কলকাতায় তাঁর বড় প্রিয় শহর। উষা উত্থুপ মানেই কপালে সাজানো 'ক' লেখা টিপ। কলকাতার প্রতি ভালবাসা থেকেই নামের আদ্যাক্ষর লেখা টিপ পড়েন তিনি। শুধু তাই নয়, উষার গাওয়া 'কলকাতা কলকাতা…' আজও সুপারহিট। শহর তিলোত্তমার প্রতি তাঁর এই প্রেমই উষাকে আবার টেনে নিয়ে এল কলকাতায়। তবে এবার, বিশেষ কারণে। বৃহস্পতিবারই পার্কস্ট্রিটের অক্সফোর্ড বুক স্টোরে নিজের বায়োগ্রাফি 'দ্য ক্যুইন অফ ইন্ডিয়ান পপ' লঞ্চ করলেন।
তবে নতুন বই কভার উন্মোচন করার পাশাপাশি কলকাতার স্মৃতিরোমন্থনেও ভাসলেন উষা উত্থুপ। বললেন, বিগত ৫০ বছর ধরে অক্সফোর্ড বুক স্টোরের সঙ্গে আমার ভাল সম্পর্ক। আর সেই জন্যই কলকাতায় এসে প্রথম নিজের বায়োগ্রাফি লঞ্চ করলাম। আমার মনে হয়, এই অক্সফোর্ড বুক স্টোরের একটা আলাদা জাদু রয়েছে। আমার অতীতের কত স্মৃতি জড়িত এর সঙ্গে। পার্কস্ট্রিটের ট্রিঙ্কাসে কেরিয়ার শুরু করেছিলাম। তখন থেকেই অক্সফোর্ড বুক স্টোরে যাতায়াত। তাই এখানে এসে নিজের বায়োগ্রাফি লঞ্চ করে বেজায় উচ্ছ্বসিত আমি।
উল্লেখ্য, 'দ্য ক্যুইন অফ ইন্ডিয়ান পপ' বইটি লিখেছেন বিকাশ কুমার। মূল বইটি যদিও হিন্দিতে লিখেছেন বিকাশ। যার নাম 'উল্লাস কি নাও'। আর তা থেকেই ইংরেজিতে অনুবাদ করেন তাঁর মেয়ে সৃষ্টি ঝা। তিনিও এদিন উষার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন অক্সফোর্ড বুক স্টোরে। কেমন ছিল তাঁর গানের কেরিয়ারের গোড়ার দিনগুলো? কীভাবেই বা বলিউডের ডিস্কো সুপারহিট গায়িকা হয়ে উঠলেন? অতীতের যাবতীয় বৃত্তান্ত দলিলের মতো ধরা রয়েছে সেই বইতে।
<আরও পড়ুন: কোভিডের মতো ইউক্রেনেও ‘ত্রাতা’ সোনু, পড়ুয়াদের ফেরালেন দেশে>
প্রসঙ্গত, দিন দুয়েক আগেই 'দ্য ক্যুইন অফ ইন্ডিয়ান পপ' প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি ব্যক্তিগত জীবনের নানা অজানা কথা শেয়ার করেন। উষা জানিয়েছিলেন, গানের শিক্ষক ভেবেছিলেন আমি মোটেই গায়িকা হতে পারব না। সঙ্গীতে অতটা দখল-ই নেই আমার। যার জন্য বিশেষ ক্লাসগুলো থেকেও আমাকে বঞ্চিত করা হত। অবিশ্বাস্য কাণ্ড! কিন্তু বছরখানেক বাদে এক অনুষ্ঠানে আমি যখন গাইছিলাম, তখন আমার শিক্ষক বসেছিলেন দর্শকাসনে। মঞ্চ থেকে নেমে যখন মুখোমুখি হয়েছিলাম, দুজনের চোখেই তখন আনন্দাশ্রু। কখনও অনুশোচনায় ভুগিনি। কিংবা গানের ক্লাসে না ঢুকতে পারার তাপ-উত্তাপ আমাকে টেনে নিচে নামিয়ে দেয়নি। বরং আরও ভালর দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে।
পাশাপাশি উষা এও বললেন যে, “আমি ভাল না খারাপ গায়িকা, সেটা বলতে পারব না। তবে এটুকু বলতে পারি যে আমি একশো শতাংশ অরিজিন্যাল গায়িকা।” বিতর্ক থেকে সবসময়ে দূরেই থেকেছেন তিনি। তবুও চক্রান্ত থেকে বাদ পড়েননি। খানিক রসিকতা করেই বলছিলেন, “ভেবেই কী অদ্ভূত লাগত যে, আমার মতো সাধারণ একজন মেয়ে, যে কিনা একেবারে মাটির মানুষ, ঘরোয়া প্রকৃতির, নাইটক্লাব সিঙ্গারের ভাবমূর্তির সঙ্গে একেবারে কোনওরকম মিলই ছিল না, সেই আমাকেও কিনা নিষিদ্ধ করার জন্য রাজনৈতিক ময়দানের লোক উঠে-পড়ে লেগেছিল। হা ইশ্বর! কেন?”
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন