সায়নী ঘোষকে (Sayani Ghosh) ‘যৌনকর্মী’ বলে নজিরবিহীন তোপ দেগেছিলেন সৌমিত্র খাঁ (Soumitra Khan)। এবার দলের অন্দরেই সেই মন্তব্য নিয়ে সমালোচনার শিকার বিজেপি নেতা। শুক্রবার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মুখ খুলেছেন শমীক ভট্টাচার্য (Samik Bhattacharya)। গেরুয়া শিবিরের নেতা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, “সৌমিত্রর এমন ধরনের মন্তব্য দল সমর্থন করে না।” শুধু তাই নয়, টলিউড অভিনেত্রীর প্রতি এমন কুরুচিকর মন্তব্যের জন্য দলের হয়ে ক্ষমাও চেয়ে তিনি।
‘যৌনকর্মী’ প্রসঙ্গে সায়নী ঘোষ অবশ্য আগেই বলেছিলেন যে, “সৌমিত্র খাঁয়ের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করলে করাই যায়, কিন্তু ওঁর বেঁফাস মন্তব্যের জন্য ওঁর পার্টির লোকই ওঁকে নিতে পারে না!” হলও ঠিক তাই। সৌমিত্রর এমন মন্তব্য নিয়ে যখন শোরগোল শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলের অন্দরমহলে, ঠিক তখনই মুখ খুললেন শমীক ভট্টাচার্য।
শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “সৌমিত্রর মন্তব্যকে দল সমর্থন করে না। তবে এটা একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত মন্তব্য বলেও দল গোটা বিষয়টাকে এড়িয়ে যেতে পারে না।” দলের তরফে ক্ষমা চেয়ে বিজেপি নেতার মন্তব্য, ”এই ভাষা বিজেপির ভাষা নয়। যাঁরা এসব বলছেন, দল তাঁদের বিষয়ে ভাবছে। আমি দলের পক্ষ থেকে রাজ্যবাসীর কাছে ক্ষমা চাইছি।”
অন্যদিকে শমীক ভট্টাচার্য ক্ষমা চাওয়ার পর, সায়নীও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আরও একবার মুখ খুলেছেন। তাঁর কথায়, “শমীকদা এবং বিজেপির অন্যান্যদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ওনার কথায় বিজেপির প্রতি সম্মানটা বাড়ল। আশ্বস্ত বোধ করছি। আমি কোনও রাজনৈতিক দলে নেই। স্বাধীন মেয়ে, আমার যা পরিচিতি তা খেটে অর্জন করেছি। আমার মনে হয়, কেউ কোনও কথা বলতেই পারেন, তার জন্য কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা উচিত নয়। রাজনীতি মানেই যে নোংরা, আবার অভিনেত্রী মানেই যে লাইনে কাজ করে, মানুষের এই ভাবনাটা বদলানোর দায়িত্ব আমাদেরই।”
প্রসঙ্গত, রাজ্য বিজেপির যুবমোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ বুধবার পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষে আয়োজিত এক সভায় যোগ দিয়ে সায়নী ঘোষকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন- “যে অভিনেত্রী হিন্দুধর্মের দেব-দেবীকে অপমান করেন, তিনি-ই আদতে যৌনকর্মী।” ছেড়ে কথা বলার পাত্রী নন টলিউড অভিনেত্রীও। সৌমিত্রর উদ্দেশে সায়নীর সাফ মন্তব্য, “মহিলাদের সম্মান করা তো আপনাদের রক্ততে নেই। আপনার পরিবারের একজন প্রাক্তনই দিন কয়েক আগে এই অভিযোগটি করেছিলেন। এবার তো আপনি সেই অভিযোগটিকেই আরও পরিস্কার করে দিলেন দেখছি! যা, বাংলার মা-বোনেদের জন্য বিশেষভাবে চিন্তার কারণ।” তবে শমীক ভট্টাচার্যের ক্ষমা চাওয়ার পর যে সায়নী-বিজেপি তরজার রেশ থামবে, তা বলাই বাহুল্য।