২৪তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে শুক্রবার দেখানো হয়েছে পরিচালক সুজিত সরকারের ছবি 'অক্টোবর'। তারপরেই তিনি হাজির হয়েছিলেন সাংবাদিকদের সামনে। সিনেমা থেকে সেন্সর, ক্যামেরার সামনে-পিছনের মানুষ - এসব নিয়ে কথা বললেন তিনি। জানালেন, বাংলাতেও ছবি করবেন।
ছবিটিতে ড্যানের চরিত্রে বরুণ ধাওয়ানকে কেন নিয়েছেন, জানতে চাওয়ার আগে নিজেই তা পরিষ্কার করলেন সুজিত। বললেন, "আমি নিজেও ঠিক জানি না বরুণ কীভাবে ছবিটাতে এল। বাকি সব কাস্টিং হয়ে গিয়েছিল, শুধু এই চরিত্রটা বাকি ছিল। আর বরুণ বারবার বলত, ও দেখা করতে চায়। একদিন কলকাতার ফ্লাইট ধরব, ও ফোন করল, বললাম ১০ মিনিটে চলে আয়। একটা হাফ প্যান্ট আর টিশার্ট পরে যেরকম অবস্থায় ছিল চলে এসেছে। ভীষণ অস্থির ছিল, কথা বলতে বলতে চায়ের কাপ, জলের বোতল পড়ে যাচ্ছিল। আমার ঠিক এরকমই একজনকে প্রয়োজন ছিল ড্যানের চরিত্রটার জন্য।"
সুজিত এলে আরও এক 'বাঙালির' কথা চলে আসে, অমিতাভ বচ্চন। তাঁর সঙ্গে সদ্য যে বিজ্ঞাপনের শুটিংটা করলেন... "মিস্টার বচ্চনকে নিয়ে আর কী বলব? সব বলে দিয়েছি (হাসি)। উনি একটা চোদ্দ বছরের বাচ্চা ছেলে। ওঁকে যা কিছু নতুন খেলনা দেবে, নিয়ে নেবেন। তবে ভাল খেলনা দিতে হবে একটা। এবারে আমি বললাম, একটা আর্মি ম্যানের চরিত্র আছে, সর্দারজি সাজতে হবে। খুব খুশি হয়ে বললেন, হ্যাঁ হ্যাঁ! সর্দার হব। আমার মা-দাদু খুব খুশি হতেন (তাঁরা শিখ পরিবারের)। উনি সিঙ্গাড়া খেতে ভালবাসেন, দেখা হলেই আমাকেও খাওয়ান।"
জয়া এবং অমিতাভ বচ্চনের ছবিটা কি হবে না? "ওটা করব। তবে এখন চিত্রনাট্য তৈরির কাজই থেমে আছে। জয়াদি বারবার বলেন, 'সুজিত, দুবছর ধরে আটকে আছি।' স্ক্রিপ্টটা আস্তে ধীরে এগোচ্ছি।" তো বাংলা ছবির প্রযোজনা করছেন, পরিচালনায় কবে আসবেন? "আমার বাড়ি থেকেও এই একই প্রশ্ন করে (হাসি)। এখনও শিখছি আমি, আর একটু পোক্ত হয়ে নিই, তারপর বাংলা ছবিতে অবশ্যই হাত দেব। তবে প্রযোজনা চালিয়ে যাব। 'চাঁদের পাহাড়' করার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু সেটা তো হয়ে গেছে।" আর অনলাইনে, অর্থাৎ ওয়েব সিরিজে কাজ করবেন না? "কথাবার্তা চলছে। নিশ্চয়ই আমি ওই প্ল্যাটফর্মটা এক্সপ্লোর করব।" কিন্তু অনলাইনে সেন্সর আসছে ভারতে। এতে পরিচালকদের কতটা সমস্যা হতে পারে? "সেটা দেখতে হবে কীরকম সেন্সরশিপ আসছে। থিয়েটারে যে নিয়ম রয়েছে সেটা আশা করছি ডিজিটালে হবে না। কিন্তু আমাদের মতো দেশে একটু সেন্সরশিপ থাকাও মন্দ নয়। কোনও মাথার তো ঠিক নেই, যা খুশি হচ্ছে।"
ছবির প্রমোশনের ওপর কি আজকাল বলিউডের ছবি দেখা নির্ভর করে? "আমার তো মনে হয় মার্কেটিংয়ে টাকা নষ্ট করে বলিউড। ওটা অন্য ভাল কাজে লাগালেও পারে। আমি তো করি না। কারণ আমার মনে হয় দর্শক ট্রেলার দেখেই সিন্ধান্ত নিয়ে নেন, ছবিটা দেখবেন কী না!"
বাংলা ছবি নিয়ে মত জানতে চাইলে বলেন, "বাংলা ছবি এখানে ভাল করছে। কিন্তু রাজ্যের বাইরে ও আন্তর্জাতিক স্তরে এক্সজিকিউশনে সমস্যা হচ্ছে। এখানে লোকেরা দেখছেন, কিন্তু বাইরে মারাঠি, মালয়ালম বা তেলুগু ছবির মতো ছাপ ফেলতে ব্যর্থ। হিমা দাসের ছবির মতো ('ভিলেজ রকস্টারস') মানুষ খুঁজে নেবেন ছবিকে, এই প্রভাব থাকাটা জরুরি।"