ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর আসা টেলিভিশন দিয়ে। কিন্তু অল্পদিনের মধ্যেই ছোটপর্দার বাঁধন ভেঙে সিলভার স্ক্রিন সঙ্গে ওয়েব প্ল্যাটফর্ম, শোলাঙ্কি রায়কে নিয়ে বলতে গেলেই বাহ বাহ ছাড়া উপায় নেই। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার বড়পর্দায়, অনিন্দিতা হয়ে উষ্ণতা ছড়িয়েছেন শহরের আনাচে কানাচে। কিন্তু সিনেমাটিক উষ্ণতা কেমন বুঝছেন তিনি, সেকথাই জানালেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার কাছে।
Advertisment
শহরে মানুষের মধ্যে উষ্ণতা কেমন বুঝতে পারছ?
ভাল তো, খুব ভাল লাগছে। খুবই আনন্দ লাগছে। অনেকটা হার্ড ওয়ার্ক করে আজকে এটা পাওয়া। যারা দেখছেন, বা যাদের দেখে ভাল লাগছে, আমরা যাদের জন্য বানিয়েছি তাঁরা দেখে ভীষণ খুশি, এটা তো আমি অন্য কোনও ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।
টলিউড বা বলিউডের ক্ষেত্রে যে সিনেমা নিয়ে বিরাট একটা দোনামনা চলছে সেখানে দাঁড়িয়ে সাফল্য, আশা করেছিলে?
Advertisment
অনেক এক্সপেরিমেন্ট চলছে। ইন্ডাস্ট্রিতে ছবি নিয়ে দারুণ গবেষণা চলছে। মানুষের কাছে পৌঁছতে গেলে এখন কাঠখড় পোড়াতে হয়। ভাল স্টোরি না হলে সেটা সম্ভব না। তবে, আমাদের সকলের একটা চ্যালেঞ্জ ছিল সেটা হচ্ছে দর্শক হলমুখী হবে নাকি না। বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম। কারণ, ওরা এখন হলে গিয়ে তথাকথিত বাংলা ছবি দেখতে ভুলে গিয়েছে। সেখানে ওরা যে আসছে, শুধু তাই নয় আমাদের সঙ্গে যখন কথোপকথন হচ্ছে, ওরা আমাদের ভাল বলছে। আমাদের কাছে ওয়েব অনেকটা সাবলীল। সেখানে দারুণ সব কনটেন্ট রয়েছে। আমাদের সবকিছু ভাল দেখার অভ্যাস রয়েছে। সুতরাং এটা একটা চ্যালেঞ্জ ছিল।
শোলাঙ্কি 'শহরের উষ্ণতম দিনে…' : ছবি/ ইনস্টাগ্রাম
বিক্রম-শোলাঙ্কি জুটিই কি কামাল দেখাল?
কামাল করেছি আমরা দুজনেই, এটা না আমি ঠিক বিশ্বাস করি না। তবে হ্যাঁ একটা ফ্রেশ ব্যাপার আছে। কারণ, যে কজন ভাল বলছে আমাদের তাঁরা প্রত্যেকেই বলছে যে আমাদের নতুন লেগেছে। একটা ফ্রেশ পেয়ার। যখন, হল ভিজিট করেছি মানুষ বলছেন আমাদের একসঙ্গে ভাল লেগেছে। আজকের জেনারেশনের কথা বলেছে এই বাংলা ছবি। তবে, যারা এই সময়টা ফেলে এসেছে তাঁরাও যে রিলেট করবেন এটা ভেবেছিলাম।
শোলাঙ্কির জনারের বাইরে এই চরিত্রটা, কারণ অনেকেই বলেছিল তুমি খুব গুডি ইমেজের মানুষ?
শোলাঙ্কি তো, তাঁর নিজের জীবনের প্রথম ওয়েব সিরিজে ভরপুর নেশাও করেছে। আমায় তো শুটিংয়ের জন্য কত কিছু যে খেতে হয়েছে। যদিও, সবটাই অভিনয়। কিন্তু সিরিজ শেষ হওয়ার পর আমি সৌরভকে বলেছিলাম যে এই যে লাংসের হাফ শেষ হয়ে গিয়েছে না, এটা তোর জন্য। আমি পাগল হয়ে গিয়েছিলাম।
শোলাঙ্কি 'শহরের উষ্ণতম দিনে…' : ছবি/ ইনস্টাগ্রাম
শোলাঙ্কি কি খুব ইমেজ কনসাস?
