'অপরাজিত'তে উমার চরিত্র নিয়ে ভুল তথ্য! অনীক দত্তকে কটাক্ষ 'পথের পাঁচালি'র দুর্গার

'দুর্গা' উমা দাশগুপ্তর মেয়ে শ্রীময়ী সেন রামের একটি ফেসবুক পোস্ট থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত।

'দুর্গা' উমা দাশগুপ্তর মেয়ে শ্রীময়ী সেন রামের একটি ফেসবুক পোস্ট থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত।

author-image
IE Bangla Entertainment Desk
New Update
Anik Dutta, Aparajito, Uma Dasgupta, Pather Panchali's Durga, পথের পাঁচালির দূর্গা, অনীক দত্ত, উমা দাশগুপ্ত, bengali news today

অনীক দত্তর 'অপরাজিত'তে তথ্য বিকৃতির অভিযোগ 'দুর্গা' উমা দাশগুপ্তর

সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে 'অপরাজিত'র ভূয়সী প্রশংসা। পরিচালক অনীক দত্ত ও অভিনেতা জিতু কামালকে কুর্নিশ জানিয়েছেন দর্শকরা। বাংলার বাইরে মোট ৮টি রাজ্যে রমরমিয়ে চলছে এই সিনেমা। ইতিমধ্যেই কোটি টাকার ব্যবসাও করে ফেলেছে। কিন্তু এমন অভূতপূর্ব সাফল্যের পরও 'অপরাজিত'তে উমার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্বয়ং সত্যজিৎ রায়ের পথের পাঁচালির দুর্গা ওরফে উমা দাশগুপ্ত। শুধু তাই নয়, তাঁকে নিয়ে তথ্য বিকৃতির অভিযোগও তুলেছেন মাণিকবাবুর অভিনেত্রী।

Advertisment

'অপরাজিত'তে দেখানো হয়েছে, উমা চরিত্র নির্বাচনের সময়ে এক শহুরে মেয়ে অপরাজিত (সত্যজিৎ) রায়ের বাড়িতে আসে। এবং তার গ্ল্যামারাস বেশভূষা দেখে তা পরিচালকের পছন্দ হয় না। শেষমেশ বিমলা (বিজয়া) রায় তাঁকে ঘরে নিয়ে গিয়ে একটা সাধারণ শাড়ি পরাতেই উমার (দুর্গা) চরিত্রের জন্য পছন্দ হয়ে যায় তাকে। আর এই দৃশ্য নিয়েই আপত্তি তুলেছেন ‘পথের পাঁচালি’র দুর্গা উমা দাশগুপ্ত খোদ। 'ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা'র তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কথায়, "তাঁর চরিত্র নির্বাচনের সময়ে সত্যজিৎ রায়ই তাঁদের বাড়িতে এসেছিলেন। উমাদেবী তখন বেলতলা হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। ফ্রকের সঙ্গে মুক্তোর মালা পরেছিলেন, যা দেখে মাণিকবাবু বলেছিলেন- এসব মুক্তোর মালা চলবে না। বিজয়া রায় সেখানে ছিলেন না। এবং শুটিং শুরু হওয়ার পরেই তাঁর সঙ্গে দেখা হয় মাণিক-গৃহিণীর। পরে যখন একদিন ট্রামে করে উমাকে নিজের বাড়ি নিয়ে যান সত্যজিৎ রায়, তখন বিজয়াদেবী তাকে শাড়ি পরিয়ে দিয়েছিলেন সাধ করে। এরপর মাণিকবাবুর পরিবারের সঙ্গে তাঁর ভাল সম্পর্কও গড়ে ওঠে। তবে 'অপরাজিত'তে তথ্যবিকৃতি, আর অনীক দত্তর মতো পরিচালকের থেকে এমনটা আশা করা যায় না। উনি চাইলে একবার কথাও বলতে পারতেন।"

ঘটনার সূত্রপাত, উমা দাশগুপ্তর মেয়ে শ্রীময়ী সেন রামের একটি ফেসবুক পোস্ট থেকে। 'অপরাজিত' দেখার পরই এই বিষয়টি গোচরে নিয়ে আসেন তিনি। লেখেন, "পরিচালকের এমন প্রয়াস প্রশংসার দাবীদার। এমনকী, সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে জিতু কামালের চেহারার মিল হতবাক হওয়ার মতোই। তবে একটি বিষয় উল্লেখ করতে চাই যে, আমার মা উমা দাশগুপ্ত ('পথের পাঁচালি'র দুর্গা) নিয়মিত থিয়েটার করতেন। আর তাঁর স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সত্যজিৎ রায়ের বন্ধু ছিলেন। সেই প্রেক্ষিতেই তিনি দুর্গার চরিত্রের জন্য মানানসই কাউকে খুঁজে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। এরপর আমার দাদুর বাড়িতেই দাদু ও পরিবারের সকলের উপস্থিতিতে পরিচালকের সঙ্গে একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেখানেই সর্বজয়া করুণা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার মা উমা দাশগুপ্তর মুখের অদ্ভূত মিল পান তিনি।"

publive-image
Advertisment

<আরও পড়ুন: ‘বরটা বড়ই বোকা’, মনের দুঃখে লিখলেন রূপঙ্করের স্ত্রী চৈতালি>

শ্রীময়ী আরও জানান যে, "তখনকার দিনে বাঙালি পরিবারের কোনও মেয়ে ছবিতে অভিনয় করছে, বিষয়টিকে খুব একটা ভাল নজরে দেখা হত না। আর আমার দাদুও ভীষণ রক্ষণশীল ও কড়া প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। তিনি সিনেমার কথা শুনে একপ্রকার না-ই করে দিয়েছিলেন। তবে পরে সত্যজিৎ রায়ের জোড়াজুড়িতে তিনি রাজি হয়ে যান। তবে তার বিনিময়ে একটা টাকাও নেননি আমার দাদু। আর সেইজন্য রায়বাবুও খুব খুশি হয়েছিলেন। কারণ, এমনিতেই সিনেমাটা তৈরির সময়ে অর্থাভাব ছিল। তবে 'অপরাজিত' ছবিতে এরকম কোনও দৃশ্যই রাখা হয়নি।" তাঁর আক্ষেপ, "পরিচালক আরেকটু ভাল করে রিসার্চ করতে পারতেন।"

publive-image
'অপরাজিত'র উমার চরিত্রে অনুষা বিশ্বনাথন

প্রসঙ্গত, ১৯৫৫ সালে বিশ্ব চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ‘পথের পাঁচালি’ নামক যে ‘মাস্টারপিস’ তৈরি করেছিলেন সত্যজিৎ রায়, তার নেপথ্যে কতটা স্ট্রাগল ছিল? সেই গল্পই ২০২২ সালে এসে পর্দায় তুলে ধরেছেন পরিচালক অনীক দত্ত। তো সেই প্রেক্ষিতে সেই কালজয়ী সিনেমার চরিত্র নির্বাচনের দৃশ্য অতি গুরুত্বপূর্ণ-ই বটে। এবার প্রশ্ন, আপত্তিটা কোথায় উঠেছে? আসা যাক সে প্রসঙ্গে।

publive-image

'অপরাজিত'তে উমার চরিত্র নির্বাচন নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, সেই প্রেক্ষিতে অনীক দত্তর সঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার তরফে যোগাযোগের চেষ্টা হলে, তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Anik Dutta Jeetu Kamal satyajit ray tollywood Aparajito pather panchali Entertainment News