Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

'নেতাজি' ধারাবাহিকে অভিনেত্রী হয়ে এলেন শরৎচন্দ্র বসুর নাতনি

Netaji: তাঁর পরিবার ও পরিবারের আগের প্রজন্মের কথা উঠে আসছে এই ধারাবাহিকে। এবার সেই ধারাবাহিকেরই একটি চরিত্র হয়ে এলেন পিয়ালী রায়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Sarat Chandra Bose granddaughter joins cast of Netaji TV biopic on Zee Bangla

শরৎচন্দ্র বসুর দৌহিত্রী পিয়ালী রায়। ছবি সৌজন্য পিয়ালী

বিষয়টা একটু নাটকীয় লাগলেও এটাই সত্যি। সম্প্রতি 'নেতাজি' ধারাবাহিকে অভিনেত্রী হয়ে এলেন ওই পরিবারেরই সদস্য। শরৎচন্দ্র বসু ছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বড় দাদা। তাঁর দৌহিত্রী, পিয়ালী রায় সম্প্রতি এসেছেন ধারাবাহিকে, একটি বিশেষ চরিত্রের অভিনেত্রী হিসেবে। প্রায় তিন দশক ধরে তিনি কলকাতায় মঞ্চাভিনেত্রী। মূলত ইংলিশ থিয়েটারেই অভিনয় করেছেন। পাশাপাশি বাংলা মঞ্চ এবং পর্দাতেও কাজ করেছেন।

Advertisment

নেতাজির জীবন অবলম্বনে টেলিপর্দায় যে চিত্রায়নটি দেখছেন দর্শক, সেখানে উঠে আসছে তাঁরই পরিবারের গল্প। এই ধারাবাহিক সম্পর্কে পিয়ালীর কী অভিমত তা খোলাখুলি জানালেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায়।

Sarat Chandra Bose granddaughter joins cast of Netaji TV biopic on Zee Bangla ধারাবাহিকে শরৎচন্দ্র বসু চরিত্রের অভিনেতা ধ্রুব সরকার ও সুভাষচন্দ্র বসু চরিত্রের অভিনেতা অভিষেক বসু-র সঙ্গে পিয়ালী রায়। ছবি সৌজন্য: পিয়ালী

আরও পড়ুন: বৃহন্নলাদের মাতৃত্বের গল্প বলবে নতুন ধারাবাহিক

ধারাবাহিকটি তো আপনি ও আপনার পরিবারের সকলেই দেখছেন। আপনার কি মনে হয় খুব বেশি অতিনাটকীয়তা রয়েছে?

দেখুন, নাটকীয়তা তো থাকবেই। কারণ হাজার হোক, এটা একটা সিরিয়াল। অর্থাৎ অনেকটা সময় ফুটেজ দিতে হচ্ছে, সপ্তাহে প্রায় তিন ঘণ্টা। আর এটা তো একটা ফিকশনাল ডেপিকশন। তাই এখানে যা যা চরিত্র দেখেছেন বা দেখছেন, প্রত্যেকটা চরিত্র যে ছিল, সেটা তো আমরা বলতে পারি না। সিরিয়ালের মাধ্যমে গল্প বলতে গেলে অনেক সিচুয়েশন তৈরি করতে হয়। ওরা সেটাই করছে। আমার মনে হয় ওরা চেষ্টা করছে যতদূর সম্ভব। এই সিরিয়ালটা সেভাবে গ্ল্যামারাইজড নয় কিন্তু তার পরেও দারুণ একটা ফ্লেভার রাখছে। বোস বাড়ির সংস্কৃতি ভালভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। আর দর্শক কিন্তু গ্রহণ করছে। অনেকেই আমাকে বলেন যাঁরা সাড়ে আটটায় মিস করে যান তাঁরা সাড়ে এগারোটায় দেখেন। আর সিরিয়ালের রেটিংও খুব ভাল। নিশ্চয়ই মানুষের ভাল লাগছে বলেই দেখছেন। প্রায়ই আমার মা-কে এসে অনেকে জিজ্ঞাসা করেন, এটা কি ঠিক, ওটা কি হয়েছিল। এটা তো একটা বিরাট সাকসেস এই সিরিয়ালের জন্য। কমার্শিয়াল না হয়েও সোব্রাইটি রেখে এক বছর ধরে চালানো খুব শক্ত।

