"গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়া রুদ্রনীল ঘোষকে (Rudranil Ghosh) নিষিদ্ধ করা হোক টলিউডে। সবাই বলুক যে, রুদ্রনীল যতক্ষণ ফ্লোরে থাকবেন, তাঁরা কেউ কাজ করবেন না!", বিস্ফোরক মন্তব্য যুব তৃণমূলের (TMC) সহ-সভাপতি সোহম চক্রবর্তীর (Soham Chakraborty)।
দিন কয়েক আগেই টলিউড ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে "মাফিয়ারাজ চলছে" বলে মন্তব্য করেছিলেন রুদ্রনীল। সেই প্রেক্ষিতেও তাঁকে একহাত নিতে পিছপা হননি সোহম। এবার তাঁর নতুন ছবি ‘মিস কল’-এর প্রচারের ফাঁকে আবারও সেই রাজনীতি প্রসঙ্গ উত্থাপন হলে, সেখানেই ঝাঁজিয়ে ওঠেন সোহম চক্রবর্তী। যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি তথা অভিনেতা চান, টলিউডের কর্মীরা রুদ্রনীলের 'মাফিয়ারাজ' মন্তব্যের বিরুদ্ধে এককাট্টা হয়ে প্রতিবাদ করুন। উল্লেখ্য, দুই অভিনেতাই কিন্তু আগে এক রাজনৈতিক দলে ছিলেন। কিন্তু এখন শিবির পাল্টেছেন একজন। কাজেই বিপরীত রাজনৈতিক ময়দানের সেই আঁচে ব্যক্তিগত বন্ধুত্বও বর্তমানে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।
প্রসঙ্গত, বিজেপিতে (BJP) যোগ দেওয়া রুদ্রনীল ঘোষের ‘মাফিয়ারাজ’ মন্তব্যে সরগরম বাংলা বিনোদন ইন্ডাস্ট্রি থেকে রাজনৈতিক মহল। বৃহস্পতিবার হাওড়ায় বিজেপির সদর দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে রুদ্রনীল ঘোষ অভিযোগ তুলেছিলেন, “টলিউডে মাফিয়ারাজ চলছে। ইন্ডাস্ট্রিতে যাঁদের দায়িত্ব দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বসিয়েছেন, তাঁরাই নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করে জোরজুলুম শুরু করছে। স্বজনপোষণ করছে। সেই কারণেই প্রযোজকরা কলকাতা থেকে চলে যাচ্ছেন।” পাশাপাশি বিঁধেছেন ইন্ডাস্ট্রিতে থাকা রাজ্যের শাসকদলের প্রতিনিধিদেরও।
সেই প্রেক্ষিতেই সোহমের সাফ কথা, রুদ্রনীল যে ইন্ডাস্ট্রিতে মাফিয়ারাজ চলার অভিযোগটা তুললেন, তিনি কি ভুলে গিয়েছেন, যে করোনার সময়ে কত মানুষ খেতে পাননি? একটা গোটা ইন্ডাস্ট্রির মুখ চেয়ে বসেছিলেন কত লক্ষ মানুষ! তাঁদের কর্মসংস্থানের জন্য সরকার পাশে দাঁড়িয়েছে। যাতে মানুষ কিছু রোজগার করতে পারে। "আমি কিংবা রুদ্রনীল- আমরা তো একটা করে ভ্যানিটি ভ্যান পাই। কিন্তু ওই মানুষগুলো? তাঁদের মুখ থেকে সেটুকু অন্নও কেড়ে নিতে চান রুদ্রনীল?" প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন তৃণমূল নেতা তথা অভিনেতা।
পদ্ম শিবিরের রুদ্রনীলের উদ্দেশে সোহম প্রশ্ন ছুঁড়ছেন, "এতদিন ধরে সমস্যা হলে, আগে কেন বলেননি? বিরোধী শিবিরে নাম লিখিয়ে এখন তৃণমূলকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছেন?"
উল্লেখ্য, আসন্ন নির্বাচনী প্রচারে পদ্ম ও ঘাসফুল এই দুই শিবিরেই যে তারকা মুখ চমক থাকছে, তা আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই। কারণ, প্রায় প্রত্যেক সপ্তাহেই কেউ বিজেপিতে নাম লেখাচ্ছেন, তো কেউ বা আবার রাজ্যের শাসক দলের 'ঝাণ্ডা' হাতে তুলে নিচ্ছেন।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনী প্রচারের জন্য তৃণমূলের তারকা সাংসদদের উপরও অতিরিক্ত দায়ভার বর্তেছে। সেই তালিকা থেকে স্বাভাবিকবশতই বাদ যাননি সোহম চক্রবর্তী। ২০১৬ সালে তৃণমূলের হয়ে ভোটে দাঁড়িয়ে হেরে গেলেও তৃণমূলের অন্দরে তাঁর কদর অনেক। তিনি বর্তমানে যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি। ঘাসফুল শিবিরের ভোটের দায়িত্বও রয়েছে সোহমের কাঁধে। এবং সেই প্রেক্ষিতেই অভিনেতা জানিয়েছেন, কোথাও কোনও খামতি রাখছেন না তিনি। কারণ, যুব তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতির কাছে অভিনেতা এবং নেতা- এই দুই সত্তাই সমান গুরুত্বপূর্ণ।