/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2018/04/2018-04-21-1.jpg)
একান্ত সাক্ষাৎকারে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়
আপনি সেলেব কিড। এটা আপনার কেরিয়ারে ও জীবনে কতটা প্রভাব ফেলেছে?
শাশ্বতঃ ছোট থেকেই যেহেতু এই পরিবেশের সঙ্গে পরিচিত ছিলাম তাই আলাদা করে ‘সেলেব’ শব্দটা যাপনে নেই। উত্তমকুমারও শুটিংয়ে যায়, বাবাও কাজে যায়। তবে স্টুডিয়োতে গেলে প্রচুর লোকে ভালোবাসত। আর বাবা গোড়াতেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, কে আপন কে পর। তাই মানুষ চেনার অভিজ্ঞতা অনেক ছোট থেকেই আছে। তবে কাজ করতে এসে বুঝেছিলাম প্রতি পদে বাবার সঙ্গে তুলনা হবেই।
আপনি অভিনয় করবেন এটা ভেবেই এগিয়েছিলেন? অভিনয় করতে আসার কারণ কী?
শাশ্বতঃ না না, জীবনে আমি কী করবো তাই জানতাম না। এ নিয়ে একটা মজার গল্প আছে। পাড়া কালচারে যারা মানুষ হয়, বিশেষ করে ছেলেরা, তারা রকে বসবে এটাই স্বাভাবিক বলে ধরে নেওয়া হয়। আমিও তার বাইরে নই।
তবে অভিনয়ে আসার কারণটা একটু আলাদা, অদ্ভুতও বলা চলে। পরিকল্পনা করে অভিনয়ে আসিনি। হঠাৎ একদিন বাবা বললেন তুই দুপুরে রেডি থাকিস একটু বেরোবো। তখনও জানিনা কী বিপদ আসছে। দুপুরে একটা রিসর্টে নিয়ে গেলেন বাবা। প্যাডেল বোট ভাড়া করে একদম জলের মধ্যিখানে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাস করলেন, কী করবি জীবনে? মুখ ফসকে বেরিয়ে গেল অভিনয়। ব্যাস! তারপরেই জোছন দস্তিদারের কাছে অভিনয় শিক্ষার শুরু।
যে কারণগুলোর জন্য অভিনয়জগতে এসেছিলেন, সেই কারণগুলো কি আজও আছে?
শাশ্বতঃ না, একদমই না। (হেসে) সবথেকে কঠিন নায়িকাদের সঙ্গে রোম্যান্টিক দৃশ্যে পার্ট করা।
আপনার কি মনে হয়, যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও অভিনয় জগতে আপনি একটু পরেই গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছেন?
শাশ্বতঃ আমি ঠিক জানিনা। আমার মনে হয় সবকটা অভিজ্ঞতারই প্রয়োজন ছিল। প্রথম যিনি আমায় সুযোগ দিয়েছেন তিনিও আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ, দ্বিতীয় জনও ভরসা করেছিলেন বলেই আজ এই জায়গাটা এসেছে। আজ এই পুরো পথচলাটাই আমার গ্রহণযোগ্যতা। আমার সহকর্মীরা যে সম্মান দেন সেটাই আমার যোগ্যতার পরিমাপ। ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংলাপ মনে পড়ে, ‘‘কম্পাট্মেন্টাল পাশ করসি’’। আমি যা পেয়েছি সেটা বোনাস, ও আমার পাওয়ার কথা নয়। দেরিতে হলেও পেয়েছি, অনেকে সেটাও পায়না।
আপনার সম্পর্কে একটা অভিযোগ আছে, আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করাটা খুব সহজ নয়!
শাশ্বতঃ খুবই সহজ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা, যদি তিনি একটু সময়মতো যোগাযোগ করেন। মানুষ এখন আসলে প্রয়োজনের থেকে বেশিই পাচ্ছে। আর সমস্যাটা সেখানেই। কিছু মানুষ এ নিয়ে অভিযোগ করেন। কিন্তু সবার কাছে তো আমি সবসময়ে পৌঁছে যেতে পারি না।
মেঘে ঢাকা তারা আপনার কেরিয়ারে কি একটা মাইলফলক?
শাশ্বতঃ নিশ্চিত ভাবেই ! এখনও পর্যন্ত ‘মেঘে ঢাকা তারা’ আমার কেরিয়ারের শ্রেষ্ঠ ছবি। আমার করা সব থেকে কঠিন চরিত্র। আর আমি মানুষটাকে দেখিনি তাই নামভুমিকায় অভিনয় করাটা বেশ শক্ত ছিল। সেই সময়কার কিছু মানুষ, যাঁরা ঋত্বিক ঘটককেও দেখেছেন, আবার ছবিটাও দেখেছেন, তাঁরা বলেছেন ছবিটা ভালো লেগেছে।
শবর তো বক্সঅফিসে ভালো সাড়া ফেলেছিল?
শাশ্বতঃ মারাত্মক ! শবরের এই সিরিজটা দর্শকদের ডিম্যান্ডেই বানানো। তাঁরা যে উৎসাহ দেখিয়েছেন সেটা শুনেছি। তবে আমি যেদিন হলে গিয়েছিলাম দেখার জন্য মানুষ সেদিন একটু চুপ ছিলেন। (হেসে) হয় বয়স্ক মানুষেরা ছিলেন নয় তো আমি সিনেমা হলে উপস্থিত ছিলাম বলে কিছু বলেননি।
শবরের এই প্রিক্যুয়াল কেন হিট করল বলে মনে হয়?
শাশ্বতঃ যে কোনও ছবির ক্ষেত্রেই প্রতিক্রিয়া তৈরি হতে সময় লাগে। আর শবরের এই প্রিক্যুয়ালের মধ্যে সেই ওজন ছিল। অরিন্দম ছবির চিত্রনাট্য টানটান রেখেছিল। তাছাড়া আমার ধারণা শবর তার জমি আগেই বানিয়ে রেখেছিল।
সামনে আর কী কী কাজ আছে?
শাশ্বতঃ বেশ কিছু কাজ আছে। ডেনমার্কের একটা ছবি করছি। দিল্লিতে তার শুট। এছাড়াও চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়ের একটা ছবি করছি। ভীষণ ভালো ছবি। আর কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের ছবিতেও দেখা যাবে। তাতে ঋত্বিক আছে, আবিরও রয়েছে। আর একটা ছবির জন্য মুখিয়ে আছি সেটা হল বসু পরিবার। বাংলা ছবিতে দাগ রেখে যাবে সুমনের এই ছবি।