Piali Ray in the play Whose Life Is It Anyway 'হুজ লাইফ ইজ ইট এনিওয়ে' নাটকের মুখ্য চরিত্রে পিয়ালী রায়।

জি বাংলা টিমের সঙ্গে আপনার আলাপ হল কীভাবে?

আমার সঙ্গে অনিরুদ্ধর (অনিরুদ্ধ ঘোষ) পরিচয় ছিল অনেকদিন। কারণ আমি আসলে একজন থিয়েটার পার্সন। বহু বছর থিয়েটার করছি। প্রায় তিন দশক ধরে অভিনয় করছি। আমার পরিবারে আমিই একমাত্র যে অভিনয় জগতে এসেছে। মঞ্চে শুধু অভিনয় নয়, আমি পরিচালনাও করেছি। তাই আমার একটা লং এক্সপেরিয়েন্স আছে ইন পারফরম্যান্স অ্যান্ড ডিরেক্টিং। আমি নিজের পরিচালনায় পিটার ব্রুকের 'মহাভারত' করেছিলাম। সেখানে আমি দ্রৌপদীর ভূমিকায় অভিনয় করতাম। আরও অনেক ইংরেজি নাটকে অভিনয় করেছি। ২০১৮-তে খুব বড় প্রোডাকশন ছিল 'হুজ লাইফ ইজ ইট এনিওয়ে'। ওই বছরই ইউদ্যানাসিয়া বা স্বেচ্ছামৃত্যুকে বৈধতা দেওয়া হয় ভারতে। নাটকটা ওই বিষয় নিয়ে। দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'ব্যোমকেশ বক্সি'-তে কাজ করেছি। বাংলা নাটকও করেছি কিন্তু সংখ্যায় কম। যেমন 'চুপকথা'-র 'জন্মদিন' নাটকের অনেকগুলো শো করেছি। ফেব্রুয়ারি-তে আমার নতুন প্রোডাকশন আসছে-- 'ডিয়ার লায়ার'। জর্জ বার্নার্ড শ আর তাঁর প্রেমিকা মিসেস প্যাট্রিক ক্যাম্পবেল-এর মধ্যে চিঠিপত্র নিয়ে নাটক। অনেকটা 'তুমহারি অমৃতা'-র মতো... অনেকদিন ধরে থিয়েটারের কাজটা করছি, অনেকেই আমাকে চেনেন। সেই সূত্রেই পরিচয় হয়েছে।

Piali Ray in Peter Brook's Mahabharat পিটার ব্রুকের 'মহাভারত'-এ দ্রৌপদীর ভূমিকায়।

ধারাবাহিকে আপনার চরিত্রটা নিয়ে একটু বলুন...

বাণী বলে একটি নতুন চরিত্রকে নিয়ে এসেছে ওরা যারা বোস পরিবারের অতিথি হয়ে আসে। এই মেয়েটির সঙ্গে সুভাষের বিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছে পরিবারের কেউ কেউ। আমি বাণীর ঠাকুমার চরিত্রটা করছি।

নেতাজির জীবনে সত্যিই এমন কেউ ছিলেন?

