সুরের আকাশে ফের নক্ষত্রপতন। প্রয়াত গায়ক-সুরকার বাপ্পি লাহিড়ী। মঙ্গলবার রাতে মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯। ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে তাঁর অবদান উল্লেখযোগ্য। বাংলা এবং হিন্দিতে বহু গান গেয়েছেন এবং সুর দিয়েছেন তিনি। বহু হিট ছবির সঙ্গীতকার ছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর সঙ্গীত থামল মঙ্গলবার রাতে। সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন।
১৯৫২ সালের ২৭ নভেম্বর জলপাইগুড়িতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বাপ্পি। বাবা অপরেশ লাহিড়ী এবং মা বাঁশরী লাহিড়ী। মা-বাবা দুজনেই সঙ্গীত জগতের মানুষ ছিলেন। তাই ছোট থেকেই সঙ্গীতের পরিবেশে বড় হয়েছেন বাপ্পি। মা-বাবার কাছেই প্রথম গানের তালিম নিয়েছিলেন তিনি। বহু বাংলা এবং হিন্দি ছবিতে সুর দিয়েছেন, অজস্র গান গেয়েছেন তিনি।
সাত এবং আটের দশকে হিন্দি ছায়াছবির দুনিয়ায় জনপ্রিয় নাম ছিলেন বাপ্পি লাহিড়ী। ডিস্কো ডান্সার, চলতে চলতে, শরাবি-র মতো হিট হিন্দি ছবিতে গানে সুর দিয়েছেন তিনি। তেমনই বাংলায় অমর সঙ্গী, আমার তুমি, আশা ও ভালবাসা, অমর প্রেমের মতো হিট ছবির গানে সুর দিয়েছিলেন তিনি। বহু গান গেয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন ‘একটা শতাব্দীর আর কেউ রইলেন না, ভাবতেই পারছি না’, সন্ধ্যার প্রয়াণে শোকস্তব্ধ মমতা
২০১৪ সালে বিজেপির হয়ে লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। রাজনৈতিক জীবন সংক্ষিপ্তই ছিল। ভোটে হেরে যাওয়ার পর সেভাবে রাজনীতির ময়দানে তাঁকে দেখা যায়নি। তারপর বেশ কিছু সঙ্গীত রিয়ালিটি শোয়ে বিচারকের ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল তাঁকে। শেষবার ছোট পর্দায় তাঁকে দেখা যায় সলমন খান সঞ্চালিত বিগ বস ১৫ শোয়ে। সেখানে তিনি নিজের নাতি স্বস্তিকের নতুন গানের প্রোমোশনে এসেছিলেন।
আরও পড়ুন বাংলার সঙ্গীতাকাশে নক্ষত্রপতন, চিরঘুমের দেশে ‘গীতশ্রী’ সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে জুহুর একটি নার্সিংহোমে তাঁর মৃত্যু হয়। অসুস্থতার কারণে তাঁকে সেই নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। চিকিৎসক ডা. দীপক নামজোশী জানিয়েছেন, নার্সিংহোমে নিয়ে আসার পর বাপ্পি লাহিড়ীর প্রেশার খুব কম ছিল। সবরকম চেষ্টা করেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। রাত ১১টা নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন সুরের আকাশে বিষাদ সন্ধ্যা, বুধে পূর্ণ মর্যাদায় শিল্পীর শেষকৃত্য
সঙ্গীতদুনিয়ায় ডিস্কো কিং বলা হত বাপ্পি লাহিড়ীকে। তাঁর সঙ্গীতের স্বকীয়তায় তিনি আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন বলিউডে। একটা সময় ব্যস্ত থাকতেন সঙ্গীতের কাজ নিয়ে যে দম ফেলার ফুরসত পেতেন না। ডিস্কো সঙ্গীতের জনক বলা হত তাঁকে। তাঁর অকাল প্রয়াণ নিঃসন্দেহে ভারতীয় সঙ্গীত জগতে অপূরণীয় ক্ষতি। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর অনুরাগীরা শোকপ্রকাশ করেছেন।