ব্যক্তিগত লাইফে আমি খুব নিজের ব্যবহার নিয়ে ভাবি। স্ক্রিন স্পেস নিয়ে কিছু ভাবি না। ওটা তো অভিনয়। কিন্তু, আমার মাথায় থাকে যে, একটা মানুষের সঙ্গে আমার দেখা হলে সে আমায় নিয়ে কী ভাবছে? ওই যে একটা মিনিট সেটা তো তাঁর কাছে একটা মেমোরি হয়ে থাকবে। আমি এটাই ভাবি। ব্যবহার মানুষের পরিচয়। অনস্ক্রিন যদি ইমেজ নিয়ে কমসিয়াস হই তাহলে আমি গ্রো করতে পারব না। নিজেকে আটকে দিতে হবে। আমি এই ছবিতে অনস্ক্রিন সিগারেট খেয়েছি, চুমু খেয়েছি...কিন্তু দর্শকদের অসুবিধা হয়নি। বরং তাঁদের কাছে আমি অনিন্দিতা হয়ে গিয়েছি। এটাই চ্যালেঞ্জ ছিল।
দর্শকরা তো হল, সিগারেট আর মদ খাওয়া দেখে মা কী ...
আমার মা! আমায় তো সোজা এটাই বলল, যে সারাক্ষণ কেউ মদ সিগারেট খায় নাকি? আমি তো অবাক! মা কে বললাম, সারাক্ষণ কোথায় দেখিয়েছে? মা তো প্রচণ্ড রেগে আগুন, বকাবকি করল আমায় সিগারেট আর চুমু খেতে দেখে। কোনও দ্বিধা না রেখেই বলে ফেলল, তোরা কি কলেজে এটাই করতিস? মা মুখ দেখে বুঝে যায়। আমি ঢপ মারলেও মা ধরে ফেলত। মা তো স্ক্রিনে নিজের মেয়েকে দেখছেন। মা রেগে গিয়েছেন ( হাসি )।
শোলাঙ্কি 'শহরের উষ্ণতম দিনে…' : ছবি/ ইনস্টাগ্রাম
যাদবপুরে পড়াশোনা, প্রেমের উষ্ণতা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বুঝেছিলে?
আমি প্রেম করতাম, যাদবপুরের আগে। যাদবপুরে আমি রাজনীতি করেছি, প্রেম না। ( হাসি )... তবে, হ্যাঁ! কলেজ জীবনে যখন প্রেম করেছি তখন মনে আছি ডিপার্টমেন্টাল হেড একদিন দেখে নিয়েছিলেন যে আমি আর আমার তখনকার বয়ফ্রেন্ড দাঁড়িয়ে কথা বলছি। উনাকে দেখে তো আমরা দুজনে দুদিকে দৌড়। তারপর উনি ডেকে বললেন, অন্যায় তো করছ না! ক্লাসে যেন দেরি না হয়।
যিশুর সঙ্গে বড়পর্দায় স্ক্রিন শেয়ার তারপর এটা, বাংলা সিনেমার সাফল্যের পিছনে কি জুটি ম্যাটার করে নাকি স্ক্রিপ্ট?
যেকোনও সিনেমার ক্ষেত্রে, অন্তত আমি বিশ্বাস করি যারা এই সিনেমা দেখতে আসেন তাঁরা কিন্তু পয়সা খরচ করেন। এবং সকলের দুটো ভাবনা থাকবে, যে একটা ভাল গল্প। আর নয়তো এমন কিছু যেটা তারা আগে দেখেনি। একটা টপ টু বটম বিনোদন। Avater কিংবা পাঠানের সময় মানুষ মুখিয়ে ছিল অন্যকিছু দেখবে। সবছবির আলাদা আলাদা নিড থাকে। তবে, মানুষ দিনের শেষে যে ভালবাসা নিয়ে ফিরছেন এটাই অনেক।
শোলাঙ্কি 'শহরের উষ্ণতম দিনে…' : ছবি/ ইনস্টাগ্রাম
শোলঙ্কিকে যে খুব চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে দেখতে চাইছে সবাই... কাদম্বিনীর মত?
আমি করতে চাই! আমি চাই আমায় লোকজন এমন চরিত্র দিক। কাদম্বিনীর মত শক্ত চরিত্র ছিল না। আমি অনেক শিখেছি ওটা থেকে। আর সত্যি বলছি যেটা আমায় আনন্দ দেবে না বা চ্যালেঞ্জ দেবে না আমি সেই চরিত্র করতে চাই না।