বৃহস্পতিবার হাওড়ায় বিজেপির সদর দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে রুদ্রনীল ঘোষ অভিযোগ তুলেছিলেন, "টলিউডে মাফিয়ারাজ চলছে।" বিঁধেছিলেন ইন্ডাস্ট্রিতে থাকা রাজ্যের শাসকদলের প্রতিনিধিদের। যে 'বিস্ফোরক' মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলের অন্দরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। নজর এড়ায়নি ইন্ডাস্ট্রির আরেক অভিনেতা তথা যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি সোহম চক্রবর্তীর (Soham Chakraborty)। অতঃপর সদ্য পদ্ম শিবিরে যোগ দেওয়া অভিনেতাকে পালটা 'খোঁচা' দিয়ে বলেছেন, "রুদ্রনীল যে দলে যোগ দিয়েছেন, তাদের চেয়ে বড় মাফিয়া খুব কমই আছে। দেশবাসী এমন মাফিয়া রাজনৈতিক দল এর আগে কখনও দেখেনি।"
'টলিউডে মাফিয়ারাজ' প্রসঙ্গে দুই অভিনেতার যুযুধান নিয়ে ইতিমধ্যেই ইন্ডাস্ট্রির অন্দরেও চাপানউতোর শুরু হয়েছে। যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি সোহম অবশ্য এখানেই থেমে থাকেননি। প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন যে, "বিরোধী দলে নাম লিখিয়ে এখন তৃণমূলের সবটাই খারাপ! ইন্ডাস্ট্রির সিস্টেম যদি এতটাই খারাপ হয়, তাহলে এতদিন কেন প্রতিবাদ করেননি রুদ্রনীল?"
"সায়নী ঘোষ, দেবলীনা দত্তরা প্রতিবাদ করছেন বলে, তাঁদেরও খুন-ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ক্ষমতায় আসার আগেই কারা মাফিয়ারাজ চালাচ্ছে স্পষ্ট!": সোহম চক্রবর্তী।
উল্লেখ্য, রুদ্রনীল ঘোষ অভিযোগ করেছেন, "ইন্ডাস্ট্রিতে যাঁদের দায়িত্ব দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বসিয়েছেন, তাঁরাই নিজেদের আধিপত্য বজায় রেখে জোরজুলুম ও স্বজনপোষণ শুরু করলেন।" এই প্রেক্ষিতেও পালটা দিতে ছাড়লেন না সোহম চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, "স্বজনপোষণ নিয়ে কী বলতে চাইছেন রুদ্রনীল ঘোষ, নাম নিয়ে বলুন। এভাবে উপর উপর চলে লাভ নেই। ইন্ডাস্ট্রির বিষয়ে এমন অভিযোগ থাকলে, এতদিন কেন বলেননি? এতদিন কীভাবে সহ্য করলেন? এখন ক্ষমতা ভোগ করা শেষ হয়ে গিয়েছে। তাই বিরোধী দলে নাম লিখিয়ে বেশি ক্ষমতা পেলেন বলেই কি সুর পালটেছেন?"
সোহমের কথায়, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রত্যেক শিল্পীকে যে সম্মান দিয়েছেন, তা আগে ক্ষমতায় থাকা কোনও দল দেয়নি। নেত্রী যাঁদের কাঁধে ইন্ডাস্ট্রির দায়িত্ব দিয়েছেন, তাঁরা সমাজের গন্যমান্য ব্যক্তিত্ব। তাঁরা দেখছেন কীভাবে ইন্ডাস্ট্রিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।"
তৃণমূলের তারকা নেতা সোহমের সাফ মন্তব্য, "বাংলায় মাফিয়ারাজ চলে না। এই ইন্ডাস্ট্রি খুবই ছোট। যদি এমন কিছু ঘটত, তাহলে অনেকেই এই বিষয়ে মুখ খুলতেন। বর্তমানে সমাজের উপর বা দেশবাসীর উপর যা চলছে, সবাই তার সাক্ষী। সেই কারণেই সায়নী ঘোষ কিংবা দেবলীনা দত্তরা এই অনাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে প্রকাশ্যে ধর্ষণ এবং খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। মফিয়ারাজ কে বা কারা করছে, বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় আসার আগেই তা স্পষ্ট!"
রুদ্রনীলের অভিযোগে একপ্রকার ফুঁসে উঠেছেন সোহম। তাঁর কথায়, "এতদিন ইন্ডাস্ট্রিতে কোনও ভেদাভেদ বা রাজনৈতিক রং ছিল না, কিন্তু বিজেপি স্বৈরাচারের ভঙ্গিতে বাংলাকে দখল করার চেষ্টা করছে বলেই এসব অভিযোগ আনছে।"