প্রায় বছর দুই তিন, টেলিভিশন থেকে সরে থাকলে তাঁর কি জনপ্রিয়তা কমে যায়? অন্তত শন বন্দোপাধ্যায়ের ( Sean Banerjee ) জনপ্রিয়তা দেখে সেটুকু বোঝার উপায় নেই। যেই মুহূর্ত থেকে রোশনাই ( Roshnai-Star Jalsa ) এর টিজার প্রকাশ্যে এসেছে অভিনেতাকে টেলিভিশনে ফিরে পেয়ে খুশি অনেকেই।
নতুন ধারাবাহিক থেকে টেলিভিশনে ফেরা, শন বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা যোগাযোগ করলেই অভিনেতা জানান তিনি বেশ উচ্ছ্বসিত। একেই মাঝে অনেকটা সময় গ্যাপ পরে গিয়েছে। সিরিজ এবং সিনেমা করলেও মনটা টিভি টিভি করছিল। অভিনেতা হাসিমুখেই নানা উত্তর দিলেন।
ফের একবার টিভি, দুবছরের গ্যাপ ...
আসলে আমি ভাবছিলাম জানো তো, যে টিভিতে ফিরব। অনেকদিন হয় না কাজ করা। মাঝে সিরিজ সিনেমা করলাম। এর আগেও টিভির অফার পেয়েছিলাম কিন্তু গল্প মনমত হচ্ছিল না। সেকারণেই হ্যাঁ বলি নি। আর এটা সিনেমার ক্ষেত্রেও হয়েছে।
মাঝখানে যে সিরিজ করলে, তখন কি টিভিতে না থাকার কমতি অনুভব হয়েছিল?
দেখো, টিভি হচ্ছে একটা নিদারুণ মাধ্যম। হ্যাঁ, ওয়েব সিরিজ বা যাই করি না কেন সেগুলোর মাধ্যমে কিন্তু রোজ কারওর কাছে পৌঁছে যাওয়া যায় না। যেটা মেগা করলে পারা যায়। আমি তো এটাই ভাবছিলাম যে এতগুলো দিন আমি টিভিতে নেই। কিন্তু প্রমো আসার পর যে ভালবাসা পাচ্ছি, সেটা তো দারুণ। এখনও দর্শক আমায় মনে রেখেছেন এটাই।
যে চরিত্রে তুমি অভিনয় করছ, সেইরকম একটি চরিত্রেই ক্রুশল অভিনয় করছে ঝনক ধারাবাহিকে...দুজনেই তো বাংলার টিভি স্টার? কিছু বক্তব্য...
তুমি ঠিকই বলেছ যে ওই সিরিয়ালটার সঙ্গে এর অনেকটা মিল রয়েছে। তবে, এক্ষেত্রে ভাল খারাপের কোনও যুক্তি নেই। ক্রুশল আমাদের বাংলার ছেলে। এখানে কাজ করেছে। আর, আমিও এখানের মানুষ। ওর হয়তো ওই চরিত্রের ধাঁচটা ভাল লেগেছে বলে ও করছে। তবে, আমার চরিত্রটা অনেকটাই আলাদা, এটা আমি হলফ করে বলতে পারি। অ্যাডপশন হলেও অনেক কিছু আলাদা রোশনাইয়ের ক্ষেত্রে।
আজ অবধি যে কয়টা চরিত্র করেছ, চশমা ছাড়া তোমায় দেখা যায়নি, এটা কি ইউএসপি?
হাহা...! অনেকেই বলেন চশমা পরে আমায় বেশ ভাল লাগে। জানি না কেন? এই চরিত্রটা করার আগে আমি বলেছিলাম যে চশমা দিও না। কিন্তু নির্মাতারা শোনে নি। আমায় চশমা দিয়েছে। হয়তো, মানুষের পছন্দ হবে বলেই।
উজান আর ঋষির মতোই 'angry young man' নাকি অন্যকিছু হতে চলেছে এবার?
একদম ভিন্ন কিছু। আসলে, আমি চাইছিলাম অন্যরকম কিছু করতে। তুমি দেখে থাকবে পোশাকের দিক দিয়েও রোশনাইএর শন কিন্তু একদম আলাদা। কিছু তো ফ্যামিলি ড্রামা থাকবেই তবে, হ্যাঁ! ওগুলোর থেকে একদম আলাদা। দেখা যাক কেমন হয়।
সামনেই তো নববর্ষ, প্ল্যান কী?
এখনও অবধি তো কোনও প্ল্যানিং নেই। হয়তো বা শুটিং থাকতে পারে। যেটা প্রমো দেখেছ। সেটার শুটিং করতে যেতে পারি আমরা। আউটডোর হওয়ার কথা আছে। সেই নিয়েই ব্যস্ত থাকব হয়তো। আর সত্যি বলতে গেলে নববর্ষের যে উন্মাদনা যে ভালবাসা সেটা আমার অনেক বড় হয়ে দেখা।
ছোটবেলার নববর্ষ তো স্কুলেই নিশ্চই...
হ্যাঁ! আমি বলছি আমার ছোটবেলার নববর্ষ কেমন কাটত। হোস্টেল রুমে ১০০টা ছেলে, আমরা সবাই মিলে বসে নর্থ ইন্ডিয়ান খাবার খেতাম। এটা ছিল নববর্ষ। বছরে চারমাস কলকাতায় থাকতাম। জুনমাসটা, তারপর ধর ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি। ব্যাস...
তাহলে বাড়ি ফিরে তো নিশ্চই ভীষণ খাতির যত্ন হত, দিদা নিশ্চই রান্না করতেন...?
হ্যাঁ, তখন তো তেরো পার্বণ একসঙ্গে পালন হত। দিদা দারুণ রান্না করতেন। বাড়ি ফিরলে, তখন আলাদাই উচ্ছাস, আনন্দ।
অভিনয়ের ইচ্ছেটা নিশ্চই সুপ্রিয়া দেবীকে দেখেই?
হ্যাঁ, সেটা তো অবশ্যই। দিদা আমার অনুপ্রেরণা। তাঁকে দেখে তো শিখেছি বটেই। আর উনি আমায় বলতেন, অভিনয় করো। বিষয়টাকে সিরিয়াসভাবে নাও। এমনকি এও বলতেন, তোমায় দেখতে সুন্দর, এত লম্বা তুমি...অভিনয়টা শিখছ না কেন! তাই, বেশিরভাগটাই সেখান থেকে পাওয়া।
আজ এতবছর পর, কী মনে হয়..দিদার অভিনয়ের লিগাসী ধরতে পারছ? অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা হল?
দেখো, সত্যি বলতে গেলে তুলনা আসে না। আমি আমার কাজটা মন দিয়ে করি। শেখার শেষ নেই। আজ যদি কোনও কাজের জন্য প্রশংসা পাই আমার খুব ভাল লাগে। কিন্তু, তাঁর মানে এটা নয় যে আমি সেখানেই থেমে যাব। পরের যেটা করব সেটা যেন আরও ভাল হয়। এই বিষয়টা ধরে রাখতে হবে। ভালর কোনও শেষ নেই। তবে, হ্যাঁ! নিজেকে বোধহয় অভিনেতা হিসেবে একটু হলেও প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। এমন কিছু চরিত্র আছে, যেটা করে মনে হয়েছে যে না ভাল করলাম। বাকি, পথচলা এখনও বাকি।