কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে-র আকস্মিক প্রয়াণে স্তম্ভিত দেশের সঙ্গীতমহল। কলকাতায় ২ দিনের জন্য শো করতে এসেছিলেন। মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে একটি অনুষ্ঠানে পারফর্ম করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। মঙ্গলবার গুরুদাস কলেজের ফেস্টে নজরুল মঞ্চে শো করছিলেন। সেখানেই খানিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিরতিতে ব্যাক স্টেজে বিশ্রামও নেন। বলেনও, অনুষ্ঠানের আলো কমাতে। তবে অনুষ্ঠানে দিব্যি মাতিয়ে রাখেন হিন্দি-বাংলা গান গেয়ে। আর সেই শোয়ের পর হোটেলে ফিরে যেতেই অঘটন। অসুস্থ হয়ে পড়ে যান কেকে।
কেকে-র আকস্মিক প্রয়াণ কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না অনুরাগীরা। মাত্র ৫৩ বছর বয়স যাওয়ার নয়। এত গান, এত দরাজ গলা আর শোনা যাবে না, ভাবতেই পারছেন না সঙ্গীতমহলের দিকপালরা। বলিউডে বড় ব্রেক ছিল সঞ্জল লীলা বনশালির হাম দিল দে চুকে সনম ছবিতে প্লে-ব্যাক করে। তড়প তড়প কে.. সেই গান গোটা দেশকে নাড়িয়ে দেয়। তার পর ইয়ারোঁ, পল, আলভিদা-র মতো অজস্র হিট গান সবার মুখে মুখে ফেরে। আসুন জেনে নেওয়া যাক কেকে-র জীবনের কিছু অজানা তথ্য।
১. অনেক দিন আগে একটি সাক্ষাৎকারে কেকে বলেছিলেন, তিনি গানের জগতে আসার আগে হোটেল ইন্ডাস্ট্রিতে ছিলেন। এর পর মুম্বইয়ে চলে আসেন ১৯৯৪ সালে। সোনি মিউজিকের একটি শোয়ে তিনি বলেছিলেন, স্ত্রী জ্যোতির জোরাজুরিতেই গান নিয়ে তাঁর স্বপ্নপূরণ করতে পেরেছিলেন।
আরও পড়ুন কেকে-র মৃত্যু কি অস্বাভাবিক? মামলা দায়ের করল নিউ মার্কেট থানার পুলিশ
২. বলিউডে প্রথম ব্রেক পাওয়ার আগে অন্তত ৩,৫০০ বিজ্ঞাপনী জিঙ্গল গেয়েছেন তিনি।
৩. বলিউড হাঙ্গামার একটি সাক্ষাৎকারে কেকে বলেছিলেন, একবার কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী হরিহরণ দিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানে তাঁকে স্পট করেন। হরিহরণ তাঁর গান শুনে মুম্বই চলে আসতে বলেন।
৪. গুলজারের মাচিস ছবিতে গান গেয়ে প্রথম বলিউডে পদার্পণ। ছোড় আয়ে হম ওহ গালিয়াঁ। তাঁর সঙ্গে সহশিল্পী ছিলেন হরিহরণ, সুরেশ ওয়াড়েকর এবং বিনোদ সেহগল। বিশাল ভরদ্বাজ ছিলেন সঙ্গীতকার। সেই গান ছিল সুপারহিট।
আরও পড়ুন মঞ্চেই অসুস্থ হন কেকে! গাড়িতেও এসি বন্ধের অনুরোধ, হোটেলে ফিরেই সব শেষ
৫. কিশোর কুমারের গান শুনে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন কেকে। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, কিশোর কুমার ছিল তাঁর অনুপ্রেরণা।
৬. ধ্রুপদী সঙ্গীতে কোনওদিন প্রশিক্ষিত ছিলেন না। একটি সঙ্গীত স্কুলে কিছুদিন গিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে কোনও লাভ না হওয়ায় বাবা তাঁকে আর জোর করেননি। কেকে বলেছিলেন, ছোট থেকেই শুনে শুনে গান শিখেছি। এটা ঈশ্বরপ্রদত্ত গুণ বলতে পারেন। কিশোরদাও কোনওদিন প্রথাগতি গানের শিক্ষা নেননি। তাই আমার সঙ্গীতের ক্লাসে না যাওয়ার আরও অনেক কারণ তো ছিলই।
৭. গানের রিয়ালিটি শোয়ে বিচারকের আসনও উজ্জ্বল করেছিলেন কেকে। ফেম গুরুকুল শোয়ের বিচারক ছিলেন তিনি। সেই রিয়ালিটি শো থেকেই বলিউড পেয়েছিল অরিজিৎ সিং-কে। এছাড়া আর কোনও শোয়ে বিচারক হননি তিনি।
৮. হিন্দি ছাড়াও তামিল, তেলুগু, মারাঠি, কন্নড়, বাংলা, মালয়ালম, গুজরাটি এবং অহমিয়া ভাষায় গান গেয়েছেন কেকে।