মনেপ্রাণে বামপন্থী তিনি। লাল মতাদর্শেই বিশ্বাসী। সায়নী ঘোষের (Sayani Ghosh) সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে উঁকি দিয়ে কিংবা একাধিকবার সংবাদমাধ্যম চ্যানেলের প্যানেলে বক্তব্য শুনে, তা আর বুঝতে বাকি থাকে না। এবার সেই টলিউড অভিনেত্রীই তৃণমূল নেতা মদন মিত্রের (Madan Mitra) সঙ্গে একমঞ্চে। শুধু তাই নয়, সায়নীর মুখে শোনা গেল তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী সম্পর্কে একরাশ প্রশংসাও। রাজনৈতিক মহলের অন্দরে ভ্রু-আন্দোলন অস্বাভাবিক কিছু নয়! আর সেই প্রেক্ষিতেই এবার জোরালো প্রশ্ন উঠেছে যে, বামপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসী সায়নী ঘোষ কি তাহলে তৃণমূলে যোগ দিতে চলছেন?
এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, সম্প্রতি 'জয় শ্রীরাম' স্লোগানের বিরোধিতা করে সায়নী যেভাবে গেরুয়া শিবিরের রোষানলে পড়েছিলেন, তখন কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তার পাশে দাঁড়িয়েছেন। শুধু তাই নয়, অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে বিজেপি নেতা তথাগত রায়ের এফআইআর দায়ের হওয়া থেকে শুরু করে সায়নীর উদ্দেশে হিন্দুত্ববাদীদের খুন-ধর্ষণের হুমকি, যাবতীয় বিষয়েই অভিনেত্রীর সমর্থনে মুখ খুলেছেন মমতা। বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দেগে বলেছেন, "ক্ষমতা থাকে তো সায়নীর গায়ে হাত দিয়ে দেখাক"। 'দিদি'র এমন আন্তরিকতা ভোলেননি সায়নী। শনিবারের অনুষ্ঠানের মঞ্চে সে কারণে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতাও স্বীকার করেছেন অভিনেত্রী।
শনিবার 'শক্তিরূপেণ' নামে ভবানীপুরে একটি মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন সায়নী ঘোষ ও মদন মিত্র। অরাজনৈতিক অনুষ্ঠান হলেও মদন মিত্র ও বর্তমানে সায়নীর অবস্থান দেখে যে, এই প্রসঙ্গে রাজনীতির কথা উঠেই আসে, তা বলাই বাহুল্য। সেখানেই টলিউড অভিনেত্রীর দাবি, দেশের অন্যান্য শহরের তুলনায় বাংলায় মহিলারা নিরাপদ। রাত ২টোয় নিশ্চিতে বাড়ি ফিরতে পারেন তিনি।
অনুষ্ঠানে টলি-অভিনেত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূল নেতা মদন মিত্র বলেন, "এই মুহূর্তে বাংলার প্রতিবাদী কণ্ঠ সায়নী ঘোষ। সায়নী তুমি এগিয়ে চলো। গোটা সরকার, বাংলা তোমার পাশে আছে। সায়নী তো দূরের কথা, একটা কারও গায়ে আঁচ পড়লে গোটা বাংলায় আগুন জ্বলবে। বাংলা বরদাস্ত করবে না এসব।"
ঘাসফুল শিবিরের নেতার প্রতি সৌজন্যতা দেখিয়ে সায়নীও পালটা রসিকতা করে বলেন, "মদনদা অনেক বড় লিডার। সম্মান রেখেই বলছি, মদনদা কিন্তু বাংলার ক্রাশও বটে! এই যে এত সুন্দর আদানপ্রদান পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া কোথাও সম্ভব নয়।" এর পাশাপাশি সায়নী এও বলেন যে, "আমি কোথায় যাব, কার সঙ্গে থাকব। সেটা আমরাই ঠিক করব। পশ্চিমবঙ্গ আলাদা জিনিস! এখানে মহিলাদের যে জায়গা দেওয়া হয়, তা অন্যত্র নেই। বাংলায় থাকি বলে নয়, জীবনে ও কর্মক্ষেত্রেও বুঝতে পেরেছি।"