টেলিভিশন থেকে সোজা সিনেমা, সৌমীতৃষা এখন প্রচণ্ড ব্যস্ত। দেবের ছবির নায়িকা তিনি। ইন্ডাস্ট্রির সুপারস্টারের সঙ্গে কাজ করছেন। কিছুদিন আগেই 'প্রধানে'র শুটিং শেষ করে উত্তরবঙ্গ থেকে ফিরেছেন। পাহাড় - বৃষ্টি তাঁর সঙ্গে প্রথম বিগ স্ক্রিন রিলিজ, আর নায়কের ভূমিকায় যখন দেব! তখন ফ্লোর জুড়ে আলাদাই উন্মাদনা।
শুটিং সেরে ফিরলেন। দেবের সঙ্গে গোটা ইউনিটের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সৌমী। শুধু তাই নয়, নায়ক দেবের থেকে প্রযোজক দেবকে এগিয়ে রাখলেন তিনি। জানালেন, ভবিষ্যতে কী এমন করতে চান তিনি? সুপ্ত ইচ্ছে টা আসলে কী? ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার কাছে জানালেন সে কথা।
উত্তরবঙ্গ তো শুটিংয়ের জন্য এই নিয়ে দ্বিতীয়বার?
হ্যাঁ! শুটিং এর জন্য এই নিয়ে দ্বিতীয়বার। এর আগে একবার মিঠাইয়ের জন্য গিয়েছিলাম। মজার বিষয় এটাই, তখনও অনেকে ছিল সঙ্গে। আর এবারও অনেকজন মানুষ একসঙ্গে পাহাড়ে গেলাম। কাজ করলাম।
এতদিন শুটিং করলে, বন্ডিংটা কেমন তৈরি হল?
মিটিং এর সূত্রে তো সকলের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ হত। কিন্তু, একসঙ্গে পাহাড়ে গিয়ে কাজ করলাম। খুব ভাল কাজ হয়েছে। অনেকটা দৃশ্যই ছিল। সবাই ছিলাম একসঙ্গে। একটু বৃষ্টি হলে শুটিং আটকে যেত। তবে, মজা করেছি খুব।
পাহাড়ের রাস্তায় শুটিংয়ের ফাঁকে ফাঁকে সৌমীতৃষার নাচ - রিলস তো ভাইরাল...
হাহা! ওটা, তো সিনেমার অংশ না একেবারেই। আমি দুদিন বেড়িয়েছিলাম। ছুটি পেয়েছিলাম আর কি। তখন একটু আধটু, ওই আর কি!....
দেব - একজন প্রযোজক বনাম একজন নায়ক... এগিয়ে কাকে রাখবে?
প্রযোজক হিসেবে তো অসম্ভব ভাল। দেবদাকে ১০ এ ২০ দেওয়া যায়। কারণ, একজন মানুষ যেভাবে প্রতিদিন চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছেন। যেভাবে এগিয়ে চলেছেন তিনি। নিজের সঙ্গে নিজের একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ নিচ্ছেন। ভিন্ন ধরনের চরিত্র অভিনয় করছেন। আর আমিও না, কিছুটা ওরকমই! চ্যালেঞ্জ নিতে ভালবাসি, তাই দেবদাকে যখন এতটা খাটতে দেখি, ভীষণ অনুপ্রেরণা পাই। নিজের সঙ্গে অনেকটা মিল খুঁজে পাই।
প্রথম সিনেমাতেই তাবড় তাবড় সব শিল্পীরা ... ভয় লেগেছিল?
না না! ভয় আমায় পায়! আমি ভয় পাই না.. ( হাসি )। হ্যাঁ, একটা খুব নিদারুণ বিষয় যেটা বলতেই হয় যে প্রথম ছবিতে এনাদের সঙ্গে কাজ করেছি। আজ মনে হয় জীবনে কিছু একটা অর্জন করেছি।
তোমার সঙ্গে তো তাদের প্রথম কাজ, কিন্তু দেবের সঙ্গে তাদের দারুণ বন্ডিং, আলাদা কিছু বুঝতে পারলে?
