অনুষ্ঠান করতে গিয়ে এসব কী? শিল্পী স্নিগ্ধজিৎ ভৌমিক - ধর্মীয় বিবাদে জড়িয়ে পড়লেন? তাঁকে বাধ্য করা হল স্টেজ থেকে নেমে যেতে! নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগড়ে দিলেন তিনি।
এর আগে কখনও তাঁকে এমন কিছুর সম্মুখীন হতে হয়নি। শিল্পীর আবার জাত কীসের? সে হিন্দু শিল্পীর গান গাইবেন নাকি মুসলিম শিল্পীর, গান সে তো গান হয়। এমন বেশ জনপ্রিয় উর্দু গান কিংবা আল্লাহকে উদ্দেশ্য করে গান রয়েছে যেগুলি নানা সময়ে দর্শকরা পছন্দ করেছেন। তার মধ্যে রকস্টার ছবির 'কুন ফায়া কুন', কিংবা যোধা আকবর ছবির 'খওয়াজা মেরে খোয়াজা' বেশ জনপ্রিয়। তবে, এবার অরিজিৎ সিংয়ের এ খুদা গান গাইতে গিয়েই স্নিগ্ধজিৎ গ্যাড়াকলে।
একই মঞ্চে রাম নাম গাইলেন, তাতে দোষ নেই! তবে, যেই তিনি এ খুদা গাইতে গেলেন, মদ্যপ এক ব্যক্তি তিনি চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন। শিল্পী সমাজমাধ্যমে লিখলেন..
"সবার দৃষ্টি আকর্ষন করছি, আগেই ক্ষমাপ্রার্থী সবার কাছে, আমায় আজ এসব কথা বলতে হচ্ছে । "সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই" এই উক্তিটি কি ভুল হয়ে গেলো? আমি একজন শিল্পী। আর শিল্পীর মনে হয় জাত পাত দেখে গান গাওয়া উচিৎ নয়, শিল্পীরা কি হিন্দু মুসলিম দেখে গান গাইবে? শিল্পীর কাছে আল্লাহ-ঈশ্বর-ভগবান কি আলাদা? একই অনুষ্ঠানে আমি আযান দিয়ে "পাল তুলে দে, মন আমার কেমন কেমন করে" ও গেয়েছি আবার "হরে কৃষ্ণ হরে রাম" ও গেয়েছি সবাই সমান ভাবে আনন্দ করেছে । সব জায়গায় নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার চেষ্টা করেছি, সময়ের চেয়ে বেশি পারফর্ম করেছি, সবার আশীর্বাদ ভালোবাসা পেয়েছি অনেক বেশী পেয়েছি, পশ্চিমবঙ্গের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত গান গেয়ে বেরিয়েছি কোনোদিন কোথাও কারোর থেকে কোনো কটুকথা শুনতে হয়নি বা অপমান পাইনি বরং সবাই অনেক বেশি সম্মান ও ভালবাসা দিয়েছে। কিন্তু আজ নিজের খুব লজ্জা লাগছে, ভয় লাগছে , আজ মঞ্চে অরিজিৎ সিং দার "Aye Khuda" গানটা গাওয়ার জন্য মঞ্চ থেকে নেমে যেতে বলা হলো? এত এত জায়গায় এই গানটা গেয়েছি কোথাও তো এরম হয়নি, আজ কেনো এরম হলো? আজ অনুষ্ঠানে তো আমি "রাম ভজন" ও গেয়েছিলাম, "জয় শ্রী রাম" ও বলেছিলাম, নিরপেক্ষ ভাবে বলেছি, মনের আনন্দে বলেছি , সমস্ত দর্শকবন্ধুরা সেই আনন্দে সামিল হয়েছে, তবে কি গুরুজন শ্রী চণ্ডীদাসের "সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই" এই উক্তিটি ভুল হয়ে গেলো? কিছু ভুল বললে ক্ষমা করবে সবাই।"
এদিকে, সেদিনটা ছিল, অযোধ্যায় রামমন্দির প্রতিস্থাপনের দিন। বেশ কিছু মানুষের মন্তব্য ঠিক এমনিই, যে এইদিন অন্তত খুদা, আল্লাহ সংক্রান্ত গান এড়িয়ে যাওয়াই উচিত ছিল। আবার কেউ বলছেন, তুমি হিন্দুদের মাঝে এই গান গাইবে কেন? কেউ বললেন, যেমন কর্ম তেমন ফল পেয়েছেন। আর এতেই আরও অবাক শিল্পী। কবে থেকে গান গাইতে গেলে এইসব সমস্যার মধ্যে পড়ছেন শিল্পীরা, এতেও বেশ অবাক হয়েছেন অনেকে।