তিনি ছিলেন স্বপ্নের পরিচালক। ইন্ডাস্ট্রির কাছের মানুষদের জন্য মানিক দা হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। আর সৌমেন্দু রায়ের কাছে একটা আস্ত লাইব্রেরী। যার থেকে শেখা যায়। যাকে দেখে সিনেমার অন্তরালে লুকিয়ে থাকা সমস্ত অর্থ খুঁজে বের করা যায়। সেই সৌমেন্দূ আজ আর নেই।
Advertisment
আজই, ইহলোক ছেড়ে পাড়ি দিয়েছেন পরলোকে। সত্যজিৎ এর সবথেকে বেশি ভরসা যোগ্য এই মানুষটি আজ না ফেরার দেশে। বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। বয়স্ক হওয়ার কারণে নানা রোগে ভুগছিলেন। একসঙ্গে কাজ করেছেন নানা ছবিতে। তবে, শুরুটা ছিল ১৯৫৪ সালে। ঠিক যখন সরকারের হস্তক্ষেপে ফের একবার, শুরু হল পথের পাঁচালীর শুটিং। তাঁকে ইউনিটে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
কম বয়স, এদিকে সত্যজিৎ রায়ের ইউনিট। সঙ্গে আরও দুই পরিচালক, সুব্রত মিত্র এবং বংশী চন্দ্রগুপ্ত। তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এর সময় বেশ ঘাবড়ে ছিলেন তিনি। সৌমেন্দু এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, শুরুর দিন। কিছুই জানতেন না। মিস্টার রায়ের সঙ্গে কথা বলতেও ভয় পেতেন। তাঁকে ক্যামেরা কেয়ারটেকার হিসেবে ইউনিটে রাখা হয়েছিল। সুব্রত এবং বংশী বাবুর সঙ্গেই যত আতাত ছিল তাঁর। ক্যামেরাম্যান বলেছিলেন, "তখন তো শেখার অন্য রাস্তা ছিল না। খুব একটা লাইব্রেরী ছিল না। সিনেমা দেখার উপায় ছিল না। আমি তাই সুব্রত এবং বংশীদাকে নানা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতাম। ওদের থেকেই শিখতাম, আর কাজও করতাম।"
Advertisment
ভয় কেটেছিল। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একটু পরিণত হয়েছিল। অনেকগুলো দিন পার হয়েছিল। তখন অল্প অল্প কথা বলতেন মানিক দার সঙ্গে। তাদের চোখের সামনে দেখতেন, আর প্রশ্ন করতেন। তবে, এক এবং অনন্য হিসেবে সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরেছিলেন ১৯৬০ সালে। রবি ঠাকুরের জন্ম শতবর্ষে একটি ডকুমেন্টারি বানানোর দায়ভার গ্রহণ করেন মাস্টার রায়। সেদিন থেকেই সৌম্যেন্দু সত্যজিৎ এর সঙ্গে একেবারেই জড়িয়ে গেলেন। সিনেমাটোগ্রাফার জানিয়েছিলেন...
যেমন ছবি রায় বাবু বানাতেন সেটি সবার পক্ষে সম্ভব ছিল না। খুব সাধারণ মানুষ, স্বাভাবিক পরিবেশ কিন্তু অনেক গভীর। এমনকি সৌমেন্দ্যুকে ভাল ইংরেজি সিনেমা দেখার বদলে , উচ্চমানের পেন্টিং এমনকি ভাল ফটোগ্রাফ এগুলো দেখার কথাই বলতেন। সত্যজিৎ এর ডান হাত হয়ে উঠেছিলেন একসময়। বর্ষীয়ান সিনেমাটোগ্রাফার এর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ টলিউড এবং সিনে জগৎ।