না না! এটা আমায় বলতেই হয় যে আমি যে ওদের সঙ্গে এই প্রথম কাজ করলাম সেটা বুঝতেই দেয় নি আমায়। আমায় ওরা এতটা বিশেষ অনুভব করিয়েছে। কনিনীকা দি, বা খরাজ দা কিংবা অম্বরিশ দা, আমি বুঝতেই পারিনি যে এই টিমটা নতুন আমার কাছে। খালি মনে হত, আমি ওদের সঙ্গে আগেও কাজ করেছি।
একসময় ভ্যালেন্টাইন জি বাংলা ছিল, এখন কি দেব ভেনচারস?
( হাসি )... একদম একদম! আমায় পাহাড়ে নিয়ে গিয়ে শুটিং করাচ্ছে। এখন দেব দার প্রোডাকশন আর বেঙ্গল টকিজ এরা দুজনেই আমার ভ্যালেন্টাইন। পাহাড়ে নিয়ে যাচ্ছে বলো ভাল না বেসে থাকা যায়?
পুজোয়, কলকাতায় শুটিং আছে? প্ল্যান কী?
না, কলকাতার শুটিং শুরু হয়েছে। আছে আরও বেশ কিছুদিন আছে। হবে শুটিং। আর পুজো নিয়ে আমার কোনোদিন খুব একটা প্ল্যান থাকে না গো। কোনও ওপেনিং থাকলে যাই। এটুকুই।
দেবের পরবর্তী হিরোইন, বাঘা যতীনের প্রিমিয়ারে...
যখন হিরোইন ছিলাম না, তখনও ওরা আমায় খুব ভালবেসে ডাকত জানো। সাদরে গ্রহণ করত। আমিও সত্যি বলছি, দেব দা যদি যেতে বলে, আমি চেষ্টা করি যাওয়ার। আমার নিজের যেতেও ভাল লাগে।
দেব, এখন ক্যারেকটার আর্টিস্ট বেছে নিয়ে কাজ করছেন, কী বলবে?
একদম এটা ঠিক। এটা আমিও দেখেছি। দেব দা ক্যারেকটার বুঝেই অভিনেতাদের কাস্ট করছেন। কারণ, আমরা এটা দেখতে পাচ্ছি যে সেই মানুষটা নিজেও ক্যারেকটার ওরিয়েন্টেড সিনেমা করছেন। নিজেকে সেই চরিত্রে একদম ভেঙে গড়ে মিলিয়ে দিচ্ছেন। তাই, যে চরিত্রের জন্য যেটা দরকার বা যেটা প্রয়োজন, সেটাই করছেন তিনি। এটা একদিকে খুব চমকপ্রদ কিন্তু।
দেব দার অভিযোগ তুমি নাকি খুব কথা বলো?
তাই নাকি! ( হাসি )... আমি কথা বলতে শুরু করল দেব দা চুপ করে শোনে। আমি বকবক শুরু করলে, আর থামার জায়গা নেই। সেই জন্যই দেবদা চুপ করে শোনে। তিনি একা নয়, পরিচালক অভিজিৎ দাও তাই। চুপ করে শুনতে ভালবাসে। আর, আমার যদি কারওর সঙ্গে বন্ডিং ভাল হয় তবে, আমি ছেড়েই দাও...গল্প করতে আমি খুব ভালবাসি। থামিও না সহজে।
ভবিষ্যতে কি তাহলে ভাল স্টোরি টেলার হওয়ার ইচ্ছে আছে?
সেটা বলতে পারব না। তবে, সুযোগ হলে আমার পরিচালনা এবং সিনেমাটোগ্রফি শেখার খুব ইচ্ছে আছে। যদি সম্ভব। হয় তো এটা আমি সত্যিই করব।
ডিসেম্বরে রিলিজ করতে চলেছে শাহরুখের ডানকী, কী মনে হচ্ছে? প্রধান কতটা পারবে?
শাহরুখ খান তো কিং খান। উনি তো অন্য লেভেল। আর উনার ছবি তো রিলিজ করবে প্যান ইন্ডিয়া। সারা দেশ জুড়ে উৎসবের মত। তবে, আমি এটুকু বলতে পারি বাংলাতে আমরা বাংলা ছবিতে যথেষ্ট এগিয়ে রাখতে পারব। বাংলায় বাংলা ছবি মানুষের মনে অবশ্যই স্থান পাবে।