Satyajit Ray: সত্যজিৎ রায়, তিনি যে ছবিতেই হাত দিয়েছেন, সেটাই যেন সোনা হয়ে গিয়েছে। তিনি যেভাবে ক্রাফটস এবং আর্ট দিয়ে ছবি বানাতেন, তারপর এটুকু বলাই যায়, ছবি নির্মাণের আগে তিনি থিওরি বেশি করে বুঝতেন। সত্যজিতের সিনেমা মানেই, তাতে এমন কিছু থাকতো, যেটি সমাজকে নাড়িয়ে দিয়ে যেত। সম্প্রতি, তাঁর অন্যতম ক্লাসিক কাল্ট ছবি, অরণ্যের দিনরাত্রি কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিমিয়ার হয়। কিন্তু, তাঁর নিজের জীবনে এমন ছবি আছে, যেটি তাঁর ইচ্ছে বিরুদ্ধ কাজ।
সত্যজিৎ রায়, যিনি তাঁর প্রতিটা ছবিতে সোনার কাঠি ছুঁয়ে দিতেন। কিভাবে শট নেবেন, কিভাবে প্রত্যেকজন অভিনেত্রীকে অভিনেতাকে স্ক্রিন স্পেস দেবেন, সবটা নিজের মতো করে গুছিয়ে নিতেন তিনি। ফ্লোরে তিনিই থাকতেন, মাস্টার। তাঁর নির্দেশ মতোই ক্যামেরা রোলিং হত। কিন্তু, এমন একটি ছবি আছে, যা মন থেকে সত্যজিৎ রায়ের একেবারেই পছন্দ নয়। তিনি সেই ছবিটা বানাতে উপভোগ করেছিলেন বটে, তবে নিজের জীবনের অন্যতম খারাপ ছবি হিসেবেও সেই ছবির নাম নিয়েছিলেন তিনি। অপুর ট্রি লজি যেমন তাঁর অনন্য কীর্তি, চারুলতা আছে সেই তালিকায়। কিন্তু, এই ছবি তাঁর মন জয় করতে পারেনি।
প্রসঙ্গে, উত্তম কুমারের সঙ্গে সত্যজিৎ রায় সিনেমা করেন মাত্র দুটি। একদিকে নায়ক, অন্যদিকে চিড়িয়াখানা। নায়ক ছবিতে উত্তমকে কেউ ভুলতে পারবেন বলে মনে হয় না। কালো, রঙের স্যুট সঙ্গে কালো সানগ্লাস - গোটা ট্রেন জার্নিতে উত্তম কুমার যেভাবে স্ক্রিনে আসলেন, প্রত্যেকের বুকের ভিতর ঢিপ ঢিপ করতে শুরু করল। উত্তম কুমার, ভয়ঙ্কর সুন্দর কিছু দৃশ্য উপহার দিয়েছেন। নায়কের সময় সত্যজিৎ যে আর কারওর কথা ভাবেননি, সেটা কিন্তু প্রমাণিত। অন্যদিকে... চিড়িয়াখানা। এই ছবি গোয়েন্দা ভিত্তিক একটি ছবি। ব্যোমকেশের একটি ভাগ। কিন্তু এই ছবিকেই তাঁর খারাপ ছবি হিসেবে দেখেন তিনি?
সত্যজিৎ এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন এই প্রসঙ্গে। তিনি বলেছিলেন, চিড়িয়াখানা তাঁর একেবারেই পছন্দ ছিল না। বললেন, "আমার চয়েস ছিল না চিড়িয়াখানা। এমন না, যে আমি এই ছবি বানাতে গিয়ে কোনও আনন্দ উপভোগ করিনি। তবে, একটা বিষয় যে আমি ঠিক এই ছবিটার গোয়েন্দা ভাগের সঙ্গে কানেক্ট করতে পারিনি। গোয়েন্দা ছবির শেষটা একেবারেই অন্যরকম হয়। কিন্তু চিড়িয়াখানার ক্ষেত্রে সেটা উল্টেপাল্টে গিয়েছিল।"