনয় নিয়ে কিছু বলে যে এটা হলে ভাল হত তবে আমার শুনতে কোনও অসুবিধা নেই।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/06/s5.jpg)
সত্যিই কি শুধুই রমণীর গুণে সংসার সুখের হয়?
কোনওভাবেই না। তুমিই বলো তো, একটা মেয়ে সবদিক থেকে একটা সংসারকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে কিন্তু বাকিরা সেটা করছে না তাহলে? 'নষ্টনীড়' তো এটাই বলছে, যে একজন মেয়ের গুণেই সবকিছু ঠিক হয় নাকি। আমার তো মনে হয়, না!
ছেলেদের কি #Metoo-তে ঘোরতর আপত্তি?
না, সেটা বলব না। তবে ট্রেলারে দেখে থাকবে একজন ছেলে বলছে, তোরা সবেতে এত মি টু ব্যবহার করিস কেন বল তো। আমার মনে হয়, এই যে একটা পয়েন্ট তৈরি হয়েছে না, এটাকে অনেকে খারাপ ভাবে নেয় এবং বদনাম করে। ছেলেদের দোষ না এটা। একটা জেনারেল আইডিয়া তৈরি হয়ে যায় জানো তো। এই যে একটা টার্ম ধরো, তোরা এত ন্যাকা কেন? বা মেয়েদের এত সমস্যা কেন, সব মেয়েরা একরকম না। কিন্তু একটা আইডিয়া প্রেজেন্ট হয়ে যায়।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/06/s6.jpg)
সন্দীপ্তা নাকি গম্ভীর?
হাহা! আগে আমার বন্ধুরা আমায় স্নব বলতো... ( হাসি )। এটার একটা গল্প আছে জানো তো। আমায় দেখতেই একটু গম্ভীর। বড় বড় চোখ, টিকালো নাক। আমার নাকি খুব অহংকার! আমি এসবও শুনেছি। কেউ কেউ বলেছে আমার আড়ালে যে সন্দীপ্তার তো খুব এই ওই সেই। তবে, না গো আমি যেমন খুব গম্ভীর না তেমনই আবার খুব একটা ছ্যাবলা নয়। যেখানে খুব আন-প্রফেশনাল ভাবে কাজ হয় সেখানে আমি আমার এই সিক্রেট ফান্ডা ব্যবহার করি।
সন্দীপ্তার কাছে ফেমিনিস্ট শব্দটার অস্তিত্ব আছে? থাকলে সেটার ব্যাখ্যা কী?
আমি ফেমিনিজম শব্দটায় বিশ্বাসী নয়। আমি সমানে সমানে বিশ্বাসী। তবে, একটা কথা কী বলো তো, আমাদের দেশের এমন কিছু জায়গা আছে যেখানে মেয়েদের দমিয়ে রাখা হয়। তাঁদের কণ্ঠ রোধ করা হয়। তাঁদের জীবন নিয়ে যদি কেউ কথা বলে, তবে সে ফেমিনিস্ট কেন? অথবা সেই মানুষটাই যে পুরুষদের অথবা ট্রান্সদের অধিকার নিয়ে কথা বলবে না, এটাও নয়।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/06/s7.jpg)
ট্রেলার দেখে অনেক সংসারী মানুষদের বক্তব্য, স্বামীদের নাকি বিশ্বাস করা যায় না সহজে... কোনও বক্তব্য?
সন্দেহ জিনিসটা খুব খারাপ। একবার ঢুকে গেলে না, সাংঘাতিক। সন্দীপ্তা সহজে কাউকে অবিশ্বাস করে না। আর অপর্ণাও তাঁর স্বামীকে যথেষ্ট বিশ্বাস করে। আমি তো, বলব নির্দিষ্ট একটা সময় অবধি বিশ্বাস রাখা দরকার।