দেখুন, বাণী বা সর্বাণী বলে কেউ কখনও এসেছিলেন কি না সেটা আমি জানি না। কিন্তু এটা জানি, আমি আমার মায়ের কাছে জেনেছি যে সেই সময় সুভাষের বিয়ে দেওয়াটা অনেকেরই ইচ্ছে ছিল। যাতে তার জীবনে স্থিতি আসে। তখন তো আর সবাই ভাবেননি যে একদিন তিনি এত বড় দেশনায়ক হবেন। তাঁরা দেখতেন, দেশের কাজে এতটাই জড়িয়ে পড়ছেন। যদি সংসারবিমুখ হয়ে যায়, তাই তাঁরা হয়তো ভেবেছিলেন যে বিয়ে দিলে সেটল করে যাবেন। দায়িত্ব নেবেন। কিন্তু সেই জন্য তার কিছু সম্বন্ধ হয়েছিল কি না, সেটা পুরোপুরি জানা নেই। তাদের কোনও নাম জানা নেই। সিরিয়ালে ওরা যেটা তৈরি করেছে, সেটা আমি বেসলেস বলতে পারি না কারণ সত্যিই তো সুভাষের বিয়ে নিয়ে পরিবারের মধ্যে আলোচনা হয়েছিল। এখন এগুলো তো ব্যক্তিগত জীবন। রেকর্ডেড ইতিহাস নেই। কিন্তু সিরিয়ালে যখন ওরা ডেপিক্ট করতে যাচ্ছে, তখন একটা চরিত্র তৈরি করতে হবে, তাকে একটা নামও দিতে হবে। ওরা বাণী নামটা রেখেছে। তবে ওরা কিন্তু আমাদের সঙ্গে অনেক আলোচনা করেই এটা করেছে। আমার সঙ্গে অনেক কথা হয়েছে অনিরুদ্ধর। আমার মায়ের সঙ্গে এসেও কথা বলেছে। আমার মা হলেন শরৎ বসুর মেয়ে, রমা রায়।

Sarat Chandra Bose granddaughter joins cast of Netaji TV biopic on Zee Bangla 'নেতাজি' ধারাবাহিকে বাণীর ঠাকুমার চরি্ত্রে পিয়ালী।

এই টেলিভিশন জগৎ, সিরিয়াল, সামগ্রিকভাবে এই ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে আপনার কী মতামত?

একটা জিনিস ভাল যে এই ইন্ডাস্ট্রিটা ফ্লারিশ করছে। প্রচুর নতুন সিরিয়াল শুরু হচ্ছে। যেটা আমি দেখছি, এদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যে প্রচুর কমবয়সি ছেলেমেয়েরা আসছে। এই ইন্ডাস্ট্রির একটা খুব ভাল দিক হল, অনেক ট্যালেন্ট বেরিয়ে আসে। যারা ফিল্মে প্রথমেই চান্স পাচ্ছে না, তাদের অনেকে সিরিয়ালে কাজ করে। পরবর্তীকালে তাদের সেই কাজ দেখিয়েই ফিল্মে চান্স পায়। এটা কিন্তু খারাপ জিনিস নয়। আর এই ইন্ডাস্ট্রিতে খুব ভাল ইনভেস্টমেন্ট আছে। যারা এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করে, তারা ভাল রোজগার করছে। এটা বম্বেতে অনেক আগে থেকেই ছিল। গত এক দশকে বাংলা সিরিয়াল ইন্ডাস্ট্রি খুব ফ্লারিশ করেছে। এটা বাংলার ইকনমির জন্য ভাল। যারা দশটা-পাঁচটা কাজ করতে চায় না, অন্য রকম কোনও কাজ করার ইচ্ছে। তারা কিন্তু এখানে সুযোগ পাচ্ছে। তবে এটাও আমি বলব, বেশিরভাগ সিরিয়ালের স্ট্যান্ডার্ড ভাল নয়। কিন্তু এটাও ঠিক যে এখন এতগুলো সিরিয়াল রয়েছে, দেখার জন্য অনেক চয়েস আছে। আর এমন কোনও বাড়ি বোধহয় নেই, যেখানে একজনও কোনও একটি সিরিয়ালও দেখেন না।

Bengali Serial Bengali Television
Advertisment