প্যার দোস্তি হ্যায়! এই শব্দটির সংজ্ঞা বলতেই মনে হয় ৯০ এর দশকের 'কুছ কুছ হোতা হ্যায়' সিনেমার কথা। রাহুল - অঞ্জলী - টিনার কলেজ প্রেম থেকে পরবর্তীতে জীবনের মারপ্যাঁচ নিয়েই তৈরি সিনেমা। আর পরিচালক করণ জোহরের জীবনে এক অসামান্য টার্নিং পয়েন্ট। শাহরুখ-কাজল এবং রাণী মুখোপাধ্যায়ের খুনসুটি তথা অভিনয় মন কেরেছিল তৎকালীন থেকে বর্তমান প্রজন্মের সকলেরই। কিন্তু এই সিনেমাতে কাজলের চরিত্র নিয়ে বেজায় চটেছিলেন অভিনেত্রী শাবানা আজমি। রেগে গিয়ে পরিচালককে একরকম ধুয়ে দিয়েছিলেন তিনি!
সিনেমার প্রথম ধাপে অঞ্জলীর চরিত্রের সঙ্গে ম্যাচ করেই ছোট চুল, ছেলেদের ন্যায় জামাকাপড় একরকম টম বয়ের ইমেজের হদিশ মিলেছিল। আর দ্বিতীয় ধাপে তার একেবারেই অন্যরকম আমেজ, তথাকথিত মেয়েদের পোশাক, লম্বা চুল, মেকআপ একেবারেই নারী সুলভ আচরণে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সিনেমার প্রথম অংশেই চোখে পড়ে, অঞ্জলীর রাহুলের ( শাহরুখ খান ) প্রতি গোপন প্রেম। এবং বলাই বাহুল্য মেয়েসুলভ আচরণ ছিল না বলেই রাহুলের হিটলিস্টে ছিলেন না অঞ্জলী। এটিই শাবানাকে রেগে যেতে বাধ্য করেছিল।
করণ এক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের মঞ্চে দাঁড়িয়ে জানিয়েছিলেন, শাবানা আজমি তাকে ফোন করে বলেন আদতে ঠিক কি দেখতে চেয়েছিলেন করণ? একটি মেয়ে তার টম বয় ইমেজ হলেই এমনকি ছোট চুল থাকলেই সে আকর্ষণীয় নয়? আর বড় চুল সুন্দর মেকআপ থাকলেই সে সুন্দরী? এমনকি এও বলেন তোমার ছবি একেবারেই রাজনীতিক পরিসরে সঠিক নয়। এতে অনেক ভুল তথ্য রয়েছে। উত্তরে ক্ষমা চান করণ। তাতেও রাগ কমেনি শাবানার, “বলেন ব্যাস! এটুকুই? আর কিছুই বলার নেই?” করণ ভয়ে ভয়ে উত্তর দিয়েছিলেন “আমি জানি আপনি সঠিক সেই কারণেই ক্ষমা চাইছি।”
প্রসঙ্গত, করণ বলেছিলেন সিনেমার কাস্টিং নিয়েও বেজায় মুশকিলে পড়েছিলেন তিনি। টিনার চরিত্রের জন্য কেউই রাজি হচ্ছিলেন না। পরে আদিত্য চোপড়ার হস্তক্ষেপেই রানী মুখোপাধ্যায় রাজি হন এই চরিত্রে। এমনকি কিছুদিন পর শাহরুখ নিজেও চরিত্রের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছিলেন না, বলেন রাহুলের চরিত্র বেজায় জটিল এবং বিভ্রান্তিকর। সিনেমার প্লট নিয়েও অনেক মন্তব্য করেন শাহরুখ। পরবর্তীতে করণের একটি শোতে শাহরুখ নিজেও বলেছিলেন, এই সিনেমার অংশ না হলেই বোধহয় ভাল হত! মানুষের মনে জায়গা করে নেওয়া একটি ছবি যে এরকম কিছু পরিস্থিতির শিকার হয় সেটাই অবিশ্বাস্য।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন